সচিবকে দিয়ে ইসি চালাচ্ছে সরকার: ফখরুল

সচিবকে দিয়ে সরকার নির্বাচন কমিশনকে চালাচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছে বিএনপি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 July 2018, 12:28 PM
Updated : 10 July 2018, 12:28 PM

“নির্বাচন কমিশন তৈরি করেছেন একটা। এটা তৈরি করার চেয়ে না করা ভালো ছিল,” বলেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

জাতীয় প্রেস ক্লাবে মঙ্গলবার ‘৯০ এর ডাকসু ও সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য’র উদ্যোগে এক আলোচনা সভায় একথা বলেন তিনি।

অক্টোবরের মধ্যে ভোটার তালিকা সিডি প্রস্তুত ও মুদ্রণ শেষে উপযুক্ত সময়ে একাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিলের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে মঙ্গলবারই জানান ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ।

ফখরুল বলেন, “একজন সচিবকে দিয়ে আপনারা (সরকার) নির্বাচন কমিশন চালান; হেলালুদ্দীন সাহেব। আমি সরি, সাধারণত নাম বলি না। উনি সচিবালয় থেকে এসেছেন এখানে (নির্বাচন কমিশন), বিশেষভাবে তাকে সচিব নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

“তার কাজ হচ্ছে.. এগুলো শুনেছি আমরা, এগুলো শোনা কথা, সত্য কি মিথ্যা, তা বলতে পারবো না। কিন্তু যে কথা শোনা যায়, তিনি নির্বাচন কমিশনে অফিস করেন ৪টা পর্যন্ত। তারপর চলে যান কোনো একটা বিশেষ দলের বিশেষ কার্যালয়ে। সেখানে তাদের দলের নির্বাচনের সমস্ত পরিকল্পনা তৈরি হয়। যেটার প্রধান হচ্ছেন এইচ টি ইমাম সাহেব।”

ইসির স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছে না বলে আগে থেকে অভিযোগ করে আসছে বিএনপি। জবাবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারা বলে আসছেন, ইসির কাজে সরকার কোনো হস্তক্ষেপ করছে না।

কে এম নূরুল হুদা নেতৃত্বাধীন বর্তমান ইসিকে নিয়ে ফখরুল বলেন, “এটার না আছে কোনো ব্যক্তিত্ব, না আছে কোনো শক্তি, না আছে কোনো যোগ্যতা। একটা নির্বাচন এখন পর্যন্ত সুষ্ঠু করতে পারে নাই। প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে গেলে বলে উল্টো কথা।”

কারাবন্দি খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা ও মুক্তি এবং তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে এই আলোচনা সভায় ফখরুল বলেন, দলীয় চেয়ারপারসনকে কারাগারে রেখে সংসদ নির্বাচনে যাবেন না তারা।

“সবার আগে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে এবং মামলাগুলো প্রত্যাহার করতে হবে। নির্বাচনের জন্য পরিবেশ তৈরি করতে হবে, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে হবে, সংসদ ভেঙে দিতে হবে, নির্বাচনের সময়ে নিরপেক্ষ সরকার দিতে হবে, সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে।”

অস্ত্রের জোরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় টিকে আছে দাবি করে ফখরুল বলেন, “একদিনের জন্য ক্ষমতা ছেড়ে দেখেন না, দেশের অবস্থা কী হয়?”

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভোস্ট কমিটির সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে সাবেক ছাত্রনেতা ফখরুল বলেন, “যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সব সময় বাংলাদেশকে, দেশের মানুষকে পথ দেখিয়েছে, সেই বিশ্ববিদ্যালয় আজকে বেড়ি পরিয়ে দিচ্ছে, মুখে কুলুপ এঁটে  দিচ্ছে, কেউ কথা কইতে পারবে না।”

কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, “এখন যারা কোটা আন্দোলন করছে, তারা প্রাণের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। একজনকে খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছে না, আরেকজন ১০ দিনের রিমান্ডে। আরেকজনের দুই পা ভেঙে দিয়েছে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে।”

ডাকসুর সাবেক ভিপি আমানউল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে এবং ডাকসুর সাবেক এজিএস নাজিমউদ্দিন আলমের পরিচালনায় আলোচনা সভায় সাবেক ছাত্রনেতা শামসুজ্জামান দুদু, হাবিবুর রহমান হাবিব, ফজলুল হক মিলন, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, খোন্দকার লুৎফর রহমান, সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, আসাদুর রহমান খান, হাবিবুল ইসলাম হাবিব, রফিক শিকদার বক্তব্য রাখেন।