দলীয় ব্যবসায়ীদের অর্থ পাচারের সুযোগ দিতে চাল আমদানি: মোশাররফ

দেশে খাদ্য শস্য উদ্ধৃত্ত থাকলেও কৃষকের ক্ষতি করে দলীয় ব্যবসায়ীদের অর্থ পাচারের স্বার্থে সরকার চাল আমদানির সুযোগ রেখেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 May 2019, 02:59 PM
Updated : 17 May 2019, 03:31 PM

শুক্রবার গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে বৌদ্ধ সস্প্রদায়ের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময়ের পর আলোচনা সভায় এ অভিযোগ করেন তিনি।

খন্দকার মোশাররফ বলেন, বাংলাদেশের কৃষকরা তাদের উৎপাদিত যে ধান তার মূল্য পাচ্ছে না। মূল্য না পাওয়ার কারণে তাদের সেই পাকা ধান জমিতে পুড়িয়ে ফেলা হচ্ছে। দেশে ২৫-৩০ লাখ টন খাদ্য শস্য উদ্ধৃত্ত আছে। খাদ্য মন্ত্রণালয় কিছু চাল বিদেশে রপ্তানিরও চেষ্টা করছে। অন্যদিকে আবার দেখা যাচ্ছে, সরকার চাল আমদানি করছে।

“আমদানি হচ্ছে কেন? আমদানি হচ্ছে, আসলে যেটা গুঞ্জন তা হচ্ছ- এখানে ওভার ইনভেয়স করে বাংলাদেশ থেকে যারা বিদেশে টাকা পাচার করে দিতে চাচ্ছেন তাদের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য এই চাল আমদানি করা হচ্ছে।”

সরকারি-বেসরকারি হিসাবে, দেশে ২৫ থেকে ৩০ লাখ টন চাল উদ্বৃত্ত রয়েছে। কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে এই বাড়তি চাল রপ্তানির বিষয়টিও বিবেচনা করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে কেন দেশে চাল আমদানি হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

বিএনপি নেতা মোশাররফ বলেন, “খাদ্য শস্য যেখানে আমাদের উদ্ধৃত্ত আছে, কৃষকরা যেখানে ধান পুঁড়িয়ে ফেলেছে মূল্য পায় না বলে সেখানে কোন যুক্তিতে বিদেশ থেকে চাল আমদানি করা হচ্ছে যদি সেখানে ষড়যন্ত্র না থাকে; টাকা পাঁচারের ষড়যন্ত্র না থাকে; ওভার ইনভেয়সিং করে অতি লাভ করার দুরভিসন্ধি না থাকে? খবর নিয়ে দেখেন যারা করছেন তারা হচ্ছেন বর্তমান সরকারের ব্যবসায়ী, তাদের সমর্থিত ব্যবসায়ী।”

বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে সরকারি দলের নেতাদের বক্তব্যে পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বলেন, “আমরা পরিস্কারভাবে বলতে চাই, আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আমাদের চেয়ারম্যান, তার ইশারায় এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সরাসরি নেতৃত্বে আমরা যারা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে আছি তাদের যৌথ সিদ্ধান্তে এই দল পরিচালিত হচ্ছে। আজকে যারা নিজেরা ভয় পাচ্ছে, যেহেতু জনসমর্থন তাদের নেই, তারা আজকে বিএনপি সম্পর্কে বিভিন্ন ধরনের কথা বলছেন। এতে কোনো বিভ্রান্তির অবকাশ নেই।”

অনুষ্ঠানে বৌদ্ধপূর্ণিমা উপলক্ষে বুদ্ধ সম্প্রদায়কে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা জানানো হয়। বিএনপির সহ ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক দীপের দেওয়ানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এমাজউদ্দিন আহমেদ, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, হিন্দু, ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, বরকত উল্লাহ বুলু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য অধ্যাপক ‍সুকোমল বড়ুয়া বক্তব্য দেন।

হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের আহ্বায়ক গৌতম চক্রবর্তী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য বিজন কান্তি সরকার, কেন্দ্রীয় নেতা জন গোমেজ, অমলেন্দু অপু, সুশীল বড়ুয়া, সুভাষ চন্দ্র চাকমা, রাঙামাটি বৌদ্ধ বিহারের কৌন্ডান্য ভিক্ষ্য মৈত্রী, চাকমা রাজা রাম বিহারের পঙ্কা বংশ ভিক্ষ্য এসময় উপস্থিত ছিলেন।