বৈচিত্র্যময় জীবন পেরিয়ে খোকার চিরবিদায়

ছাত্র আন্দোলন থেকে গেরিলা যোদ্ধা; ওয়ার্ড কমিশনার থেকে মেয়র-মন্ত্রী; বাম থেকে মধ্য ডান দলের রাজনীতিক, আবার ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের মধ্যেও জনপ্রিয়তা- এমন অনেক বৈশিষ্ট্য যেখানে মিলেছে, সে হলেন সাদেক হোসেন খোকা।

সুমন মাহমুদ প্রধান রাজনৈতিক প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 Nov 2019, 03:20 PM
Updated : 4 Nov 2019, 06:54 PM

দলের গণ্ডি ছাড়িয়ে অন্য দলেও যেমন জনপ্রিয় ছিলেন তিনি, এলাকার মানুষেরও ছিলেন কাছের মানুষ। তাকে বর্ণনা করতে গিয়ে এক সময়ের সহকর্মী আবুল হাসনাত বললেন, “হি ওয়াজ ম্যান অব দি পিপলস।”

খোকার দল বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য পুরান ঢাকার আবুল হাসনাত ঢাকার প্রথম মেয়র। ওই পুরান ঢাকা থেকেই জাতীয় রাজনীতিতে উঠে এসেছিলেন খোকা, ছিলেন ক্রীড়া সংগঠকও।

উত্তাল বাহান্নোয় জন্ম নেওয়া খোকা ঘটনাবহুল রাজনৈতিক জীবন পেরিয়ে সোমবার চিরবিদায় নিয়েছেন ৬৭ বছর বয়সে।

পাঁচ বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার পর দুর্নীতির মামলায় দণ্ড নিয়ে সেখানেই ক্যান্সারের চিকিৎসা করাচ্ছিলেন বিএনপির এই ভাইস চেয়ারম্যান।

সরকারবিরোধী বিএনপি তাদের এই নেতার দেশে ফেরার আকুতির কথা জানিয়েছিলেন সরকারকে; তাতে সাড়াও মিলেছিল। কিন্তু তার আগেই জীবনাবসান ঘটল তার।

তবে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, খোকার লাশ দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকার সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে।

সাদেক হোসেন খোকার জন্ম ১৯৫২ সালের ১২ মে মুন্সীগঞ্জে সৈয়দপুরে। তবে বাবা-মায়ের সঙ্গে পুরান ঢাকার গোপীবাগে তার বেড়ে ওঠা। তার বাবা এম এ করীম ছিলেন প্রকৌশলী ছিলেন।

শিশুকাল থেকেই বন্ধু-বান্ধবদের নিয়েই ছিল খোকার জীবন। এই বন্ধুত্বের সূত্র ধরেই যাওয়া মুক্তিযুদ্ধে, এই বন্ধুদের সঙ্গে মিলেই গড়ে তোলেন ব্রাদার্স ইউনিয়ন ক্লাব।

গোপীবাগ রামকৃষ্ণ মিশন স্কুল, কলতাবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জয়দেবপুর রানী বিলাস মনি উচ্চ বালক বিদ্যালয়, জগন্নাথ কলেজ হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যান খোকা; মনোবিজ্ঞানে পড়াশোনা করেন তিনি।

ছাত্র আন্দোলনে নাম লিখিয়ে খোকা হয়ে উঠেছিলেন ছাত্র ইউনিয়নের নেতা। পরে যোগ দেন বাম আন্দোলনে; রুশ-চীন দ্বন্দ্বে কমিউনিস্ট পার্টির ভাঙন দেখা দিলে তিনি নাম লেখান চিনপন্থি শিবিরে।

ছাত্র আন্দোলনের পর কাজী জাফর আহমেদ নেতৃত্বাধীন ইউনাইটেড পিপলস লীগে (ইউপিপি) যোগ দিয়েছিলেন খোকা। পরে যোগ দেন ন্যাপ ভাসানীতে।

জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পরে যখন দলের হাল ধরেন খালেদা জিয়া, চিনপন্থি অনেক বাম নেতাকে অনুসরণ করে তখন ১৯৮৪ সালে বিএনপিতে যোগ দেন খোকা।

শুরু হয় তার রাজনীতির আরেক অধ্যায়। প্রথমে ওয়ার্ড কমিশনার হন সিটি করপোরেশনে; ১৯৯১ সালের সংসদ নির্বাচনে সূত্রাপুর-কোতোয়ালি আসনে শেখ হাসিনাকে হারিয়ে দিয়ে সারাদেশের নজরে আসেন তিনি। ২০০১ সাল পর্যন্ত প্রতিটি নির্বাচনে জয় ধরে রাখেন তিনি; এমনকি ১৯৯৬ সালে যখন ঢাকায় বিএনপি অন্য সব আসনে হেরেছিল, তখনও ধানের শীষকে জয়ী রেখেছিলেন খোকা।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাদেক হোসেন খোকা

