শনিবার বিকালে রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয় পার্টি (জেপি-মঞ্জু) আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের আলোচনায় এসে তিনি একথা বলেন।
পঁচাত্তরের ১৫ অগাস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর ২ নভেম্বর জেলখানায় হত্যা করা হয় জাতীয় চার নেতাকে।
বিএনপিকে পঁচাত্তরের খুনিদের ‘পৃষ্ঠপোষক’ আখ্যায়িত করে সেই চার নেতার একজন ক্যাপ্টেন মনসুর আলীর ছেলে নাসিম বলেন, “সেই খুনিদের পৃষ্ঠপোষকতাই হল বিএনপির দর্শন, তাদের রাজনৈতিক শক্তি। আজকে যখন বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করা হয়, তখন এরা মনে করে ওদের পরাজয় হল।”
মোহাম্মদ নাসিম বলেন, বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার প্রক্রিয়া থামাতে না পারার ‘ব্যর্থতা’ থেকে বিএনপি-জামাত জোট এখন ‘শেখ হাসিনা হটাও আন্দোলনে’ নেমেছে।
“আসন্ন নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ। এই নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপির এখন আরো কোনো এজেন্ডা নাই। ওদের এখন একটাই উদ্দেশ্য, শেখ হাসিনাকে হটাও, ১৪ দলকে ঠেকাও।”
আসন্ন নির্বাচনে বিএনপির ‘চক্রান্ত’ সফল হলে আওয়ামী লীগের শাসনামলের অর্জন ‘বিসর্জনে যাবে’ বলে ১৪ দলের নেতাকর্মীদের হুঁশিয়ার করে দেন নাসিম।
নাসিম বলেন, “যতবার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়েছে, ততবার আমরা বিজয়ী হয়েছি। চক্রান্তের নির্বাচন হলে আমরা হারব। বিএনপি জানে, চক্রান্ত না করলে আওয়ামী লীগকে হারানো যাবে না। সামনে নির্বাচন, ওরা চাইছে সবকিছু ওদের মতো করে হতে হবে।”
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা ন্যস্ত হলে আওয়ামী লীগকে পরাজিত করতে আবারও ‘চক্রান্ত’ হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন নাসিম।
তিনি বলেন, “জেনেশুনে কেন চক্রান্তের পথে পা বাড়াব আমরা? জেনেশুনে কেন সব অর্জন ব্যর্থ হতে দেব?”
নিরাপদ সড়কের দাবিতে ছাত্র আন্দোলনের ‘ফায়দা লুটতে’ চাওয়া বিএনপি এই আন্দোলনকে একটি ‘রক্তাক্ত’ সংঘাতে রূপ দিতে চেয়েছিল বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
বিএনপিকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে নাসিম বলেন, “ আসছে তিন মাস নির্বাচনের সমস্ত কিছু হবে নির্বাচন কমিশনের তত্ত্বাবধানে। প্রশাসন সেভাবেই কাজ করবে। এখানে আমাদের কিছু করার নেই। তবে বিএনপির ভয় কেন?
“২০১৪ সালে পালিয়ে গেছিলেন। এখন পালালে বিএনপিকে আর খুঁজে পাওয়া যাবে না। মাঠে আসুন, আমরা মাঠে খেলেই জিততে চাই।”
জেপির চেয়ারম্যান পানিসম্পদমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর সভাপতিত্বে এই সভায় অনুষ্ঠানে এসেছিলেন জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরিন হক, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, গণআজাদী লীগের সভাপতি এস কে শিকদার, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের আহ্বায়ক রেজাউর রশিদ খান, ন্যাপের (মোজাফফর) ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইসমাঈল হোসেন, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের যুগ্ম আহ্বায়ক অসিত বরণ রায়।
বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের শোক সভা
এর আগে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন (বিএমএ) আয়েজিত আলোচনা সভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, নিরাপদ সড়কের জন্য যে আন্দোলন হয়েছে সেখানে শিক্ষার্থীদের যথেষ্ট নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে। তারা অনেক কিছু দেখিয়ে দিয়েছে।
“আমার গাড়ীর কাগজপত্র ঠিক আছে কিনা, চালকের লাইসেন্স আছে কিনা। আমরা যে পদেরই হইনা কেনো তা দেখার দায়িত্ব আমাদের বলেন তিনি।”
বিএমএ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এই সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএমএ সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন।