এরশাদকে হুদার চ্যালেঞ্জ

ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট-গুলশান আসনে এইচ এম এরশাদ ভোটে দাঁড়ালে তাকে হারতে হবে বলে সতর্ক করেছেন তৃণমূল বিএনপির চেয়ারম্যান নাজমুল হুদা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 April 2018, 03:03 PM
Updated : 17 April 2018, 03:03 PM

বিএনপি থেকে বেরিয়ে এখন আওয়ামী লীগের কাছে আসা হুদা মঙ্গলবার ঢাকার সেগুন বাগিচার স্বাধীনতা হলে এক আলোচনা সভায় বক্তব্যে রাজধানীর ওই আসনে নিজের ইচ্ছার কথা জানিয়ে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানকে এই সতর্কবার্তা দেন।

সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদকে তার জেলা রংপুর থেকে নির্বাচন করার পরামর্শ দিয়ে হুদা বলেছেন, “গুলশান ছাড়েন, গুলশান এসে কোনো লাভ নেই।”

আওয়ামী লীগের মহাজোটে থেকে ২০০৮ সালের নির্বাচনে অংশ নেওয়া এরশাদ রংপুরের পাশাপাশি ঢাকার ওই আসনটিতেও ২০১৪ সালের নির্বাচনে প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন।

নানা নাটকের পর ওই নির্বাচনে অংশ নেওয়া এরশাদের ঢাকার আসনে মনোনয়নপত্র বাতিল হয়। তবে রংপুর থেকে ভোটে জেতেন তিনি।

নাজমুল হুদা বিএনপি ছাড়ার পর যাকে নিয়ে নতুন দল বিএনএফ গঠন করেছিলেন, সেই দলের নেতা আবুল কালাম আজাদ ২০১৪ সালের নির্বাচনে সংসদ সদস্য হন।

২০১৪ সালের নির্বাচন বিএনপি বর্জন করলেও এবারের নির্বাচন না করার কোনো ঘোষণা এখনও দেয়নি তারা। আওয়ামী লীগের সঙ্গে থেকে, না কি আলাদাভাবে নির্বাচন করবেন, বিএনপির অবস্থান দেখে সিদ্ধান্ত নেবেন বলে ইতোমধ্যে জানিয়েছেন এরশাদ।

নাজমুল হুদা যখন বিএনপিতে ছিলেন, তখন তিনি ঢাকার দোহার থেকে ভোট করতেন। ওই আসনে একাধিকবার জিতে মন্ত্রীও ছিলেন তিনি।

তবে বিএনপি ছাড়ার পর এখন দোহারে ভিত হারিয়ে আওয়ামী লীগের সমর্থন নিয়ে ক্যান্টনমেন্ট-গুলশান আসনে নজর তার। দৃশ্যতও ওই পথ নিষ্কণ্টক করতে এরশাদকে সরাতে চান তিনি।

নাজমুল হুদা (ফাইল ছবি)

আলোচনা সভায় হুদা বলেন, “গুলশান থেকে আপনি নমিনেশন কেন নিবেন? সেখানে আমি দাঁড়াব বলে? মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তো আমাকে বলেছেন, ‘ওখানে আপনি কাজ করেন’।

“আবার আপনি কেন এখানে আসেন, এখানে আপনার আসার কারণটা কী? ভাই রংপুরে যান, রংপুরের ২২টি সিট চেয়েছেন, ২২টিই পাবেন।”

গুলশানে দাঁড়ালে ভোট পাবেন না বলেও এরশাদকে বোঝানোর চেষ্টা করছেন হুদা।

“গুলশানের লোকেরা তো একটু শিক্ষিত, তারা তো বুঝে শুনে, আপনি যেভাবে বক্তব্য দেন, তারা আপনাকে ভোট দিবে না।

“আবার আমার আপনার কাছে পরাজিত হতে লজ্জা নেই। কিন্তু আপনি যদি আমার কাছে পরাজিত হন, চিন্তা করেন ব্যাপারটা কী হবে? কাজেই সময় থাকতে এখান থেকে গোটান, রংপুরে গিয়ে কাজ শুরু করেন।”

কখনও ভোটে হারেননি বলে যে কথা এরশাদ বলছেন, তার জবাবে হুদা বলেন, “ওই যে স্বৈরাচারের পতন হল, সেটা কি পরাজয় ছিল, না বিজয় ছিল? পরাজিত হননি, এই কথা কেন বলেন। গুলশানে দাঁড়ালে আপনি পরাজিত হবেন।”

সরকারের সমালোচনা করে এরশাদের সাম্প্রতিক বক্তব্যের পরও তাকে সঙ্গে রাখতে আওয়ামী লীগের তৎপর না হওয়ার পরামর্শ দেন হুদা।

মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে  জাতীয় গণতান্ত্রিক লীগের আয়োজনে সংগঠনটির সভাপতি এম এ জলিলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় জাতীয় পার্টির (জেপি) নির্বাহী সম্পাদক সাদেক সিদ্দিকী, বঙ্গবন্ধু গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. গনি মিয়া বাবুল, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক আন্দোলনের চেয়ারম্যান এআরএম জাফরুল্লাহ চৌধুরীও বক্তব্য দেন।