১৯৯১ সালে সরকার গঠনের সময় ক্রীড়া সংগঠক খোকাকে  যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী করেন খালেদা জিয়া।

মুক্তিযুদ্ধের পর ১৯৭২ সালে ব্রাদার্স ইউনিয়নের দায়িত্ব নেন খোকা। তিন বছরে ঘরোয়া ফুটবলের তৃতীয় ডিভিশন থেকে প্রথম ডিভিশনে উঠে আসে ব্রাদার্স ইউনিয়ন, টক্কর দিতে শুরু করে মোহামেডান ও আবাহনীর সঙ্গে। এছাড়া ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ক্লাব, ফরাশগঞ্জ ক্লাব এবং মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্রের চেয়ারম্যানের দায়িত্বেও ছিলেন তিনি।

২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারে মৎস্য ও পশুসম্পদমন্ত্রী হন খোকা। তবে পরের বছরই ঢাকা সিটি করপোরেশনের মেয়র হওয়ার পর মন্ত্রিত্ব ছাড়েন তিনি।

২০০২ সালে প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন ওই নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হয়ে মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর ২০১১ সাল পর্যন্ত একটানা দায়িত্ব পালন করেন খোকা। ঢাকা সিটি করপোরেশন বিভক্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত তিনিই ছিলেন দায়িত্বে।

তার সময়েই ঢাকার বিভিন্ন সড়ক মুক্তিযোদ্ধা ও বরেণ্য শিল্পী-সাহিত্যিকদের নামে করা হয়, যা সবার প্রশংসা কুড়ায়। আবার মেয়র থাকাকালের ঘটনার জন্যই দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হন তিনি।

কয়েক বছর আগে মাহমুদুর রহমান মান্নার সঙ্গে এক টেলিআলাপ প্রকাশের পর রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় পড়েছিলেন খোকা; জরুরি অবস্থার সময় বিএনপির সংস্কারপন্থিদের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতার বিষয়টিও ছিল আলোচিত।

তৃণমূল থেকে উঠে আসা খোকা সহ সাংগঠনিক পদ দিয়ে শুরু করে নানা পদ পেরিয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত। এর আগে ঢাকা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক, সভাপতির দায়িত্বও পালন করেন দীর্ঘদিন। জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতিও ছিলেন তিনি।

যুদ্ধদিনের খোকা

অন্য বন্ধুদের মতো বাড়িতে না জানিয়েই একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিলেন সাদেক হোসেন খোকা, তখন তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মনোবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। তিনি ছিলেন ক্র্যাক প্লাটুনের সদস্য, একদল তরুণের ওই গেরিলা যুদ্ধ অনেকের কাছে ছিল বিস্ময়ের।

২০০১ সালে যখন মন্ত্রী, তখন এক আলাপে নিজের মুক্তিযুদ্ধের কিছু ঘটনার রোমন্থন করেছিলেন খোকা।

“আমি যুদ্ধে যাব- এটা মা-বাবা কাউকে জানাইনি। বলতে পার, একরম হঠাৎ করে বাসা থেকে চলে হয়ে গেলাম যুদ্ধের পথে।”

যুদ্ধে যাওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেছিলন, “পাকিস্তানিরা আমাদেরকে শোষণ করবে, নির্যাতন করবে, আমাদের সম্পদ লুট করে নিয়ে যাবে, এটা তো মনে নেওয়া যায় না। যুদ্ধ যাওয়ার প্রতীক্ষায় দিন গুণছিলাম, একদিন হঠাৎ করেই বন্ধু-বান্ধবসহ আমি মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিলাম। হয়ে গেলাম গেরিলা, ক্র্যাক প্লাটুনের সদস্য।”

‘লম্বা ইতিহাস’র খানিকটা সেই আলাপে বলেছিলেন এই গেরিলা যোদ্ধা।

“মুক্তিযুদ্ধের মাঝামাঝি দিককার কথা। বায়তুল মোকাররমই ঢাকার তখন একমাত্র বড় মার্কেট ছিল। একদিন দেখি দুপুরে বেলায় বায়তুল মোকাররমের সামনে বড় বড় ক্যামেরা দিয়ে শুটিং হচ্ছে। আমার একটু কিউরিসিটি হল, এখানে কী হচ্ছে? রোজার ঈদের আগে বড় বড় দোকানে দেখানো হচ্ছে যে, ঈদের মার্কেটিং হচ্ছে, বেচা-কেনা হচ্ছে, মানে দেশের আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিকভাবে চলছে। এটা দেখানোর জন্য পাকিস্তানিরা শুটিং করছে। শুনলাম ডিএফপি এই শুটিং করছে।

