রোববার সকালে রাষ্ট্রপক্ষ সময়ের আবেদন করলে বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কেএম জহিরুল হকের হাই কোর্ট বেঞ্চ শুনানির জন্য বেলা ২টায় সময় ঠিক করে দেয়।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন বাপ্পী আদালতে বলেন, ওই জামিন আবেদেনের ওপর শুনানি করবেন অ্যাটর্নি জেনারেল। কিন্তু সকালে তার অন্য কোর্টে শুনানি আছে। সেজন্য তার সময় প্রয়োজন।
খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের মধ্যে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ ও এ জে মোহাম্মদ আলী এ সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
খালেদা জিয়ার জামিন শুনানি ঘিরে সকাল থেকেই সুপ্রিম কোর্ট এলাকার চারপাশে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হয় তল্লাশি করে।
উন্নত চিকিৎসার জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন চেয়ে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি হাই কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এই আবেদন জমা দেওয়া হয়। পরদিন আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন আবেদনটি আদালতে উপস্থাপন করলে শুনানির জন্য রোববার দিন রাখে হাই কোর্ট।
“দ্রুত তাকে যুক্তরাজ্যের মত উন্নত দেশে নিয়ে আধুনিক, উন্নত চিকিৎসা বা থেরাপি দেওয়ার প্রয়োজন। তার এই অসুস্থতার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে আধুনিক উন্নত থেরাপি বা চিকিৎসার স্বার্থে নতুন করে এই জামিন আবেদনটি করা হয়েছে।”
এদিকে খালেদা জিয়ার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থার প্রতিবেদন দিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ ) উপাচার্যের প্রতি নির্দেশনা চেয়ে রোববার আলাদা একটি আবেদন করার কথা জানিয়েছেন তার অন্যতম আইনজীবী সগির হোসেন লিয়ন।
আবেদনে বলা হয়, “অন্যের সাহায্য ছাড়া তিনি (খালেদার জিয়া) চলাফেরা করতে পারেন না। এমনকি অন্যের সাহায্য ছাড়া তিনি খাবার এমনকি ওষুধও নিতে পারছেন না।
“গত ১১ ফেব্রুয়ারি তার বোন হাসপাতালে তাকে দেখতে যান। সেখানে এক প্রেস কনফারেন্সে তার বোন বলেছেন, বিদেশে নিয়ে গিয়ে তার (অ্যাডভান্স ট্রিটমেন্ট) উন্নত চিকিৎসা দরকার। না হলে তার আরোগ্য সম্ভব না। এসব সংবাদ ১২ ফেব্রুয়ারি দেশের সকল সংবাদ মাধ্যমে প্রচার ও প্রকাশ হয়েছে।
“তাছাড়া আবেদনকারী উন্নত চিকিৎসা ও মানবিক কারণ তুলে ধরে নতুন করে জামিন আবেদন করেছে। তাই এখানে তার সর্বশেষ চিকিৎসা বা শারীরিক অবস্থা সংক্রান্ত প্রতিবেদন খুবই প্রয়োজন।”
জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় জামিনের জন্য এর আগেও হাই কোর্টে আবেদন করেছেন খালেদা জিয়া। কিন্তু অপরাধের গুরুত্ব, সংশ্লিষ্ট আইনের সর্বোচ্চ সাজা এবং বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে খালেদাসহ অন্য আসামিদের করা আপিল শুনানির জন্য প্রস্তুত- এ তিন বিবেচনায় হাই কোর্ট বেঞ্চ গত ৩১ জুলাই সেই আবেদন খারিজ করে দেয়।
খালেদার আইনজীবীরা এরপর আপিল বিভাগে গিয়েও ফল পাননি। গত ১২ ডিসেম্বর আপিল বিভাগ কিছু পর্যবেক্ষণ দিয়ে জামিন আবেদনটি খারিজ করে দেয়।
বিএনপি চেয়ারপারসনের সম্মতি থাকলে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শ অনুযায়ী তাকে দ্রুত ‘অ্যাডভানসড ট্রিটমেন্ট’ দেওয়ার পদক্ষেপ নিতে বলা হয় আপিল বিভাগের ওই রায়ে।
সেই রায় গত ১৯ জানুয়ারি প্রকাশিত হওয়ার পর হাই কোর্টে নতুন করে জামিন আবেদন করার উদ্যোগ নেন খালেদার আইনজীবীরা।