দলীয় পরিচয় আত্মরক্ষার ঢাল নয়: কাদের

দলীয় পরিচয় কারও কোনো আত্মরক্ষার ঢাল হতে পারে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Nov 2020, 10:42 AM
Updated : 24 Nov 2020, 11:14 AM

অপকর্ম করলে সে যেই হোক না কেন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

সমসাময়িক বিষয় নিয়ে মঙ্গলবার সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে কাদের বলেন, “দল এখন কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে। আপনারা দেখতে পাচ্ছেন বিভিন্ন বিষয়ে সরকারের বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীর অবস্থান অত্যন্ত কঠোর।

“অপকর্ম করে দলীয় পরিচয়ে কেউ এ পর্যন্ত রেহাই পায়নি এবং দলীয় পরিচয় কারো আত্মরক্ষার ঢাল হতে পারে না। অপকর্ম যারা করে এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত কঠোর অবস্থানে রয়েছেন।”

ওবায়দুল কাদের বলেন, “কিছু কিছু ঘটনা ঘটে যেগুলো আগেভাগে কেউ চিন্তাও করতে পারে না। গোল্ডেন মনির, এগুলো শুনিইনি নাম, কোথা থেকে আসে, এসব ব্যাপারে আসলে কঠোর অবস্থান নিতেই হয়।

“আমি স্পষ্ট বলে দিয়েছি, ধর্ষক, নারীদের অবমাননা করে এমন কোনো অপরাধী যদি আওয়ামী লীগে বা আওয়ামী লীগের কোনো সহযোগী সংগঠনেও ধরা পড়ে এদের দরজা চিরতরে আওয়ামী লীগের জন্য বন্ধ করে দিতে হবে, শুধুমাত্র বহিষ্কার করে দায়িত্ব পালন করলে হবে না। এদের ব্যাপারে আমরা অত্যন্ত কঠোরতা অবলম্বন করছি, কাউকে ছাড় দেওয়ার কোনো মনমানসিকতা নেই।”

সম্প্রতি দুই জেলায় আওয়ামী লীগের জেলা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে অব্যাহতি দেওয়ার প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তাদের পরের পদধারীদের সেসব দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

“জেলায় কিছু অন্তর্কলহ আছে সেগুলো দূর করতে ব্যর্থ হয়েছেন এবং সামাল দিতে পারছেন না বলে অভিযোগ আছে, ফলে নয়া নেতৃত্ব দেওয়া হয়েছে। এ থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত, না নিলে যেখানে যেখানে এ ধরনের সমস্যা হবে সেখানেই প্রয়োজনে আমরা পরিবর্তন করব। এই দলে শেখ হাসিনা ছাড়া আমাদের আর কেউই অপরিহার্য না।

“কেউ দলের জন্য অপরিহার্য না, কাউকে কোনো পদ চিরস্থায়ী লিজ দেওয়া না। দলের মধ্যে যারা শৃঙ্খলা রক্ষা করতে পারবে না, কলহ কোন্দল থাকবে এবং নিজেরাই কলহে লিপ্ত থাকবে সে অবস্থায় আমরা বিকল্প ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হব।”

ঢাকা মহানগরে দুটো কমিটি দেওয়ার কথা উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “এগুলো আগে প্রধানমন্ত্রী সই করতেন, এখন তার নির্দেশে আমিই সই করছি। জেলা-মহানগর কমিটির অ্যাপ্রুভাল তার (শেখ হাসিনা) সঙ্গে আলাপ করে আমিই দিয়ে থাকি। যেসব উপজেলা ও ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের কমিটি নিয়ে সমস্যা আছে সেসব খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে, আমরা ব্যবস্থা নেব।”

কাদের জানান, যে ২৫টি পৌরসভায় প্রথম ধাপে নির্বাচন হবে সেখানে আগামী ২৮ নভেম্বর আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের সভা করে ২৫ জনকে মনোনয়ন দেওয়া হবে।

স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী নিয়ে এক প্রশ্নে কাদের বলেন, “বিদ্রোহী প্রার্থীদের জন্য একটা বার্তা যাচ্ছে। দলের নিয়ম যারা মানবে না তারা কিন্তু কেউই পার পাবে না। প্রত্যেককে ডিসিপ্লিনারি অ্যাকশনের মধ্যে পড়তে হবে, এই মেসেজটা আমরা দিয়ে যাচ্ছি, জেলা পর্যায়েও পরিবর্তন আনা হয়েছে একই কারণে।”

বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থীকে পরাজিত করে সংসস সদস্য হওয়া নিক্সন চৌধুরীকে যুবলীগের কমিটিতে অন্তর্ভুক্তি নিয়ে এক প্রশ্নে কাদের বলেন, “রাজনীতি বিষয়টা হচ্ছে… সবার উপরে তো জনগণ। দলে হয়ত একজন দায়িত্বে আছে দীর্ঘদিন, দলের সাথে আছে। কিন্তু যখন নির্বাচনের প্রশ্ন আসে তখন তো তার জনপ্রিয়তার প্রশ্ন। জনমত জরিপ, বিভিন্ন সংস্থা এবং প্রধানমন্ত্রীর নিজস্ব সোর্সে খোঁজ-খবর নিয়ে যে বেশি জনপ্রিয় তাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।

“যাদের (নিক্সন চৌধুরী) কথা বলছেন, তাদেরকে কিন্তু ক্ষমা করা হয়েছে, ভবিষ্যতে বিদ্রোহী আর যাবে না এই শর্তে তারা পার্টির সভাপতির কাছে ক্ষমা চেয়েছিল, তাদেরকে ক্ষমা করা হয়েছে। কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা হয়েছে এমন কাউকে দেওয়া হয়নি।”