তিনি বলেছেন, “দেখলাম আওয়ামী লীগের একজন নেতা নুসরাতের খুনিকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়েছে। এসব লোক হচ্ছে ক্রিমিনাল। এরা কখনও আওয়ামী লীগ করতে পারে না। জীবনে এরা কোনোদিন আওয়ামী লীগ করেনি, আওয়ামী লীগে বিশ্বাসও করে না।
“এই সমস্ত লোককেও নুসরাতের খুনির সঙ্গে বিচার করতে হবে। এদেরকে কোনো ছাড় দেওয়া যাবে না। এরা আওয়ামী লীগকে দুর্নাম করে।”
ফেনীর এই মাদ্রাসাছাত্রীকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার প্রতিবাদে শনিবার ঢাকায় বিভিন্ন দল ও সংগঠনের কর্মসূচির মধ্যে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দলীয় কার্যালয়ে এক আলোচনা অনুষ্ঠানে একথা বলেন নাসিম।
অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের মামলা তুলে না নেওয়ায় গত ৬ এপ্রিল কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় নুসরাতের গায়ে। পাঁচ দিন পর তার মৃত্যু ঘটে।
নুসরাতের কলেজের অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলার মদদদাতা হিসেবে নাম এসেছে সোনাগাজী পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাকসুদ আলমের বিরুদ্ধে।
নুসরাতের ভাইরের করা মামলার আসামি মাকসুদকে গত বৃহস্পতিবার পুলিশ ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা পর তাকে দল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত জানায় উপজেলা আওয়ামী লীগ।
সাবেক মন্ত্রী নাসিম বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে নুসরাত হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করেন।
“কোনো ফাঁক-ফোকর না রেখে বিশেষ ট্রাইব্যুনালে নুসরাত হত্যার বিচার করতে হবে। এতে দেশের মানুষ খুশি হবে। সাম্প্রতিক সময়ে নুসরাতসহ সকল শিশু ও নারী হত্যার বিচার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।”
এই প্রসঙ্গে ধর্মীয় উগ্রবাদীদের প্রতিরোধ করার জন্যও দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান ক্ষমতাসীন দলের এই নেতা।
“ধর্মান্ধ রাজনীতিবিদরা নুসরাত হত্যার প্রতিবাদ না করে অসাম্প্রদায়িক অনুষ্ঠান মঙ্গল শোভাযাত্রার বিরোধিতা করে। এদেরকে প্রতিরোধ করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।”
বিএনপি উদ্দেশ করে নাসিম বলেন, “দয়া করে আপনারা সব কিছু নিয়ে রাজনীতি করবে না। আপনার যখন ক্ষমতায় ছিলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যা থেকে শুরু করে জাতীয় ৪ নেতা হত্যার বিচারসহ কোনো হত্যার বিচার করেননি।
“আমরাই একমাত্র দল ক্ষমতায় থেকে নিজের দলের কর্মীকেও খাতির করি না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নুসরাত হত্যার বিচার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করবে।”
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ‘মুজিব নগর দিবস’ উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন নাসিম।
দিবসটির তাৎপর্য নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “বাঙালির সঠিক ইতিহাসের আলোকে দেশ গঠনে ভূমিকা রাখতে হবে।”
সংগঠনের সহ-সভাপতি রফিকুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মোজাফফর হোসেন পল্টু, স্বাধীন বাংলার বেতার কেন্দ্রের শিল্পী মনোরঞ্জন ঘোষাল, আওয়ামী লীগ নেতা বলরাম পোদ্দার, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক অরুণ সরকার রানা।