বৃহস্পতিবার দুপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬১১ ও ৬১২ নম্বর কেবিন সাফ করতে করতে কথাগুলো বললেন পরিচ্ছন্নতাকর্মী নাসিমা।
এর মধ্যে ৬১১ নম্বর কেবিনে গত এক মাস এক দিন চিকিৎসাধীন ছিলেন কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। পাশের ৬১২ নম্বর কক্ষটি মূলত তার মালপত্র রাখার কাজে ব্যবহৃত হত।
দুটি দুর্নীতি মামলায় ১৭ বছরের সাজা নিয়ে গত ফেব্রুয়ারি থেকে অন্তরীণ এই সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে বৃহস্পতিবার ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে কারা কর্তৃপক্ষ পাশের ৬১২ নম্বর কেবিনটিও খালেদা জিয়ার জন্য সংরক্ষণ করে।
৭৩ বছর বয়সী এই রাজনীতিবিদের শারীরিক অবস্থা এখন ‘যথেষ্ট স্থিতিশীল’ বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল্লাহ আল হারুন।
খালেদা জিয়াকে যেখানে রাখা হয়েছিল, সেই ৬১১ নম্বর কেবিনের প্রবেশ মুখে ছোট দুটি সোফা ও সাইড টেবিল নিয়ে বসার জায়গা সাজানো ছিল। এরপর মূল কক্ষের একদিকে দেখা যায় কাঠের খাট। কক্ষের সঙ্গেই বাথরুম এবং আলাদা ড্রেসিং রুম। ড্রেসিং রুমে একটি টেবিল ও চেয়ারও দেখা যায়।
পরিচ্ছন্নতা কর্মী নাসিমা বলেন, “প্রত্যেক দিন দুই বার এই রুমে ঝাড়ু দিতে আসতাম। খুব কড়াকড়ি থাকত। সকালে যখন আসতাম ম্যাডাম পত্রিকা পড়তেন। এক মনে থাকতেন, কোনো কথা বলতেন না।”
পাশের ৬১২ নম্বর কক্ষে খালেদা জিয়ার মালামাল রাখার পাশাপাশি কারা কর্তৃপক্ষের লোকজনও থাকতেন বলে জানান তিনি।
ষষ্ঠ তলার কেবিন ব্লকের প্রবেশ দ্বারেই একটি আর্চওয়ে বসানো দেখা যায়। ‘ভিআইপি’ বন্দি ছিলেন বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একজন সদস্য সব সময় এখানে সাধারণ পোশাকে দায়িত্বে থাকতেন। এই ব্লকে ঢুকতে তিন স্তরের নিরাপত্তা বেষ্টনী পেরিয়ে আসতে হত।
আর খালেদা জিয়াকে বেলা পৌনে ১২টার দিকে কারাগারে নেওয়ার পর সেখানে জজ আদালতের বিশেষ এজলাসে নাইকো দুর্নীতি মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানিতে হাজির করা হয়।
শুনানি শেষে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে যাওয়ার হয় কারাগারের পুরনো ‘ডে কেয়ার সেন্টার’ ভবনের দোতলায় তার জন্য নির্ধারিত কারাকক্ষে, যেখানে তিনি হাসপাতালে যাওয়ার আগেও ছিলেন। পরিত্যক্ত ওই কারাগারে খালেদা জিয়াই একমাত্র বন্দি।