শুক্রবার বিকেলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে খালেদাকে দেখে এসে সাংবাদিকদের কাছে এই অবস্থান জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের সেজ বোন সেলিমা ইসলাম।
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা ‘খুবই খারাপ’ এবং তিনি ঠিকমতো কথাও বলতে পারছেন বলে জানান তার বোন।
উন্নত চিকিৎসার জন্য দ্রুত খালেদা জিয়াকে অন্য কোনো হাসপাতালে নেওয়া দরকার বলে মন্তব্য করেন তিনি।
দুর্নীতিতে দণ্ডিত খালেদা জিয়ার আপাতত জামিনে মুক্তির সম্ভাবনা না থাকার বিষয়টি উল্লেখ করে সাংবাদিকরা সেলিমা ইসলামের কাছে জানতে চান, বিএনপি নেত্রীর মুক্তির জন্য পরিবার থেকে ‘বিশেষ আবেদনের’ কথা ভাবা হচ্ছে কি না।
জবাবে তিনি বলেন, “আমরা এখনও আবেদন করিনি। আমরা ভাবছি, আবেদন করব। তবে এখনও ঠিক করিনি এটা।
“কারণ তার যে শরীরের অবস্থা, এভাবে চললে বেশি দিন পর উনাকে জীবিত অবস্থায় আমরা বাসায় নিয়ে যেতে পারব না। যে কোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে।”
দুই বছরের বেশি সময় ধরে কারাবন্দি খালেদা জিয়া প্যারোলে মুক্তি পেতে যাচ্ছেন বলে গত বছর মার্চেও গুঞ্জন উঠেছিল। সে সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছিলেন, দুর্নীতির মামলায় দণ্ড নিয়ে কারাবন্দি খালেদা জিয়া প্যারোলে মুক্তির আবেদন করলে তখন তা নিয়ে ভাববেন তারা।
তিনি বলেন, “উনার (খালেদা জিয়া) যে অবস্থা তার দ্রুত উন্নত চিকিৎসার বন্দোবস্ত করতে হবে। তার শরীর খুবই খারাপ। তার সুগার লেভেল আজকে ১৫। এভাবে আর কত দিন চলবে?
“এখানে তো প্রায় এক বছরের কাছাকাছি হয়ে যাচ্ছে। এজন্য আমরা চাই উন্নত হসপিটালে নিয়ে উনার চিকিৎসা দেওয়া আর উনার মুক্তির ব্যবস্থা করা।”
৭৪ বছর বয়সী খালেদা জিয়া আর্থাইটিসসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে তার যথাযথ চিকিৎসা হচ্ছে না বলে অভিযোগ করে আসছেন বিএনপি নেতারা।
খালেদা জিয়ার বর্তমান শারীরিক অবস্থা তুলে ধরে সেলিমা ইসলাম বলেন, “তার (খালেদা জিয়া) অবস্থা খুবই খারাপ। খালি বমি করছে, গায়ে জ্বর আছে, ব্যথায় কোঁকড়াচ্ছে। বাম হাতটা একদম বেঁকে গেছে তার। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্য কোথাও নিতে হবে। এই হাসপাতালে এটা সম্ভব না।
“তারা (বিএসএমএমইউর চিকিৎসকরা) দেখেছেন, কিন্তু যে চিকিৎসা দিচ্ছেন তাতে উনার কাজ হচ্ছে না। এখানে যে চিকিৎসা দিচ্ছেন তাতে তার শরীরে তো কোনো উন্নতি হচ্ছে না। বরং দিন দিন অবনতি হচ্ছে।”
বিকাল ৩টার দিকে সেলিমা ইসলাম ছাড়াও তাদের ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার, তার স্ত্রী কানিজ ফাতেমা ও ছেলে অভিক এস্কান্দার, প্রয়াত ভাই সাঈদ এস্কান্দারের স্ত্রী নাসরিন এস্কান্দার বঙ্গবন্ধু মেডিকেলের কেবিন ব্লকে আসেন। কারা কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে খালেদা জিয়ার সাথে তাদের ঘণ্টাখানেক সাক্ষাৎ হয়।
জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১৭ বছরের কারাদণ্ড নিয়ে বন্দি আছেন খালেদা জিয়া।২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি দণ্ডিত হওয়ার পর তাকে নেওয়া হয়েছিল পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে। কয়েক দফায় সেখান থেকে এনে তাকে বঙ্গবন্ধু মেডিকেলের চিকিৎসা দেওয়া হয়।
সর্বশেষ গত বছর ১ এপ্রিল খালেদা জিয়াকে এই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, এরপর থেকে সেখানেই চিকিৎসাধীন আছেন তিনি।