দলীয় সহকর্মীর বিরুদ্ধে নিপীড়নের অভিযোগ এনে অনশনে সিপিবি নেত্রী

দলের এক সহকর্মীর বিরুদ্ধে নিপীড়নের অভিযোগ এনে সিপিবির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনশনে বসেছেন দলটির কেন্দ্রীয় নেত্রী জলি তালুকদার।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Sept 2020, 12:34 PM
Updated : 20 Sept 2020, 04:43 PM

শনিবার রাত থেকে ঢাকার নয়া পল্টনে মুক্তি ভবনে সিপিবির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনশন শুরু করেন তিনি।

সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক ও গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক জলির অভিযোগ একই দলের ঢাকা কমিটির সদস্য জাহিদ হোসেন খানের বিরুদ্ধে।

জলির অভিযোগ, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাম গণতান্ত্রিক জোটের এক সমাবেশে যোগ দিতে সিপিবির মিছিল নিয়ে যাওয়ার সময় তিনি জাহিদের নিপীড়নের শিকার হন।

সাত মাস পর গত শুক্রবার সিপিবির ঢাকা কমিটির সভায় নেওয়া এক সিদ্ধান্তের পর ওই ঘটনার বিচার দাবিতে অনশনে বসছেন তিনি।

বিচার চেয়ে সিপিবির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককে লেখা চিঠিতে তিনি দাবি করেছেন, তাকে হেনস্থার বিষয়টি আমলে না নিয়ে ওই ঘটনার প্রতিবাদকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে ঢাকা কমিটি।

গত জুলাই মাসে নারী নির্যাতনের মামলা হওয়ার পর ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি এসএম শুভ এবং আরিফুল ইসলাম নাদিমকে অব্যাহতি দেয় সিপিবির সহযোগী সংগঠন ক্ষেতমজুর সমিতি।

ওই ঘটনার পর শুভ-নাদিমের পক্ষে-বিপক্ষে সোশাল মিডিয়ায় সিপিবি কর্মীদের লেখালেখি দেখা যায়। তারপর সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম সোশাল মিডিয়ায় দলের নেতা-কর্মীদের লেখালেখিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিলেন।

তবে জলি অনশনে বসার পর সোশাল মিডিয়ায় তা নিয়ে আবারও আলোচনা শুরু হয়েছে।

সিপিবির কংগ্রেসের আগে এক পক্ষ আরেক পক্ষকে ঘায়েল করতে চাইছে বলেও সোশাল মিডিয়ায় আলোচনা উঠেছে।

 

দলীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে লেখা চিঠিতে জলি বলেছেন, “গত ২৮ ফেব্রুয়ারি বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমাবেশে যোগ দিতে মুক্তি ভবন থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের দিকে যাওয়ার সময় পার্টি মিছিলে জাহিদ হোসেন খান আমার সাথে ন্যক্কারজনক যে নিপীড়নের ঘটনা ঘটিয়েছেন, সে বিষয়ে স্পষ্টভাবে আমি আমার বক্তব্য সেই মিছিলে উপস্থিত কমরেড আব্দুল্লাহ কাফি রতনকে জানাই।”

সিপিবির ঢাকা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আহাম্মদ সাজেদুল হক রুবেলকে এ নিয়ে অভিযোগ জানালেও কোনো প্রতিকার পাননি বলে অভিযোগ করেন জলি।

“আমি তাকে অনুরোধ করেছিলাম, নিপীড়ক জাহিদকে যেন সভায় আসতে বারণ করা হয়। কারণ একজন নিপীড়কের সঙ্গে বসে সভা করার রুচি, মানসিক অবস্থা কোনোটাই আমার নেই। আমার অনুরোধের কোনো রকম তোয়াক্কা করা হয়নি।”

জলির কাছে জানতে চাইলে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এটা পার্টির ইন্টারনাল ব্যাপার। আমি চাই না, এ বিষয়টি আর বাইরে যাক। আমি ন্যায়বিচার পাব বলে আশা করি। এ নিয়ে গণমাধ্যমে নিউজ হোক, তাও চাই না।”

অভিযোগের বিষয়ে জাহিদ হোসেন খানের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। সিপিবির ঢাকা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রুবেলকে ফোন করলেও তিনি সাড়া দেননি।

সিপিবির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুল্লাহ ক্বাফি রতন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “জলি অভিযোগ করেছেন। সেটা আমাদের সিনিয়র নেতারা খতিয়ে দেখবেন। আমি এ নিয়ে আর কোনো কথা বলতে চাই না।”

সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম এখনই এ বিষয়ে কথা বলতে চাইছেন না।