তাপস-সাঈদের পরস্পরবিরোধী অভিযোগ নিয়ে দুদক নিশ্চুপ কেন, জানতে চান রিজভী

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বর্তমান ও সাবেক মেয়রের পরস্পরের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে দুর্নীতির দমন কমিশন ‘নিশ্চুপ’ রয়েছে কেন তা জানতে চেয়েছেন রুহুল কবির রিজভী।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Jan 2021, 09:08 AM
Updated : 12 Jan 2021, 09:08 AM

মঙ্গলবার সকালে রাজধানীতে এক সংবাদ সম্মেলন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব এই প্রশ্ন তুলেন।

তিনি বলেন, “সরকারের মেগা মেগা দুর্নীতির মহাসাগর থেকে ছিটেফোঁটা চিত্র দুই-একজনের মুখ দিয়ে বেরিয়ে আসছে। সাঈদ খোকন বলছেন, মেয়র তাপস (ফজলে নূর তাপস) শত শত কোটি টাকা লুট করেছেন। অপরদিকে মেয়র তাপস বলছেন, শত শত কোটি টাকা লুট করেছেন সাঈদ খোকন। দুই জনই রাজপথে দাঁড়িয়ে প্রকাশ্যে একে অপরেরে দুর্নীতি, লুটপাটের ফিরিস্তি দিচ্ছেন। তবে এটি স্পষ্ট দুজনই লুটেরা, দুজনই দুর্নীতিবাজ।

“এখন দুদক তামাশা দেখবেন না পদক্ষেপ নেবেন? বিএনপির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে তো একেবারে উনার কোনো সময় লাগে না। মিথ্যা-বানোয়াট-কাল্পনিক মামলাকে দুদক একেবারে ফুলিয়ে-ফাপিয়ে দুদুকের চেয়ারম্যান প্রেস ব্রিফিং করে বিএনপির নেতাদের নামে কথা বলেন। আমাদের প্রশ্ন-  এখন দুদক নিশ্চুপ কেনো? তারাই (দুই জন) তো তাদের কথা বলেছে।”

দুদকের ভূমিকার সমালোচনা করে রিজভী বলেন, “আমরা যে আগে বলতাম দুদক হচ্ছে ধোপাখানা। আওয়ামী লীগের অনাচার, দুর্নীতি, লুটপাট একেবারে সুন্দর করে মু্ছে দেয়।

“আর বিরোধী দলের মিথ্যা জিনিসকে সে সুন্দরভাবে সাজায়। এভাবে দুর্নীতি দমন কমিশন গঠন করেছেন শেখ হাসিনা। আসলে নির্বাচন কমিশন যেভাবে গঠন করেছেন তেমনি দুদক গঠন করেছেন, তেমনি বিচার বিভাগে লোক নিয়োগ দিয়েছেন যারা এক পা-ও শেখ হাসিনার বাইরে যাবে না। উদ্দেশ্য হচ্ছে একটাই- গণতন্ত্রকে বিনাশ করো, বিএনপিকে বিনাশ করো। সেই দুদক পালন করেছে নিষ্ঠার সঙ্গে এতোদিন ধরে।”

ডিএসসিসির মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস ও সাবেক মেয়র সাঈদ খোকনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “আপনারা অবগত আছেন, নির্বাচনের নামে প্রহসনের মাধ্যমে জনগণের ভোটাধিকার হরণ করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়রের পদ দখল করেছিলেন সাঈদ খোকন। তার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর নিশি রাতের এমপি পদ ছেড়ে কোন মধুর লোভে মধুমতি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ফজলে নূর তাপস মেয়র পদ দথল করেছেন সেই মধুভাণ্ডের কাহিনী সেই আরব্য রজনীর গল্পের মতো মনে হলেও সেটিই বাস্তবে ঘটেছে।

“দুজনই ক্ষমতাশালী ও শীর্ষ নেতৃত্বের আত্বীয় ও ঘনিষ্ঠজন। সুতরাং শেখ হাসিনার দুদক এদের বিরুদ্ধে এক পা-ও অগ্রসর হতে পারবে না- এটা আমরা ভালো করেই জানি।”

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই আব্দুল কাদের মির্জার বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে রিজভী বলেন, “কথায় বলে ধর্মের কল বাতাসে নড়ে। জনাব ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই আব্দুল কাদের মির্জা যেসব অভিযোগ উত্থাপন করছেন এসব কথার উদ্দেশ্যে যাই হোক, অনেক সত্য বেরিয়ে আসছে।”

“সুষ্ঠু নির্বাচন হলে খোদ ওবায়দুল কাদের সাহেব জিতবেন কিনা তার আপন ভাই-ই এ প্রশ্ন তুলেছেন। আওয়ামী লীগের এই তিনজন (আব্দুল কাদের মির্জা, সাঈদ খোকন, ফজলে নূর তাপস) নেতার বক্তব্যে আবারো প্রমাণিত হয়েছে যে, আওয়ামী লীগের ‘টপ টু বটম’ আকন্ঠ দুর্নীতিতে নিমজ্জিত। লুটপাটে কে কাকে টক্কর দিতে পেরেছে এই নিয়েই তাদের মধ্যে ঝগড়া চলছে।”

সোমবার রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার ভাবনীগঞ্জ পৌরসভার আসন্ন নির্বাচনে ধানের শীষের প্রার্থী আব্দুর রাজ্জাকের নির্বাচনী প্রচারনায় আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের হামলার ঘটনার নিন্দা জানান রিজভী।

নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হয়।

সংবাদ সম্মেলনে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য অধ্যাপক সাহিদা রফিক, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, কেন্দ্রীয় নেতা মীর সরফত আলী সপু, আবদুস সালাম আজাদ, তাইফুল ইসলাম টিপু, আবদুল খালেক প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।