ভোট নিয়ে নানা অভিযোগ কূটনীতিকদের জানাল বিএনপি

ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীদের ‘আচরণবিধি লংঘন করে’ নানা কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি বিরোধী প্রার্থীদের ওপর ‘হামলা ও দমনের’ বিভিন্ন অভিযোগ বিদেশি কূটনীতিকদের জানালেন বিএনপি নেতারা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Jan 2020, 12:58 PM
Updated : 26 Jan 2020, 02:14 PM

দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতারা রোববার বিকালে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ঢাকায় নিয়োজিত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের সঙ্গে বসেন।

বিকাল ৪টা থেকে থেকে ঘণ্টাব্যাপী ওই বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, কানাডা ভারত, ফান্স, তুরস্ক, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ ২০টি দেশের কূটনীতিকরা উপস্থিত ছিলেন।

রুদ্ধদ্বার এই বৈঠকে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে বিএনপির প্রার্থীদের ওপর হামলা, হয়রানি, মামলা ও গ্রেপ্তারসহ নির্বাচনী আচরণবিধি লংঘনের বিভিন্ন অভিযোগ করেন বিএনপি নেতারা।

মির্জা ফখরুল ছাড়াও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, সাবিহউদ্দিন আহমেদ, আবদুল কাউয়ুম, কেন্দ্রীয় নেতা শ্যামা ওবায়েদ, অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান, অ্যাডভোকেট ফাহিমা নাসরিন মুন্নী, জেবা খান, অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, মীর হেলাল প্রমুখ নেতৃবৃন্দ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

বিকালে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আসেন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ ২০ দেশের কূটনীতিকরা

বৈঠক শেষে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশে যা চলছে তার সার্বিক প্রেক্ষাপট, সিটি নির্বাচন ঘিরে যেসব ঘটনা ঘটছে সেগুলো নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।

“মানুষ অধিকারহীন অবস্থায় আছে। ভোট তো হচ্ছে যেখানে অধিকার থাকবে সেখানে ভোট হবে এবং ভোটের প্রক্রিয়া সুষ্ঠু হবে সেখানে ভোট হবে- এই সমস্ত বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।”

আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা নির্বাচনী ‘আচরণবিধি লংঘন করে’ রাস্তার ফুটপাতে ক্যাম্প স্থাপন, বড় বড় পোস্টার ছাপানো, সময়-অসময়ে মাইক ব্যবহার ইত্যাদি নানা কার্যক্রম করে যাচ্ছে বলে কূটনীতিকদের বলেছেন বিএনপি নেতারা।

এসব বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের দৃষ্টিগোচরও হচ্ছে না অভিযোগ করে আমীর খসরু বলেন, “আগামী ২৮ জানুয়ারি নির্বাচন কমিশনের যে বৈঠক ডাকা হয়েছে তার আলোচ্যসূচিতেও নেই।এ রকম অবস্থায় নির্বাচনে কোনো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই। যেখানে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড হবে না সেখানে নির্বাচনের ওপর মানুষের ভরসা কোত্থেকে আসবে?

“যত ধরনের বাধা-বিপত্তি সৃষ্টি করে একপক্ষকে আটকে রাখা হচ্ছে এবং আরেক পক্ষ সকল আইনভঙ্গ করে নির্বাচনী কার্য্ক্রম চালাচ্ছে।”

কূটনীতিকদের কাছে এ বিষয়গুলো তুলে ধরার পাশাপাশি ঢাকা উত্তরের মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল এবং দক্ষিণের ইশরাক হোসেনের ওপর ‘হামলার ঘটনা’ এবং তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মামলার বিষয়টিও বৈঠকে তুলে ধরা হয়েছে বলে জানান খসরু।

ইভিএমে ভোটের বিষয়টিও আলোচনায় এসেছে জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, “ওরা (কূটনীতিকরা) প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত দেশ। তারা কেউ কিন্তু ইভিএম ব্যবহার করছে না। কারণ ইভিএম ব্যবহার করার অর্থ হচ্ছে যে, প্রোগ্রামিংটা যারা করবে তাদের পক্ষে যাবে। প্রোগ্রামে যা থাকবে তাই রেজাল্ট হবে- এটা পরিষ্কার।

“বেশিরভাগ দেশে ইভিএম ব্যবহার হচ্ছে না। দুই-চারটা দেশে যারা ব্যবহার করছে সেখানে সমস্যা দেখা দিচ্ছে। বাংলাদেশের মানুষ সারা জীবন ব্যালট পেপারে ভোট দিয়ে আসছে কোনো সমস্যা নাই। সেখানে চার হাজার কোটি টাকায় ইভিএম এনে ভোটকে প্রশ্নবিদ্ধ করে মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার যে প্রক্রিয়া এটা গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।”