“তখন আমার মাথা ঢুকল, এই ডিএফপিকে তো তাহলে ধরতে হয়। কোথায় ডিএফপি? খোঁজ-খবর নিতে নিতে জানা গেল, শান্তিনগরে এসবি অফিসের পাশেই ডিএফপি (ডিপার্টমেন্ট অব ফিল্ম এন্ড পাবলিকেশন্স) অফিস। এই অফিস থেকেই এসব কাজ করা হয়। তখন আমরা পরিকল্পনা করলাম এই অফিসে অপারেশন চালাব।

“ক্র্যাক প্লাটুনের আমরা তিনজন ছুটির দিনে, মানে সেদিন হাফ অফিসের দিন ছিল, অপারেশনে বেরুলাম। দিনটি ছিল শুক্রবার। জুম্মার নামাজের পরে অপারেশন। আমরা একটা কালো ব্যাগের মধ্যে দুইটা স্টেনগান ও এক্সপ্লোসিভ নিয়ে যাই। ডিএফপির গেইটে গেলাম। যে দারোয়ান ডিউটিতে ছিল, তাকে অফিসের এক কর্মকর্তার নাম বলি যে, তার (ওই কর্মকর্তা) দেশের বাড়ি থেকে এক আত্মীয় উনার জন্য জিনিস পাঠিয়েছেন। এই কথায় দারোয়ান অফিসের গেইট খুলে ঢুকতে দেয়। ভেতরে ঢুকে আমরা ব্যাগ থেকে অস্ত্র বের করে তাকে নিয়ন্ত্রণে নিই, তাকে বোঝাই যে আমরা মুক্তিযোদ্ধা। এক পর্যায়ে দারোয়ান বলে যে, সে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের লোক। তার ছোট ভাই একজন মুক্তিযোদ্ধা। বিষয়টা আমাদের জন্য ইজি হয়ে গেল।”

“তারপর একটা পর্যায়ে আমরা সেই ২০ পাউন্ড ওজনের এক্সপ্লোসিভটা রুমের ভেতরে রাখি। এক্সপ্লোসিভের বৈশিষ্ট্য হল, যত চাপ দিয়ে রাখা যাবে, এটার ক্যাপাসিটি তত বাড়বে। তখন কয়েকটা স্টিলের আলমারি দিয়ে ওই এক্সপ্লোসিভ চাপা দিলাম, তারপর বিস্ফোরণ ঘটাই। সেই বিস্ফোরণের পর সারা বিশ্বে শিরোনাম হয়েছিল- পূর্ব পাকিস্তানে দামাল মুক্তিযোদ্ধারা অশান্ত করে তুলেছে ঢাকাকে। এরকম বিস্ফোরণ এযাবত পাকিস্তানে আর হয়নি। এটা পাকিস্তানের সৈন্যদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। এভাবে দিনে-দুপুরে এরকম একটা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে গেল মুক্তিযোদ্ধারা, এটা কী করে সম্ভব!”

ডিএফপি ছাড়া রাজারবাগের কাছে মোমিনবাগে পাকিস্তান নির্বাচন কমিশনের প্রধান কার্যালয়, ঢাকা হলের পেছনে এয়ারফোর্সের রিক্রুটিং সেন্টারও খোকার নেতৃত্বে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধে।

খোকা বলেছিলেন, “আমাদের অপারেশনের স্পিরিট ছিল শত্রুকে ব্যতিব্যস্ত রাখা। ঢাকার মানুষকে জানান দেওয়া, মুক্তিযুদ্ধ ঢাকায়ও চলছে। আমাদের গ্রুপ বিশেষ করে ছোট-বড় অনেক অপারেশন আমরা করেছি ঢাকায়।”

মুক্তিযুদ্ধে যাওয়ার স্মৃতি তুলে ধরে খোকা বলেছিলেন, “মুক্তিযুদ্ধ শুরুর পরপরই বাংলাদেশ থেকে আমরা কয়েকজন সীমান্ত পাড়ি দিয়ে আগরতলা শহরে গিয়ে সিপিএম (কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া-মার্কসবাদী) অফিসে যাই। সেখানে আমাদের দেশের নেতৃবৃন্দকে পাই। সেখান থেকে আমাদের যাত্রা ২ নম্বর সেক্টরে। মেজর খালেদ মোশাররফ ও মেজর এটিএম হায়দারের কাছে প্রশিক্ষণ নেওয়ার জন্য। সেখানে আমাদের শহীদুল্লাহ খান বাদল আমাদের বিভিন্ন গ্রুপে পাঠিয়ে দেন।

