ব্যারিস্টার রাজ্জাকের জন্য জামায়াত ‘ব্যথিত, মর্মাহত’

একাত্তরের ভূমিকা নিয়ে দলের অনমনীয় অবস্থানের কারণে জামায়াতে ইসলামী সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক পদত্যাগ করায় মনোবেদনা প্রকাশ করেছেন সেক্রেটারি জেনারেল শফিকুর রহমান।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Feb 2019, 12:38 PM
Updated : 15 Feb 2019, 12:39 PM

তিনি বলেছেন, ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক যেখানে আর যেভাবেই থাকুন, তার সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর ‘মহব্বতের সম্পর্কই’ থাকবে।

যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে শীর্ষ জামায়াত নেতাদের আইনজীবী দলের নেতৃত্ব দেওয়া রাজ্জাক শুক্রবার লন্ডন থেকে দলের আমির মকবুল আহমদের কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন।

তিনি বলেছেন, একাত্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করার জন্য জামায়াতে ইসলামী জনগণের কাছে ক্ষমা না চাওয়ায় এবং একবিংশ শতাব্দির বস্তবতার আলোকে দেশের রাজনৈতিক পরিবর্তনকে বিবেচনায় এনে দলের সংস্কার করতে ব্যর্থ হওয়ায় তার পদত্যাগের এই সিদ্ধান্ত। 

এর প্রতিক্রিয়ায় জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল শফিকুর রহমান এক বিবৃতিতে বলেন, “তার পদত্যাগে আমরা ব্যথিত ও মর্মাহত। পদত্যাগ করা যে কোনো সদস্যের স্বীকৃত অধিকার। আমরা দোয়া করি তিনি যেখানেই থাকুন, ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন।”

লন্ডনে আইন পড়া রাজ্জাক ১৯৮৬ সালে দেশে ফিরে অ্যাডভোকেট হিসেবে এনরোলমেন্ট নেন। ওই সময় থেকেই তিনি জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতিতে সক্রিয় হন।

২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসার পর আইনজীবী হিসেবে রাজ্জাকের নাম আলোচনায় আসে। ২০১০ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরু হলে তাদের প্রধান আইনজীবী হিসেবে আদালতে দাঁড়ান রাজ্জাক।

জ্যেষ্ঠ বদরনেতা আব্দুল কাদের মোল্লার ফাঁসির ৫ দিন পর ২০১৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর দলের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রাজ্জাক ঢাকা ছাড়েন। ব্রিটিশ নাগরিকত্বধারী এই আইনজীবী এখন সেখানেই রয়েছেন। 

পদত্যাগপত্রে তিনি লিখেছেন, একাত্তরে মুক্তিদ্ধের বিরোধিতা পরবর্তীকালে জামায়াতের সকল ‘সাফল্য ও অর্জন’ ম্লান করে দিয়েছে বলে তিনি মনে করেন।

এ কারণে গত দুই দশকে বিভিন্ন সময়ে তিনি দলকে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন যে, একাত্তরের সেই ভূমিকা এবং পাকিস্তানকে সমর্থন করার কারণ ব্যাখ্যা করে জাতির কাছে আন্তরিকভাবে ক্ষমা চাওয়া উচিত। কিন্তু জামায়াত তাদের অবস্থান থেকে সরেনি। 

দলের কাঠামোগত সংস্কার, নারীর কার্যকর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা এবং জামায়াতের উদ্দেশ্য, পরিকল্পনা ও কর্মসূচিতে ‘আমূল পরিবর্তন’ আনতে রাজ্জাক যেসব প্রস্তাব গত ৩০ বছরে দিয়েছেন, সেগুলোও ইতিবাচক সাড়া পায়নি বলে পদত্যাগপাত্রে তিনি উল্লেখ করেছেন।

এসব বিষয়ে কোনো জবাব জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল শফিকুর রহমানের বিবৃবিতে আসেনি।

তিনি লিখেছেন, “ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাকসহ আমরা দীর্ঘদিন একই সাথে এই সংগঠনে কাজ করেছি। তিনি জামায়াতে ইসলামীর একজন সিনিয়র পর্যায়ের দায়িত্বশীল ছিলেন। তার অতীতের সকল অবদান আমরা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করি।

“আমরা আশা করি তার সাথে আমাদের মহব্বতের সম্পর্ক অব্যাহত থাকবে।”