আ. লীগই বাইরে থেকে অস্ত্র এবং কর্মী এনেছে: মোশাররফ

ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপির বিরুদ্ধে বাইরে থেকে ‘অস্ত্রধারী গুণ্ডা’ আনার যে অভিযোগ ওবায়দুল কাদের করেছেন, তাকে হাস্যকর বলেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Jan 2020, 09:09 AM
Updated : 29 Jan 2020, 09:09 AM

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্যের পাল্টায় তিনি একই অভিযোগ চাপিয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের ওপর। সিটি ভোটকে সামনে আওয়ামী লীগই অস্ত্র-শস্ত্র ও ৩০ লাখ কর্মীকে বাইরে থেকে এনেছে বলে দাবি মোশাররফের।

বুধবার আর কে মিশন রোডে প্রয়াত মেয়র সাদেক হোসেন খোকার বাসায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের নিন্দা জানিয়ে বলেন, “এটা অত্যন্ত হাস্যকর। কে না জানে যে বিএনপির প্রার্থীরা, সাধারণ কর্মীরা বাড়িতে থাকতে পারছে না পুলিশের বিভিন্ন ধরনের কর্মকাণ্ডের কারণে।

“আমাদের পক্ষে বাইরে থেকে লোক আনা বা কোনো অস্ত্র-শস্ত্র যোগাড় করা- এটা অসম্ভব বিষয়। এটা আমাদের দ্বারা করা সম্ভবও নয়, এটা আমরা করিও নাই।”

ওবায়দুল কাদের মঙ্গলবার ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সম্পাদকমণ্ডলীর সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির বিরুদ্ধে বহিরাগত অস্ত্রধারীদের ঢাকায় এনে জড়ো করার অভিযোগ করেন।

দক্ষিণে বিএনপির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক খন্দকার মোশাররফ আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ এনে বলেন, “আমরা জানি যে, আওয়ামী লীগ এটা আসলে করছে। তারা বাইরে থেকে নেতা-কর্মীদের ঢাকা শহরে এনে সয়লাব করে ফেলেছে, ৩০ লক্ষ নেতা-কর্মী ঢাকা শহরে এনেছে এবং অস্ত্র-শস্ত্রসহ এনেছে।

“এই অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে আসতে তাদের কর্মীরা সাহস পায়, কারণ পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে না। এই কাজটি তারা করেছে, এই কাজটি করবে বলেই আগে থেকে বিএনপির ওপরে দোষ চাপানোর জন্য ওবায়দুল কাদের সাহেব এই ‘উদোর পিণ্ডি বুঁদোর ঘাড়ে’ নেয়ার যে তাদের সবসময়ের অভ্যাস, সেটা করার জন্য এই কথা উনি বলেছেন। আমি এর তীব্র নিন্দা জানাই।”

মানুষ ভোট দিতে পারলে শতকরা ৮০ ভাগ ভোট পেয়ে ঢাকায় বিএনপির প্রার্থীরা বিপুল ভোটে জয়ী হবে বলে দাবি করেন তিনি।

আর ভোট প্রহসনে পরিণত হলে সতার দায় নির্বাচন কমিশনের ওপর বর্তাবে বলে হুঁশিয়ারি করেন তিনি।

“এখনো নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হয়নি। প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ওয়ার্ডে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা-কর্মীদের ভয় দেখানো হচ্ছে। নেতা-কর্মীদের বাসা-বাড়িতে ঢুকে হুমকি-ধামকি ও ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। এই বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে জানানো হলেও ন্যূনতম কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না।

“আমরা মনে করি, একচোখা নির্বাচন কমিশন প্রশাসনের ন্যাক্কারজনক আচরণ ও ভূমিকায় এই নির্বাচন যদি গতানুগতিক ও প্রহসনে পরিণত হয় তাহলে জনগণ তা বরদাশত করবে না এবং উদ্ভুত পরিস্থিতির দায়-দায়িত্ব সরকার ও একচোখা নির্বাচন কমিশনকেই গ্রহণ করতে হবে।”

দক্ষিণে আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক আমির হোসেন আমু বৃহস্পতিবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ এবং সেখান থেকে গণমিছিল বের করার যে ঘোষণা দিয়েছেন তাকে আচরণবিধির লঙ্গণ মনে করেন খন্দকার মোশাররফ।

 “আমরা বলতে চাই, এটা নির্বাচনী আচরণবিধির স্পষ্টত লঙ্ঘন। নির্বাচনী আচরণবিধির ৭ নম্বর ধারায় বলা আছে, গণসমাবেশ ও গণমিছিল করা যাবে না।  আমরা এখান থেকে দাবি করতে চাই, নির্বাচন কমিশন তাদের প্রণীত আচরণবিধি মেনে অবিলম্বে আওয়ামী লীগের এই গণসমাবেশ ও মিছিল বন্ধ করবেন।”

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মেয়রপ্রার্থী খোকার ছেলে ইশরাক হোসেন বলেন, “আমরা প্রচারনার প্রায় শেষ পর্যায়ে এসে পৌঁছেছি। আমরা নানা বাধা-বিপত্তির মুখে পড়েছি তা আপনাদের সামনে সবসময় তুলে ধরেছি, আপনারাও সব দেখেছেন। আমি বলতে চাই, আগামী ১ ফেব্রুয়ারি সকল ভোটাররা নির্ভয়ে নির্বিঘ্নে ভোটকেন্দ্রে যাবেন।

“আমরা আমাদের সকল দায়িত্ব পালন করব, যাতে করে ভোটাররা সব ভয়ভীতি, হুমকি-ধামকি উপেক্ষা করে ভোটকেন্দ্রে যেয়ে নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারেন এবং তাদের অধিকার করার লক্ষ্যে ধানের শীষের প্রার্থীদের ভোট দিয়ে বিজয়ী করবেন।”

প্রচারণায় গণমাধ্যমের ভূমিকার প্রশংসা করে ভোটের ফলাফল পর্যন্ত তাদেরকে তার পাশে পাওয়ার প্রত্যাশা করেন ইশরাক।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আবদুস সালাম, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, নিতাই রায় চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।