বৃহস্পতিবার দুপুরে অনলাইনে এক আলোচনা সভায় যুক্ত হয়ে তিনি এই অভিযোগ করেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, “একটু আগে আমি খবর পেলাম, আমাদের উত্তরার তুরাগ থানার সভাপতি-সম্পাদক তাদেরকে গতকাল হাই কোর্ট থেকে জামিন নিয়ে বের হওয়ার পথে সাদা পোশাকে পুলিশ তুলে নিয়ে গেছে, এখনও ওদের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। এটা অহরহ ঘটছে এখন।
“আমি খুব স্পষ্ট করে সরকারকে বলতে চাই যে, অবিলম্বে এদেরকে ফিরিয়ে দেন তাদের পরিবারের কাছে, অবিলম্বে এদেরকে মুক্তি দিন। অন্যথায় জনগণের যে উত্তাল তরঙ্গ সৃষ্টি হবে, সেই তরঙ্গ কিন্তু আপনাদেরকে টিকিয়ে রাখতে পারবে না।”
“গতকাল বেলা ১টার দিকে হাই কোর্ট থেকে জামিন নিয়ে বের হওয়ার পর সাদা পোশাকে পুলিশ তুরাগ থানা যুব দলের সাধারণ সম্পাদক মামুন পারভেজ তন্ময় ও সহসভাপতি তৌহিদুল ইসলাম হাসিবকে তুলে নিয়ে যায়। উত্তরার পশ্চিম থানা যুব দলের সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌস মজুমদার মাসুমকে গত রাত সাড়ে ৭টায় উত্তরা ৫ নম্বর সেক্টর থেকে ধরে নিয়ে যায় সাদা পোশাকের পুলিশ সদস্যরা, পল্টন থানা যুব দলের যুগ্ম সম্পাদক লিয়ন হককে বাসা থেকে তুলে নিয়ে গেছে। এদের কাউকে এখনো খুঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।”
তিনি বলেন, “এখন দেশে প্রকৃতপক্ষে কোনো সরকার আছে বলে মনে হয় না। এই সময়ে সুশাসন দূরের কথা এখানে শাসন বলতে কিছু নেই।
“প্রতিদিন পত্র-পত্রিকায় তাদের (ক্ষমতাসীন) দুর্নীতির খবর আসছে। ভয়াবহ দুর্নীতি, হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে। সেদিকে কোনো খেয়াল নেই, দুই-একটা চুনোপুটিদের ধরে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে।”
১৯৬৫ সালের ২০ নভেম্বর বগুড়ায় জন্মগ্রহণ করেন তারেক রহমান।
তারেক রহমানের জন্মদিনে দলের পক্ষ থেকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “এই সংকটময় পরিস্থিতিতে আমাদের নেতার জন্মদিনে কোনো উৎসব পালন করতে পারছি না। তার এই জন্মদিনে আমরা কেক কাটব না।
“আজকে আমরা তার জন্য দোয়া করব। আল্লাহ যেন তাকে দীর্ঘজীবন দান করুন এবং তাকে সেই শক্তি দিন যে শক্তি দিয়ে সে তার রাজনৈতিক উত্তরাধিকারকে প্রতিষ্ঠিত করে বাংলাদে্শের জনগণকে মুক্ত করতে পারে। আমাদের মনে রাখতে হবে, তার পিতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের মুক্তির জন্য স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে এবং এই যুদ্ধ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক যুদ্ধ ক্ষেত্র থেকে তাকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমাদের নেতা (তারেক রহমান) ব্যক্তিগত জীবনে অনেক দুঃখকষ্টে আছেন। তার পিতাকে হারিয়েছেন তিনি খুব ছোট বয়সে, মা অন্তরীণ। তার ছোট ভাই আরাফাত রহমান কোকো চলে গেছেন এই সরকারের নির্যাতনের কারণে। নিজে নির্বাসিত অবস্থায় বাস করছেন। সুতরাং তাকে (তারেক রহমান) সাহস দিতে হবে আমাদেরই।”
“সেই লক্ষ্যে আমাদের এগোতে হবে, আমাদেরেকে অবশ্যই এই দেশকে জনাব তারেক রহমানের নেতৃত্বে গণতন্ত্রকে মুক্ত করতে হবে। এই হোক আজকে আমাদের সবচেয়ে বড় উপহার আমাদের নেতার জন্য।”
তৃনমূল পর্যায়ে বিএনপি ও তার অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোকে সংগঠিত করার ক্ষেত্রে তারেক রহমানের নানা কর্মকাণ্ডের ভূয়সী প্রশংসা করেন বিএনপি মহাসচিব।
ব্যারিস্টার মীর হেলালের সভাপতিত্বে ও এম সাব্বির আহমেদের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব, এনামুল হক চৌধুরী, বিশেষ সম্পাদক শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম আলিম, স্বেচ্ছাসেবক দলের গোলাম সারোয়ার, ছাত্র দলের নাজমুল হাসান, মিজানুর রহমান শরীফ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।