খালেদাকে মুক্ত করতে চাই কোটার মতো আন্দোলন: মওদুদ

কোটা সংস্কার নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে ‘আন্দোলনের বিজয়’ হিসেবে দেখছেন বিএনপি নেতা মওদুদ আহমদ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 April 2018, 01:40 PM
Updated : 16 April 2018, 08:21 AM

কারাবন্দি খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে এরকম আন্দোলন গড়ে তুলতে দলের নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

জাতীয় সংসদে বুধবার বিকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের পরপরই এক আালোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানান।

সরকারি চাকরিতে নিয়োগে কোটা সংস্কারের দাবিতে গত কয়েকদিন ধরে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে বিরক্তি প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী সংসদে বলেন, কোনো কোটাই থাকার দরকার নেই।

মওদুদ বলেন, “এখনই খবরে দেখলাম, প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন যে বাংলাদেশে কোনো কোটা ব্যবস্থা থাকবে না। উনি শেষ পর্যন্ত বুঝতে পেরেছেন যে, এই কোটা আন্দোলন কত বেগবান হয়েছে। তারা বুঝতে পেরেছেন যে এই আন্দোলন যদি চলে, তাহলে তো তাদের ক্ষমতায় থাকাটাই কঠিন হবে।

“আমি বলতে চাই,  জনগণের বিজয় হয়েছে, সরকারের পরাজয় হয়েছে।”

কোটা সংস্কারের দাবির আন্দোলন চলছে সারাদেশে: ছবিটি রাজশাহীর

এই আন্দোলনের প্রসঙ্গ ধরে মওদুদ দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, “এভাবেই আগামীতে আমাদের দাবি প্রতিষ্ঠা করতে হবে। গণআন্দোলনের মাধ্যমে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। নির্দলীয় সরকার ব্যবস্থা কায়েম করতে হবে এবং আগামীতে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে সরকারের পরিবর্তন ঘটাতে হবে।”

কোটা সংস্কারের আন্দোলনের ‘অনেক গভীর তাৎপর্য’ রয়েছে বলে মনে করেন মওদুদ।

“এই সরকারের বিরুদ্ধে সারাদেশে মানুষ ও ছাত্র সমাজের পুঞ্জিভূত ক্ষোভের প্রতিফলন ঘটেছে। শুধু কোটা নিয়ে নয়, তাদের (শিক্ষার্থী) মনে অনেক ক্ষোভ। তারা তো দেখছে- দেশ কীভাবে চলছে, দেশে কী ধরনের গণতন্ত্র আছে।”

মতিয়ার পদত্যাগ দাবি

কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সমালোচনাকারী কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীর পদত্যাগ দাবি করেছেন সাবেক মন্ত্রী মওদুদ।

তিনি বলেন, “এই মতিয়া চৌধুরী, আমার মনে হয় তার উচিৎ হবে পদত্যাগ করা। তা নাহলে সারা জাতির কাছে নিঃশর্তভাবে ক্ষমা চাওয়া। কারণ এই ছাত্রসমাজ যারা আন্দোলন করছেন, তাদেরকে রাজাকার বলে আমরা মনে হয় উনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন।”

সোমবার সংসদে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমালোচনার এক পর্যায়ে মতিয়া বলেছিলেন, “মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানেরা সুযোগ পাবে না, রাজাকারের বাচ্চারা সুযোগ পাবে? তাদের জন্য মুক্তিযোদ্ধা কোটা সংকুচিত হবে?”

মওদুদ বলেন, “এখন আওয়ামী লীগ সরকারের অবস্থা হয়েছে ওই রকম। আওয়ামী লীগ ও তার সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করলেই বা তার  সমালোচনা করলেই রাজাকার!”

আন্দোলনের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাড়িতে হামলার মধ্যে আওয়ামী লীগ নেতারা যে ষড়যন্ত্র খুঁজছেন, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বিএনপির এই নেতা।

এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “পাকিস্তান আমলে আমরা যখন ছাত্র আন্দোলন করতাম, আমাদের সবাইকে পাকিস্তান সরকার ও প্রশাসন বলত, ‘এরা কমিউনিস্ট’। আমাকে পর্যন্ত কমিউনিস্ট বলত! কেন কমিউনিস্ট? সরকারবিরোধী হলেই কমিউনিস্ট।”

জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ লেবার পার্টি (ইরান)  ঢাকা উত্তর  শাখার  উদ্যোগে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন মওদুদ।

দলটির ঢাকা মহানগর কমিটির সভাপতি  এস এম ইউসুফের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব, বিশেষ সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মো. ফরিদউদ্দিন, সহসভাপতি ফারুক রহমান, আনোয়ার হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক হুমায়ুন কবীর, মেজবাউল ইসলাম, সালমান খান বাদশা, আরিফ সরকার বক্তব্য রাখেন।