‘বোন শেখ হাসিনাকে পূর্ণ সমর্থন’ এরশাদের

দশ বছর আগে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট বাঁধার পর বিভিন্ন সময় নানা অভিযোগ-অনুযোগ করলেও একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে শেখ হাসিনাকে পূর্ণ সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিলেন এইচ এম এরশাদ।

জয়ন্ত সাহা নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Dec 2018, 11:56 AM
Updated : 27 Dec 2018, 04:38 PM

অসুস্থতা নিয়ে নাটকীয়ভাবে সিঙ্গাপুর যাওয়ার পর সেখান থেকে ফিরে বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “আমার বোন শেখ হাসিনাকে পূর্ণ সমর্থন দিচ্ছি। আমি নির্বাচনে বোন শেখ হাসিনাকে সর্বোত সহযোগিতা করব।”

ঢাকার বারিধারায় নিজের বাড়িতে এই সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জানান, ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় একাদশ সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি মহাজোটের সিদ্ধান্তই মেনে চলবে।

ঢাকা ও সাতক্ষীরার আসন দুটিতে আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের সমর্থন দিয়ে ভোট করা থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্তও জানান এরশাদ।

মহাজোটের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপিকে নিয়ে এরশাদ বলেছেন, “বিএনপির অবস্থান ভালো না। তদের অতীত রেকর্ড ভালো না। জয়ের সম্ভাবনা নেই বিএনপির।”

নির্বাচনের আগে চলমান পরিস্থিতি নিয়ে ইসির ভূমিকায় সন্তোষও জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান।

২০১৪ সালের নির্বাচনের আগেও তাতে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দিয়ে এরশাদ নাটকীয় অসুস্থতা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে ভর্তি থাকা অবস্থায় তিনি এমপি নির্বাচিত হন এবং পরে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূতের দায়িত্ব পান। জাতীয় পার্টি সংসদে বিরোধী দলের আসনে বসার পাশাপাশি সরকারেও যোগ দেয়।

তবে এরপর বিভিন্ন সময় এরশাদ নিজের ‘বঞ্চনার’ কথা বলে আসছিলেন। আওয়ামী লীগের কাছে ‘প্রাপ্য সম্মান’ না পাওয়ার অনুযোগও করছিলেন তিনি।

একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে জাতীয় পার্টির প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার গ্রহণের সময় ‘অসুস্থ’ এরশাদের সিএমএইচে ভর্তির খবর এলে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়।

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট থেকে নির্বাচনের ঘোষণা দেওয়ার পরও শতাধিক আসনে জোটের সিদ্ধান্তের বাইরে জাতীয় পার্টির প্রার্থী রাখার পর নানা গুঞ্জনের মধ্যে গত ১২ ডিসেম্বর চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর গিয়েছিলেন এরশাদ। ১৫ দিন পর ভোটের তিন দিন আগে বুধবার রাতে দেশে ফেরেন তিনি।

বৃহস্পতিবার বারিধারায় নিজের বাড়িতে সংবাদ সম্মেলনে এসে এরশাদ বলেন, মহাজোটের সমর্থনে জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেবেন।

তবে যেখানে জয়ের সম্ভাবনা আছে, সেখানে প্রত্যাহার করবেন না জানালেও এরশাদ একই সঙ্গে বলেন, “মহাজোট থেকে যে নির্দেশনা দেওয়া হবে, তাই মেনে নিতে হবে।”

সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সংশয়ী হলেও এরশাদের কোনো উদ্বেগ নেই।

তিনি বলেন, “সন্তুষ্টির মধ্য থেকে নির্বাচন শেষ হবে।”

নির্বাচনকালীন সহিংসতা নিয়ে এরশাদ বলেন, “এটা তো বাংলাদেশের রীতি। প্রতি নির্বাচনে সহিংসতা হয়। মানুষ হত্যা করা হয়। এটা বরাবর হয়ে আসছে।”

সবার সমান সুযোগ নিয়ে বিএনপির অভিযোগের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এসব প্রশ্নের উত্তর আমি দিতে পারব না।”

পুলিশের ভূমিকা নিয়েও নিরব থাকেন এরশাদ।