চার জানাজা শেষে এরশাদের দাফন মঙ্গলবার

চার জানাজা শেষে জাতীয় পাটির্র চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদকে মঙ্গলবার বিকালে ঢাকায় সেনাবাহিনীর কবরস্থানে দাফন করা হবে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 July 2019, 06:30 AM
Updated : 15 July 2019, 12:55 PM

রোববার বেলা ১টা ৫০ মিনিটে ঢাকা সেনানিবাসে সেনা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে এরশাদের প্রথম জানাজা হয়।

সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ, সাবেক সেনাপ্রধান আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক, সাবেক সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল মাহবুবুর রহমান, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, এরশাদের ভাই ও জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জিএম কাদের, মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গাঁ, এরশাদের বড় ছেলে সাদ এরশাদসহ জাতীয় পার্টির বিভিন্ন স্তরের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

জানাজার এক ঘণ্টা আগে জাতীয় পতাকা ও সেনাবাহিনীর পতাকা মোড়ানো এরশাদের কফিন মসজিদ প্রাঙ্গণে নিয়ে যাওয়া হয়।

এর আগে রোববার সকালে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) সাবেক সামরিক শাসক এরশাদের মৃত্যুর ঘণ্টাতিনেক পর তার দলের মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গাঁ শেষকৃত্যের বিস্তারিত সূচি গণমাধ্যমকে জানান।

দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এরশাদের মরদেহ এখন সিএমএইচের হিমঘরে রাখা হবে।

সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় বিরোধী দলীয় নেতার দ্বিতীয় জানাজা হবে। নেতা-কর্মীসহ সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের মরদেহ বেলা ১২টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত বিজয়নগরে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে রাখা হবে।

একই দিন বাদ আছর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে তৃতীয় জানাজার পর এরশাদের মরদেহ আবারও সিএমএইচের হিমঘরে রাখা হবে।

রাঙ্গাঁ সাংবাদিকদের বলেন, সোমবার এরশাদের মরদেহ তার নির্বাচনী এলাকা রংপুরে নিয়ে যাওয়ার ভাবনা থাকলেও ‘প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে’ সম্ভব হচ্ছে না। বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টারে করে সাবেক এই রাষ্ট্রপতির মরদেহ মঙ্গলবার সকালে রংপুরে নেওয়া হবে।

সকাল সাড়ে ১০টায় জেলা শহরের ঈদগাহ মাঠে ‘পেয়ারা’ নামে পরিচিত রংপুরের সন্তান এরশাদের চতুর্থ জানাজা হবে বলে তার প্রেসসচিব সুনীল শুভ রায় জানিয়েছেন।

হেলিকপ্টারে করে ঢাকার আনার পর ওই দিনই বাদ জোহর বাংলাদেশের চতুর্থ সেনাপ্রধানের মরদেহ সেনা কবরস্থানে দাফন করা হবে।

জাতীয় পার্টির মহাসচিব জানান, পরদিন বুধবার বাদ আছর গুলশানের আযাদ মসজিদে এরশাদের কুলখানি অনুষ্ঠিত হবে।

এদিকে রোববার জানাজা শেষে বিকালে রাজধানীর বনানীতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে সামনে এরশাদকে সেনা কবরস্থানে দাফনের সিদ্ধান্ত নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন নেতাকর্মীরা। তারা বনানী কবরস্থান বা রংপুরে দাফনের দাবি জানান।

নেতাকর্মীদের তোপের মুখে পড়ে রাঙ্গাঁ বলেন, “দলের নেতা-কর্মীদের মতামত অনুযায়ী দাফনের স্থান পরিবর্তন হতে পারে। তার পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলে আমরা স্থান চূড়ান্ত করব। নেতা-কর্মীরা চাইলে উন্মুক্ত স্থানেও কবর দেওয়া হতে পারে৷

এরশাদের ছোট ভাই জি এম কাদের বলেন, “আপাতত আমরা সেনানিবাস কবরস্তানে দাফনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কর্মীরা যেহেতু উন্মুক্ত স্থানে দাফনের কথা বলেছেন, সেটা বিবেচনা করা হবে।”

৯০ বছর বয়সী এরশাদ রক্তের ক্যান্সার মাইডোলিসপ্লাস্টিক সিনড্রোমে আক্রান্ত ছিলেন; শেষ দিকে তার ফুসফুসে দেখা দিয়েছিল সংক্রমণ, কিডনিও কাজ করছিল না।

গত বছরের শেষ ভাগে সিঙ্গাপুরে গিয়ে চিকিৎসা নেন এরশাদ। গত ২২ জুন গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় তাকে সিএমএইচের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে রাখা হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়।

সেখানে ১০ দিন ধরে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় রোববার সকাল পৌনে ৮টায় এরশাদ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।