“ট্রেনিংয়ের পর মেজর হায়দারের নেতৃত্বে আমি কুমিল্লার সালদা নদীতে পাকিস্তানি সৈন্যদের সাথে প্রথম সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নেই। সেই দিন রাতে সেই দুঃসাহসিক অপারেশনের কথা স্মরণ করলে শরীর শিহরিত হয়ে ওঠে। মাথার উপর দিয়ে রাতের অন্ধকারে টমি গান-ব্যারেল গানের আগুনের স্ফূলিঙ্গের মতো কী যেন ছুটে যাচ্ছে। যেটা ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না। পাকিস্তানি সৈন্যদের আমরা সেই অপারেশনেই পিছু হটাতে বাধ্য করেছিলাম।”

খোকার ভাষায়, “মুক্তিযুদ্ধ ছিল সার্বজনীন। কোনো দল, কোনো গোষ্ঠি, কেনো ব্যক্তি, কোনো পরিবারের একক কারও অবদান ছিল না, এই অবদান বাংলাদেশের সাড়ে ৭ কোটি মানুষের। এর সুফলও সার্বজনীন হওয়া উচিৎ।”

‘আর আসবে না’

এরশাদবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে ঢাকায় প্রতিটি আন্দোলনে অগ্রভাগে ছিলেন খোকা; তবে তাকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয় ১৯৯০ সালে পুরান ঢাকায় হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলা ঠেকানোর জন্য।

নিউ ইয়র্কে হাসপাতালে সাদেক হোসেন খোকা

এরশাদ আমলের ওই ঘটনায় এখনও খোকাকে স্মরণ করেন গোপীবাগের একটি মিষ্টি দোকানের প্রবীণ কর্মী দেবেন্দ্র নাথ।

খোকার মৃত্যুর খবর শুনে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “খোকা ভাইয়ের মতো নেতা আর আসবে না।”

তিনি বলেন, “১৯৯০ সালে ভারতের বাবরী মসজিদ ভাঙার পর পুরান ঢাকায় হিন্দুদের উপর যখন হামলার চেষ্টা হয়েছিল, খোকা ভাই শাঁখারী বাজারে এসে বলেছিল, সাবধান-খবরদার, এখানে কেউ কিছু করলে হাত ভেঙে ফেলব।”

“শুধু তাই নয়, স্বামীবাগের হিন্দু সম্প্রদায়ের দুটি মন্দির ও ইসকনের বেদখল জমি পুনরুদ্ধার করে দিয়েছিলেন তিনি,” বলেন দেবেন্দ্র।

পুরান ঢাকায় সূত্রাপুর ও কোতোয়ালি হিন্দুপ্রধান এলাকা; বিএনপির জোটে সাম্প্রদায়িক দল থাকলেও খোকার কারণেই ওই এলাকার ভোট ধানের শীষে পড়ত বলে স্থানীয়রা জানান।

খোকার মৃত্যুতে শোকগ্রস্ত অনেকে বলেন, যখনই কোথাও মানুষের বিপদ হয়েছে, যখনই কেউ সঙ্কটে পড়েছে, তখনই ছুটে যেতেন তিনি।

লন্ডনে অবস্থানরত ঢাকার প্রথম মেয়র আবুল হাসনাত বলেন, “খোকা তৃণমূল থেকে উঠে আসা এক রাজনৈতিক নেতা, যিনি দলমত নির্বিশেষে মানুষের পাশে থাকতেন সবসময়।”

মুক্তিযোদ্ধা অলি আহমদ বীরবিক্রম বলেন, “একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে তিনি সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন করেছিলেন।”

খোকার মৃত্যুতে দলে শূন্যতাটাই বড় হয়ে বাজছে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মনে; যিনি নিজেও খোকার মতো বাম রাজনীতি থেকে বিএনপিতে এসেছেন।

খোকার পরবর্তী রাজনৈতিক দর্শনকে অপছন্দ করলেও তা ছাপিয়ে ব্যক্তি খোকা, মুক্তিযোদ্ধা খোকাকে ভালোবাসা নিয়ে স্মরণ করছেন তার যুদ্ধদিনের সঙ্গী সাংস্কৃতিক আন্দোলনের সংগঠক নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু।