দুদকের রাজনৈতিক ভূমিকার কারণেই জাহালমের কারাবাস: রিজভী

অপরাধী না হয়েও পাটকল কর্মী জাহালমের তিন বছর কারাভোগের ঘটনায় ‘ক্রিমিনাল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের’ চিত্রই ভেসে উঠেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 Feb 2019, 10:01 AM
Updated : 4 Feb 2019, 06:26 PM

নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সোমবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “নির্দোষ জাহালম ১০৯২ দিন কারাগারে ছিলেন শুধুমাত্র আওয়ামী সরকারের ক্ষমতা-আশ্রিত দুর্নীতি দমন কমিশনের এর রাজনৈতিক ভূমিকার কারণে। এই কমিশনের কারণেই দেশে ‘ক্রিমিনাল ইকোনমি’ আশকারা পেয়ে পত্র-পল্লবে বিশাল বৃক্ষে পরিণত হয়েছে।”

“জাহালমের দীর্ঘদিন কারাভোগের ঘটনায় দুদকের ভূমিকা নজীরবিহীনভাবে ন্যক্কারজনক। এই ঘটনায় দেশে একটি ‘ক্রিমিনাল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের’ ছবিই ভেসে ওঠে।”

সোনালী ব্যাংকের প্রায় সাড়ে ১৮ কোটি টাকা জালিয়াতির অভিযোগে আবু সালেক নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে ৩৩টি মামলা করে দুদক। কিন্তু দুদকের ভুলে সালেকের বদলে তিন বছর ধরে কারাগারে কাটাতে হয়েছে টাঙ্গাইলের জাহালমকে।

এ নিয়ে গত ৩০ জানুয়ারি প্রথম আলোয় প্রকাশিত সংবাদ নজরে আনা হলে বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের বেঞ্চ জাহালমকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিয়ে মুক্তির আদেশ দেয়।

উচ্চ আদালতের আদেশে সোমবার গাজীপুরের কাশিপুর কারাগার থেকে ছাড়া পান জাহালম।

দুদকের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, “বর্তমান দুদকে আসীন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সরকারের প্রতিহিংসা বাস্তবায়নের অত্যাচারী মেশিন ছাড়া আর কিছুই না। তারা বিরোধী রাজনৈতিক শক্তিকে দমন করতে গিয়ে বেপরোয়া অনাচারে লিপ্ত থেকে মনুষ্যহীনতার ডালপালা বিস্তার করেছে।

“নির্দোষ-নিরীহ, নিরাপরাধ মানুষও দুদকের দায়ের করা মিথ্যা মামলায় অমানবিকতার হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না। ভুয়া ভোটের সরকারের চাহিদা মেটাতে গণতান্ত্রিক শক্তিকে পরাধীনতার শৃঙ্খলে বন্দি করতে দুর্নীতি দমন কমিশন উদ্ভ্রান্ত উগ্রতা নিয়ে কাজ করছে। এর নির্মম শিকার হয়েছেন দেশের সবচেয়ে রাজনৈতিক দলের জনপ্রিয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ অসংখ্য নেতৃবৃন্দ।”

তিনি আরও বলেন, “দুদক সরকারের ১০ বছরের মেগা দুর্নীতির কেশাগ্র স্পর্শ করতে পারেনি। যদি করতে পারত তবে আওয়ামী লীগের অনেক মন্ত্রী-উপদেষ্টা- নেতারা, যাদের বিরুদ্ধে হাজার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ, তারা আজকে প্রবল প্রতাপে দেশব্যাপী দাপিয়ে বেড়াতে পারত না। দেশের বাইরে বেগম পল্লী, সেকেন্ড হোম গড়ে উঠত না। নিউ ইয়র্কে মন্ত্রীর বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট থাকত না।”

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য তৈমুর আলম খন্দকার, নাজমুল হক নান্নু, কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুল ইসলাম হাবিব, আবদুস সালাম আজাদ, তাইফুল ইসলাম টিপু, মুনির হোসেন, বেলাল আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।