বিএনপির কারণেই মানুষ ভোট দিতে আসেনি: নানক

ঢাকা সিটি নির্বাচনে ভোটার হার কম হওয়ার জন্য বিএনপিকে দায়ী করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Feb 2020, 10:52 AM
Updated : 2 Feb 2020, 10:52 AM

তিনি রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, “এর কারণ বিএনপির নির্বাচনবিরোধী চরিত্র। নির্বাচনী প্রচারণার শুরু থেকে বিএনপির নেতৃবৃন্দ ও তাদের প্রার্থীরা ভোটারদের মধ্যে ভীতি সঞ্চার হয়, এমন ধরনের বক্তব্য দিয়ে আসছেন।

“বিএনপির আচরণ দেখে মনে হয়েছে, বিএনপি জয়ের জন্য নয়,  বরং নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা এবং নির্বাচন সম্পর্কে জনগণের মধ্যে ভীতি সঞ্চারের জন্য অংশগ্রহণ করেছে।”

প্রচার-প্রচারণায় সরগরম থাকলেও শনিবার ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কেন্দ্রে ভোটারের উপস্থিতি ছিল খুবই কম। ইভিএমে অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনে ২৭ শতাংশ কেবল ভোট দিয়েছে।

বিএনপি নেতারা বলছেন, আওয়ামী লীগের আমলে মানুষ নির্বাচন ব্যবস্থার প্রতি অনাগ্রহী হয়ে উঠেছে। নির্বাচনে কারচুপির প্রতিবাদে রোববার হরতালও ডেকেছিল দলটি।

বিএনপির কর্মসূচি নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে রোববার ধানমণ্ডিতে দলীয় সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসেন নানক।

তিনি বলেন, “বিএনপির হরতাল জনগণ ঘৃনাভ‌রে প্রত্যাখ্যান ক‌রে‌ছে। এরপরও যদি তাদের লজ্জা শরম না থাকে…লজ্জাশরমের মাথা খেয়ে তারা এই নেতিবাচক রাজনীতি পরিহার না করে তাহলে তাদের দল জনগণ থেকে আরও বিচ্ছিন্ন হবে এবং প্রত্যাখ্যাত হয়ে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।”

নানক বলেন, “হরতাল কালচার বাংলার জনগণ বর্জন করেছে। রাস্থাঘাটে যানবাহন সবকিছুই স্বাভাবিক। এর মাধ্যমে প্রমাণ হল বিএনপির যে ভুলের রাজনীতি করে জনগণ সেই রাজনীতি প্রত্যাখ্যান করেছে। এই ভুলের রাজনীতির কারণে কিন্তু মানুষ ভোট কেন্দ্রে আসার যে প্রবণতা তা কমিয়ে দিয়েছে।”

তবে ভোটার দের আগ্রহী করতে ভবিষ্যতে ইভিএম নিয়ে প্রচার-প্রচারণা বাড়ানো এবং স্থানীয় নির্বাচনের সময় গণপরিবহন বন্ধের সিদ্ধান্তটিও পুনর্বিবেচনা করা যায় কি না, সে বিষয়ে আলোচনার আহ্বান জানান তিনি।

সিটি নির্বাচনে সন্ত্রাসী তৎপরতা চালাতে বিএনপির ব্যাপক পরিকল্পনা ছিল বলে আওয়ামী লীগ নেতারা বলে আসছিলেন, কিন্তু ভোটের দিন সেটাও দেখা যায়নি।

এ বিষয়ে নানক বলেন, “নির্বাচনপূর্ব ও নির্বাচনকালীন সময় বিএনপির সন্ত্রাসী চরিত্র নিয়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক থাকায় তারা কোনো সহিংস ঘটনা ঘটাতে পারেনি।”

হরতাল প্রতিরোধে মাঠে থাকার ঘোষণা আওয়ামী লীগ দিয়েছিল, কিন্তু তা দেখা যায়নি।

এবিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে নানক বলেন, “আমরা একটু দেখতে চেয়েছি মাঠে না থেকে যে, জনগণ কী করে। দেখলাম জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে।”

তিনি দাবি করেন, হরতালের সিদ্ধান্ত বিএনপি নির্বাচনের আগেই নিয়ে রেখেছিল এবং সেই অনুযায়ী সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যও তৈরি করা ছিল।

বিএনপির অভিযোগ ঢালাও মন্তব্য করে নানক বলেন, “তাহলে বিএনপির প্রার্থী তাবিথ আউয়াল ও ইশরাক হোসেন এত ভোট পেল কীভাবে?

“১১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের ছোট ভাই কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছে। এ রকম আরও উদাহরণ আছে। এমনকি তাবিথ আউয়াল কিন্তু অনেক কেন্দ্রে বেশি ভোট পেয়েছে আমাদের প্রার্থী আতিকুল ইসলামের থেকে।”

সিটি নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীরা জিতলেও বিজয় মিছিল বা উৎসব না করতে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার নির্দেশনা সংবাদ সম্মেলনে জানিয়ে দেন নানক।

সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের নেতাদের মধ্যে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠিনক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, আফজাল হোসেন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, শিক্ষা ও মানবসম্পাদক সম্পাদক শামসুন্নাহার চাপা, উপ দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান উপস্থিত ছিলেন।