ভোটে অনিয়ম তদন্তে রাষ্ট্রপতির হস্তক্ষেপ চায় বিএনপি

নির্বাচন কমিশনের বিশ্লেষণ প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাতিল এবং ওই নির্বাচনে অনিয়ম তদন্তে উচ্চ পর্যায়ের কমিশন গঠনের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন জানিয়েছে বিএনপি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 July 2019, 10:39 AM
Updated : 10 July 2019, 11:48 AM

নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, “গত ৩০ ডিসেম্বর ভোটের আগের রাতে গোটা দেশে ব্যালট বাক্স ভর্তি করার দালিলিক প্রমাণ এবার স্বয়ং আওয়ামী লীগের অনুগত ও গভীর আস্থাভাজন নির্বাচন কমিশন নিজেই প্রকাশ করেছে।

“নির্বাচনের ছয় মাস পরে নির্বাচন কমিশন কেন্দ্রভিত্তিক যে ফলাফল প্রকাশ করেছে তাতে দেখা গেছে, কোনো নির্বাচনই হয়নি বাংলাদেশে।”

রিজভী বলেন, “রাষ্ট্রপতির কাছে আমাদের আবেদন পৃথিবীর ইতিহাসে অকল্পনীয় এই ভয়াবহ ভোট চুরি ও ভোট ডাকাতির একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাতিল করুন। উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিশন করে যারা অনিয়মের সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া উচিত আপনার। রাষ্ট্রের অভিভাবক হিসেবে ভোটবঞ্চিত ভোটাররা দ্রুত আপনার সুবিবেচনাপ্রসূত পদক্ষেপের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।”

গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ নির্বাচনের কেন্দ্রভিত্তিক ফলাফল বিশ্লেষণ করে ৪০ হাজারের বেশি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৬৯টিতে শতভাগ ভোট পড়ার তথ্য সম্প্রতি জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা নিজেও বিষয়টিকে ‘অস্বাভাবিক’ বলেছেন। তবে গেজেট প্রকাশের পর এ নিয়ে আর কিছু করার নেই বলেছেন তিনি। 

রিজভী বলেন, “সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান নির্বাচন কমিশনও যে ফলাফল প্রকাশ করেছে তাতেও উল্লিখিত তথ্যগুলির বর্ণনা আছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা ৩০ জুন দায় স্বীকার করে বলেছেন, শতভাগ ভোট পড়া কোনো স্বাভাবিক ঘটনা নয়।

“এই বিশ্লেষণের মাধ্যমে যেটি ফুটে উঠেছে তা হল, এই নির্লজ্জ ভোটারবিহীন সরকারের নির্বাচন কমিশন ৩০ ডিসেম্বরের ভোট নিয়ে ভোটারদের সাথে ‘ফান’ বা হাস্যকৌতুক করেছে। মধ্যরাতে নব আবিষ্কৃত ভোট ডাকাতির অভিনব পন্থা অবলম্বনের মাধ্যমে জালিয়াতি করতে সহায়তা করার জন্য অবশ্যই সিইসিসহ নির্বাচন কমিশনের সংশ্লিষ্টদের বিচার হওয়া উচিত।”

গ্যাসের বাড়তি দাম

উন্নয়নের কথা বলে জনগণের পকেট কেটে ক্ষমতাসীন দলের লোকজন আর ভোট ডাকাতিতে সহযোগীদের পকেট ভারি করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন রিজভী।

“সবাই জানে, গ্যাসে এই মুহূর্তে কোনো ভর্তুকি নেই। এই গ্যাসের মূল্য এলএনজি আমদানি করে তার ভর্তুকি দেওয়ার জন্য বাড়ানো হয়েছে। সরকারের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত মন্ত্রী, উপদেষ্টা এবং তাদের অত্যন্ত প্রিয়ভাজন এলএনজি আমদানিকারক ব্যবসায়ীদের বাড়তি খরচ মেটাতে জনগণের ঘাড়ে গ্যাসের দাম চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। এলএনজি ব্যবসায়ীদের সুবিধা দিতে সাধারণ ভোক্তাদেরকেকেন বাড়তি দাম দিতে হবে?

“আমরা প্রধানমন্ত্রীকে বলব, কোনো অজুহাত দেখাবেন না, গ্যাসের দাম কমান। গ্যাসের দাম বাড়ানোর কারণে জনজীবনে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। জনগণ ক্ষোভে ফুঁসছে। অনতিবিলম্বে গ্যাসের দাম বাড়ানোর ঘোষণা স্থগিত করুন। অন্যথায় রাজপথে নেমে জনগণ দাবি আদায় করবে।”

সংবাদ সম্মেলনে দলের ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান, নিতাই রায় চৌধুরী, শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইন, প্রচার সম্পাদক মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।