সাজার রায়ের পর বিএনপি নেতা রফিকুল গ্রেপ্তার

দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলায় কারাদণ্ডের পর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য রফিকুল ইসলাম মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Nov 2018, 01:55 PM
Updated : 20 Nov 2018, 04:13 PM

মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকার আদালত রায় দেওয়ার সময় উপস্থিত ছিলেন না সাবেক এই মন্ত্রী; ফলে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল।  

সেই পরোয়ানায় সন্ধ্যায় রফিকুলকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের এডিসি মো. শাহজাহান।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তাকে ইষ্কাটনের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট ছিল।”

সম্পদের হিসাব না দেওয়ায় ব্যারিস্টার রফিকুলকে তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন ঢাকার ৬ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ গোলাম মাহবুব।

১৪ বছর আগের এ মামলার রায়ে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়ার পাশাপাশি রফিকুলকে আদালত ৫০ হাজার টাকা জরিমানা,  অনাদায়ে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম করাদণ্ড দেওয়া হয়।

মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০০১ সালের ৭ এপ্রিল তৎকালীন দুর্নীতি দমন ব্যুরো সম্পদের হিসাব বিবরণী জমা দিতে রফিকুল ইসলাম মিয়াকে নোটিস দিয়েছিল।

কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তিনি হিসাব না দেওয়ায় ব্যুরো কর্মকর্তা  সৈয়দ  লিয়াকত হোসেন ২০০৪ সালের ১৫ জানুয়ারি রফিকুলের বিরুদ্ধে ঢাকার উত্তরা থানায় মামলা করেন।

তদন্ত শেষে ওই বছরের ৩০ নভেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দেন ওই কর্মকর্তা। আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে ২০১৭ সালের ১৪ নভেম্বর বিচার আদেশ দেন।

খালেদা জিয়ার ১৯৯১-৯৬ সালের সরকারে পূর্তমন্ত্রী ছিলেন রফিকুল ইসলাম মিয়া; পরে বেশ কিছুদিন নিষ্ক্রিয় ছিলেন তিনি। ২০০৭ সালে জরুরি অবস্থা জারির পর ফের বিএনপিতে সক্রিয় হন তিনি।

কুমিল্লার সাবেক সংসদ সদস্য রফিকুল ২০০৮ সালের নির্বাচনে তিনি ঢাকার মিরপুরের আসন থেকে ধানের শীষ প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন।

সাজা সরকারের নির্দেশে: রিজভী

রফিকুল ইসলাম মিয়ার সাজা ‘সরকারের নির্দেশে’ হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।

মঙ্গলবার রাতে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, “এটি কোনো মামলা নয়। এটি একটি নোটিস দেওয়া হয়েছিলো তার সম্পত্তির বিবরণী জমা দেওয়ার জন্য; তার যে বাসার ঠিকানায় চিঠি দেওয়া হয়েছিল, সেই বাসায় তিনি থাকেন না।

“সরকারের নির্দেশমতো এই সাজা দেওয়া হয়েছে। একজন নির্দোষ ব্যক্তিকে সাজা দেওয়া হয়েছে সরকারের ইচ্ছা পূরণ করবার জন্য। এর বাইরে অন্য কিছু নয়।”

রফিকুলের মুক্তি দাবি করে রিজভী বলেন, “ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া একজন সিনিয়র আইনজীবী। তিনি গুরুতর  অসুস্থ। নানা ব্যধিতে আক্রান্ত। তিনি খুব সীমিতভাবে চলাফেরা করেন। এমতাবস্থায় তাকে সাজা দিয়ে কারাগারে আটক রাখা সরকারের কুৎসিত মনেরই বহিঃপ্রকাশ।

“ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া আদালতে কোনোদিনই অনুপস্থিত থাকেননি। তিনি একজন আইন মান্যকারী ব্যক্তি। তিনি আদালতের কাছে এক সাপ্তাহের সময় চেয়েছিলেন। এরপরে ২৪ ঘণ্টা সময় চেয়েছিলেন শুধু আজকের দিনটা। সেটাও দেওয়া হয়নি। এটাতে ন্যায়বিচার হয়নি।”

নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনে রফিকুলের স্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সাহিদা রফিকও ছিলেন।