নির্বাচন আর পেছানোতে ‘সায় নেই’ আওয়ামী লীগের

বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের দাবির প্রেক্ষিতে নির্বাচনের তারিখ সাত দিন পিছিয়ে দেওয়ার পরও বিএনপির ভোটগ্রহণ আরও পেছানোর যে দাবি তুলেছে তাতে আওয়ামী লীগের সায় নেই বলে জানিয়েছেন তোফায়েল আহমেদ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Nov 2018, 06:02 PM
Updated : 15 Nov 2018, 06:12 PM

বৃহস্পতিবার রাজধানীর কুড়িলে বসুন্ধরা কনভেনশন সিটিতে পোশাকশিল্প সংশ্লিষ্ট সামগ্রী ও মেশিনারিজ নিয়ে আয়োজিত এক প্রদর্শনীর উদ্বোধন করে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, তবে বিএনপির দাবির বিষয়ে নির্বাচন কমিশনই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। 

বাণিজ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য তোফায়েল বলেন, “তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচন কমিশন একবার ভোটগ্রহণের তারিখ পিছিয়েছে। এখন বিএনপি আবার নির্বাচন পেছানোর বায়না ধরেছে।”

তাদের এই দাবি ‘বাস্তবসম্মত নয়’ বলে মনে করেন তোফায়েল।  

“কারণ কোনো কোনা নির্বাচনী এলাকায় গোলযোগ হতে পারে, ভোট বন্ধ হতে পারে। সেই নির্বাচন তো করতে হবে। সেই জন্য নির্বাচন কমিশন হয়ত সিদ্ধান্ত নেবে। কিন্তু আমাদের দলের সিদ্ধান্ত হচ্ছে, আর না।”

তফসিল ঘোষণার চার দিনের মাথায় সোমবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে নির্বাচন কমিশনের ইভিএম প্রদর্শনীতে ৩০ ডিসেম্বর ভোটগ্রহণ করা হবে জানিয়ে ঘোষণা আসে সিইসির কাছ থেকে।

সে সময় ভোট সাতদিন পেছানোর এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে ইসিকে ধন্যবাদ জানান সাবেক প্রেসিডেন্ট এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী।

অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবং চলতি সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি থেকে বলা হয়, ইসির পুনঃতফসিলে কোনো সমস্যা দেখছে না তারা।

তবে নির্বাচন কমিশন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এক সপ্তাহ পেছানোর ঘোষণার দিলেও ভোট এক মাস পেছানোর দাবিতে বিএনপি এখনো অনড় রয়েছে।

‘ব্যবসাবান্ধব নীতিতে প্রবৃদ্ধি বেড়েছে’

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের ব্যবসাবান্ধব নীতির কারণে দেশের শিল্প-কারখানার সম্প্রসারণ ও রপ্তানি প্রবৃদ্ধি আশানুরূপভাবে বেড়েছে বলে মন্তব্য করেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল।

তিনি বলেন, “১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর কাগজের মণ্ড আমদানির ওপর শূন্য ডিউটি করে দিয়েছিলাম। সে কারণে আজ বাংলাদেশ কাগজরপ্তানিকারক দেশ হয়েছে।”

বর্তমানে কাগজ রপ্তানিতে ১০ শতাংশ নগদ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

মন্ত্রী বলেন, “সিমেন্টেরও একই অবস্থা। ৯৬ সালে মাত্র ৯ লাখ টন সিমেন্ট উৎপাদন হত। পরে আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে ফিনিস সিমেন্ট আমদানির ওপর ডিউটি বাড়িয়ে দিলাম, ক্লিংকারের ওপর আমদানি শুল্ক কমিয়ে দিলাম। সে কারণে ২০০১ সালে সিমেন্ট উৎপাদন বেড়ে হলো ৭০ লাখ টন। আর এই মুহূর্তে সিমেন্টের উৎপাদন হচ্ছে তিন কোটি টন। উৎপাদন সক্ষমতা আছে ছয় কোটি টন।

বিজিএমইএ নেতা ফারুক হাসান বলেন, “দেশে যেভাবে উন্নয়ন হচ্ছে তাতে আশা করি, এই স্থিতিশীলতা থাকলে উন্নয়নের ধারা ধরে রাখা যাবে। এই মুহূর্তে বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় পোশাক রপ্তানিকারক দেশ। আমাদের যে জনশক্তি আছে তাদেরকে কাজে লাগিয়ে ভবিষ্যতে এই খাতকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবো বলে আশা করি।”

মেলা ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান রেডকার্পেট৩৬৫ এর আয়োজনে গার্মেন্ট অ্যান্ড টেক্সটাইল, প্রিন্টিং-প্যাকেজিং মেশিনারি, ডাইস-পিগম্যান্ট-কেমিক্যাল, ইয়ার্ন ও ফেব্রিক্স এই চার ক্যাটাগরিতে শুরু হয়েছে চার দিনব্যাপী প্রদর্শনী।

বস্ত্র ও পোশাক শিল্প সংশ্লিষ্ট সর্বশেষ প্রযুক্তিপণ্য নিয়ে এ প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছে এশিয়া, ইউরোপ, আমেরিকার ১২টি দেশের দেশ-বিদেশের বস্ত্র ও পোশাক প্রস্তুতকারক, রপ্তানিকারক এবং সংশ্লিষ্টরা।

১৮ নভেম্বর পর্যন্ত সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা এ প্রদর্শনী সবার জন্য উন্মুক্ত।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিজিএমইএর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ফারুক হাসান ছাড়াও বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোটার্স এসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) প্রথম সহ-সভাপতি মনসুর আহমেদসহ অন্যান্য শিল্পোদ্যোক্তারা বক্তব্য রাখেন।