সিইসির সঙ্গে ‘মস্তানি’ করে এসেছেন কামাল: এইচ টি ইমাম

ভোটের চার দিন আগে কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের সিইসির সঙ্গে ‘অসৌজন্যমূলক আচরণের’ সমালোচনা করেছেন আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো চেয়ারম্যান এইচ টি ইমাম।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Dec 2018, 01:38 PM
Updated : 25 Dec 2018, 01:38 PM

মঙ্গলবার ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে জাতীয় নির্বাচন উপলক্ষে দলের মিডিয়া উপ-কমিটির এক সভা শেষে এদিন নির্বাচন ভবনের ঘটনা সাংবাদিকদের বলেন তিনি।

কামালের নেতৃত্বে বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের নেতারা দুপুরে নির্বাচন ভবনে যাওয়ার পর সিইসির সভাকক্ষে বৈঠকে বসেন। দেড় ঘণ্টা বৈঠকের পর আলোচনা শেষ না করেই বেরিয়ে আসেন তারা। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সিইসি তাদের কোনো অভিযোগ কানে তোলেননি।

বৈঠকে ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের সঙ্গে থাকা জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, সিইসি ও কামাল হোসেনের সঙ্গে ‘উচ্চবাচ্য’ হয়।

বিকালে এইচ টি ইমামকে পেয়ে সাংবাদিকদের সেনা মোতায়েন নিয়ে কামালের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি দুপুরে নির্বাচন ভবনে সংঘটিত ঘটনাটি তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, “আজকে যে গেছিলেন, আমি তার থেকে কিছু কিছু তথ্য পেয়েছি। বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের খুব শক্তিশালী দল একটি গিয়েছিল। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর থেকে মঈন খান, নজরুল ইসলাম সবাই গিয়েছিলেন।

“সভা তারা বয়কট করেননি, এই তথ্যটাই দিতে চাই। বিষয়টা হইছে এই, কথা বলতে বলতে অভিযোগ করতে করতে এক পর্যায়ে ড. কামাল হোসেন ক্ষেপে গিয়ে নারায়ণগঞ্জের কোনো এক সাব ইন্সপেক্টর, নিম্নপদস্থ কর্মকর্তার সম্পর্কে যে ভাষায় কথা বলেছেন, তাকে বলেছেন ‘জানোয়ার’!

“সিইসি তাৎক্ষণিকভাবে এটির প্রতিবাদ করেছেন। বলেছেন, আপনি (কামাল) এই শব্দ কেন ব্যবহার করলেন, এরকমভাবে। আপনার মুখে শোভা পায় না।

“এরপরে যেটি ঘটেছে, ড. কামাল হোসেন টেবিল জোরে জোরে চাপড়িয়েছেন। আর খামোশের গল্প তো আছেই। তখন সিইসি এবং অন্যান্যরা বলেছেন, আমরা অপমানিত বোধ করছি, আপনারা না থাকলেই ভাল।”

“তারা বয়কট করেনি, তবে এটাও এক রকম মাস্তানি করেছে,” বলেন এইচ টি ইমাম। 

নির্বাচন ভবনে কামাল হোসেনসহ ঐক্যফ্রন্টের নেতারা

সাংবাদিকদের প্রথম প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের এই সদস্য বলেন, “আমি মনে করি, সশস্ত্র বাহিনী সম্পর্কে তাদের যে মনোভাব হল, তাদের হয়ে মানুষকে পেটালেই, অর্থাৎ ২০০১ সালে যেটি করেছিলেন, ওরকমভাবে করলে সেনাবাহিনী খুব ভাল। আর সেনাবাহিনী যদি নিরপেক্ষ থাকে, তাহলে খারাপ।”

নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য যে ১১টি সংস্থাকে অনুমতি দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে নয়টির অনুমতি বাতিলের দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ইমাম।

আরপিওর অনুচ্ছেদ ৯১ (সি) উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, রাজনৈতিক দল বা ব্যক্তির সাথে সম্পৃক্ত নয়, তাদেরকে পর্যবেক্ষক হিসেবে অনুমতি দেওয়া যাবে।

যে ৯টি সংস্থা নিয়ে তিনি আপত্তি তুলেছেন, সেগুলো হল ডেমোক্রেসি ওয়াচ, খান ফাউন্ডেশন, লাইট হাউস, বাংলাদেশ মানবাধিকার সমন্বয় পরিষদ, জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশন, নবলোক, কোস্ট ট্রাস্ট, শরীয়তপুর ডেভেলপমেন্ট, নোয়াখালী রুরাল ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি।

এই ৯টি সংস্থা ১৪০টি সংসদীয় আসনে মোট ৬৫৮৫ জন পর্যবেক্ষক পাঠাচ্ছে জানিয়ে ইমাম বলেন, “এদের প্রত্যেকেই বিএনপি-জামায়াতের সক্রিয় রাজনৈতিক কর্মী। নির্বাচন নিয়ে বিএনপি-জামায়াতের ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই এটি করা হয়েছে।”

বিদেশি পর্যবেক্ষক সংস্থা অ্যানফ্রেলের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা  বলেন, “আরপিও'র ৯১ সি অনুযায়ী এ সংস্থাটিও অনুমতি পাওয়ার যোগ্য নয়। এই সংস্থার বাংলাদেশ প্রতিনিধি হচ্ছে অধিকার। অধিকারের চেয়ারম্যান আদিলুর রহমান শুভ্র, যিনি সরাসরি বিএনপি-জামায়াতের রাজনীতির সাথে যুক্ত।”