বিলবোর্ড নয়, ‘দিলবোর্ড’ চান মেয়র আতিক

আওয়ামী লীগের প্রচারের জন্য বিলবোর্ড না টাঙিয়ে নেতাকর্মীদের প্রতি ভালো কাজের মাধ্যমে মানুষের মনে জায়গা করে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Dec 2019, 05:52 PM
Updated : 28 Dec 2019, 05:52 PM

শনিবার ঢাকার সিরডাপ মিলনায়তনে নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরামের অভিষেক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “কয়েক দিন আগে ঢাকা শহরে আমাদের অনেকগুলো সম্মেলন হয়ে গেল। সেই সম্মেলনের সময় আমাকে অনেকে বলছিলেন যে, আমরা বোর্ড লাগাব, বিলবোর্ড। আমি মনে করি, আমাদেরকে বিলবোর্ড লাগানোর চেয়ে আমরা যদি মানুষের মনের ভেতরে ঢুকতে পারি, মানুষের রেসপেক্ট যদি পাই তাহলে আমি মনে করি আর বিলবোর্ড না লাগিয়ে শহরকে নোংরা না করে আসুন আমরা মানুষের মনে আমরা যেন দিলবোর্ড তৈরি করতে পারি।”

সাধারণ মানুষকে সন্তুষ্ট করতে পারলে দল থেকে তার প্রতিদান পাওয়া যাবে বলেও মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে ঢাকা উত্তরের মেয়রের চেয়ারে বসা এই গার্মেন্ট ব্যবসায়ী।

এবার ওই সিটি করপোরেশনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী আতিকুল ইসলাম বলেন, “যদি দিলবোর্ড ঠিক থাকে, মানুষ কিন্তু আপনাকে...মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কিন্তু আপনাকেই নমিনেশন দিবে। তার প্রমাণ কিন্তু আমরা ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠন আছে সেখানে কিন্তু আমরা দেখতে পেয়েছি।

“তাই যত্রতত্র পোস্টার বিলবোর্ড লাগিয়ে এই শহরকে আপনারা নোংরা করবেন না। এই শহরের নতুন প্রজন্ম এই ধরনের পোস্টার তারা দেখতে চান না। আজকে উন্নত বিশ্বে অনলাইনের মাধ্যমে ডিজিটাল ক্যাম্পেইন শুরু হয়েছে। আমরা কেন এই ধরনের ডিজিটাল ক্যাম্পেইন করতে পারি না?”

উত্তরের মেয়র বলেন, “ঢাকা শহরের কিছু কিছু দেয়াল আমরা নির্দিষ্ট করে দেব যেগুলোতে আপনারা পোস্টার লাগাতে পারবেন। এর বাইরে পুরো ঢাকা শহরে পোস্টার লাগিয়ে ঢাকা শহর নোংরা করার দিন কিন্তু শেষ হতে হবে। আমাদের সমাজের সবাইকে এই ধরনের প্রতিজ্ঞা নিতে হবে। আপনারা দিলবোর্ড তৈরি করেন, বিলবোর্ড না। আপনারা যারা আইন না মানবেন তাদের জন্য ফাইনের ব্যবস্থা করতে হবে।”

আতিকুল ইসলাম বলেন, “আমরা সবাই ফাইনকে ভয় পাই। তাই ঢাকা শহরকে ঠিক করতে গেলে যেখানে আইন থাকবে সেখানে ফাইনের প্রয়োগ করতে হবে। তাহলে এই শহর আরও অনেক দূর এগিয়ে যাবে বল আমার বিশ্বাস।”

তিনি বলেন, “বায়ু দূষণ এখন আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। এটি মোকাবেলা করা একলা সিটি করপোরেশনের পক্ষে সম্ভব নয়। এটি মোকাবেলায় আমাদের সবাইকে একসাথে এগিয়ে আসতে হবে।

“একটি সুন্দর ঢাকা শহর, একটি ক্লিন ঢাকা শহর, একটি স্মার্ট ঢাকা শহর- এটিই আমাদের সবার পরিকল্পনা।”

অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, “বায়ু দূষণ কমাতে পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। ইতোমধ্যে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সভাপতিত্বে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের একটি সভা হয়েছে। ওই সভায় গঠিত কমিটির সুপারিশে রাজধানীতে ধুলাবালির দূষণ ঠেকাতে ২০টি সুইপিং ট্র্যাক কেনা হচ্ছে।”

তিনি বলেন, “ঢাকা শহর জন্মলগ্ন থেকেই অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠেছে। বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাসলাইনসহ নানা রকম সেবামূলক কাজ যেগুলো করা হয়েছে তা ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা অনুযায়ী করা হয়নি। নতুন করে ঢাকা শহরে জনসংখ্যা বেড়েছে। সে অনুযায়ী সংস্থাগুলো সেবা দিতে খোঁড়াখুঁড়ির কাজ করছে। এতে করে ওয়াসা একদিকে কাটাকাটি করছে, ডেসকো অন্যদিকে করছে, তিতাস আরেক দিকে কাটছে। ফলে ধুলাবালি বাড়ছে। তবে এই দূষণ রোধে সরকারের পক্ষ থেকে আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছি।”

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন, নগর পরিকল্পনাবিদ আদিল মুহাম্মদ খান, নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি মতিন আব্দুল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক এসএম ফয়েজ প্রমুখ বক্তব্য দেন।