শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোট আয়োজিত ‘বাংলাদেশের রাজনীতি ও আইনের শাসন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
আমীর খসরু বলেন, “পেশাজীবীদের ভূমিকা রাজনীতিতে অনেক বেশি, এই উপমহাদেশের রাজনীতি পেশাজীবীদের দিকে চলে যাচ্ছে। পেশাজীবীদের উপর আমাদের নির্ভরতা বেড়ে গেছে, শিক্ষকদের ভূমিকা আরও বাড়তে থাকবে।”
সুপ্রিম কোর্ট বারের নির্বাচনে বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের বড় বিজয়ের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “সুপ্রিম কোর্ট বারের নির্বাচনের ফলাফল একটা মেসেজ ।এটা অনেক বড় মেসেজ, আওয়ামী লীগের প্রধানমন্ত্রীর প্রভাবশালীদের প্রচেষ্টার পরও তাদের পরাজয় হয়েছে, গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার আন্দোলন ফিরিয়ে আনার সম্ভবনা রয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ যে জায়গায় সুযোগ পাচ্ছে, তাদের মনের প্রতিফলন ঘটাচ্ছে।”
সম্প্রতি ওই নির্বাচনে সভাপতি, সম্পাদকসহ ১০টি পদে জয় পেয়ে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির কর্তৃত্ব ধরে রাখে বিএনপি-জামায়াত সমর্থকরা।
বর্তমানে দেশে আইনের শাসন নেই অভিযোগ করে খসরু বলেন, “বিরোধী দলকে ধ্বংস করতে আইন প্রয়োগ করছে, ক্ষমতা দখলে আইনের প্রয়োগ করছে। সরকার দলীয়দের এক ধরনের বিচার, আর সাধারণ মানুষের জন্য আরেক ধরনের বিচার হচ্ছে।”
‘লুটপাটকারীরাই’ ব্যাংকের নগদ-জমার হার (সিআরআর) এবং রেপো সুদহার কমাতে বাংলাদেশ ব্যাংকে বাধ্য করেছে বলে মন্তব্য করেন এই বিএনপি নেতা।
তিনি বলেন, “ব্যাংকে যারা আমানত রাখছেন, তারা ব্যাংকে টাকা ওঠাতে গেলে বলছে টাকা নেই। বেশিরভাগ ব্যাংক দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে বড় বড় লুটপাটের মাধ্যমে।”
খসরু অভিযোগ করেন, ব্যাংলাদেশ ব্যাংক নিয়ম মাফিক সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না।
“লাখ লাখ কোটি টাকা লুটপাট হয়ে যাচ্ছে, বিদেশে নিয়ে যাচ্ছে, বিদেশে দামি সম্পত্তি ক্রয় করছে, সব টাকা বাইরে চলে যাচ্ছে। কিন্তু এদের কোনো বিচার হচ্ছে না।”
সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন বলেন, “দেশ আজ কী অবস্থায় আছে আপনারা সবাই জানেন। মানুষের ভরসার জায়গা হচ্ছে সর্বোচ্চ আদালত, কিন্তু আমাদের নেত্রীকে দেশের সর্বোচ্চ আদালত থেকেও মুক্ত করাতে পারলাম না।
“তবে অচিরেই খালেদা জিয়া মুক্ত হবে। জনগণের আন্দোলনের কাছে মাথা নিচু করতে হয়- এটা আওয়ামী লীগকে মনে রাখতে হবে।”
আওয়ামী লীগ নির্বাচনে বিএনপির মুখোমুখি হতে চায় না মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্ট বারের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, “সামনে নির্বাচন দেখেই খালেদা জিয়াকে আটকে রাখা হয়েছে। সুষ্ঠ নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসবে না, তাই মিথ্যা মামলা করে নির্বাচনী বৈতরণী পার করতে চাইছে।”
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং ঢাকা বারের নব নির্বাচিত সভাপতি গোলাম মোস্তফা খানকে সংবর্ধনা দিতে শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোটের পক্ষ থেকে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোটের সভাপতি মো. সেলিম ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদিন মেজবাহ বক্তব্য দেন।