‘উনাদের মিটিং-মিছিল হালাল, আমরা করলে হারাম’

সভা-সমাবেশ করার অনুমতি না পাওয়ায় সরকারের সমালোচনা করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 March 2018, 10:24 AM
Updated : 15 March 2018, 10:48 AM

জাতীয় প্রেস ক্লাবে বৃহস্পতিবার এক আলোচনা সভায় তিনি সরকারকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে উনার ও উনাদের আপনজনরা জনসভা করলে কোনো দোষ হবে না। কিন্তু বিএনপি করতে চাইলে সেটা দেওয়া হবে না। কারণটা কী? একটাই কারণ।

“বেগম খালেদা জিয়াকে জেলে রেখেও আপনারা ভরসা পাইতেছেন না। মনে করতেছেন আপনারা যে সভা করছেন, বিএনপির সভা হয়ত তার চেয়েও বড় হয়ে যাবে। তখন মানুষ বলবে- এই সর্বনাশ।”  

গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়া ৫ বছরের দণ্ড নিয়ে কারাগারে যাওয়ার পর বিএনপি তার মুক্তির দাবিতে গত ২২ ফেব্রুয়ারি এবং ১২ মার্চ- দুই দফায় সোহরাওয়ার্দীতে জনসভার জন্য পুলিশের কাছে অনুমতি চেয়ে ব্যর্থ হয়। এরপর একই স্থানে আগামী ১৯ মার্চ জনসভার নতুন তারিখ ঘোষণা করে দলটি।

দেশে আইনের দুই রকম প্রয়োগ হচ্ছে অভিযোগ করে নজরুল ইসলাম খান বলেন, “উনারা (সরকারি দল) যখন রাস্তা বন্ধ কইরা মিটিং-মিছিল করবেন ওইটা হালাল। আর আমরা ফুটপাতে দাঁড়াইয়া মিছিল-মিটিং করতে গেলেও হারাম। জলকামান থেকে পানি দেওয়া, পুলিশ দিয়ে পিটাইয়া দেওয়া।

“এসব গণতন্ত্র তো নয়ই, গণতন্ত্রের ‘গ’ ও না। এটা অন্য তন্ত্র হতে পারে, গণতন্ত্র না।”

দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, “পত্রিকায় দেখলাম, বাংলাদেশ মানবাধিকার বিষয়ে চার ধাপ নিচে নেমে গেছে। এমনিতেই ছিলাম বোধহয় ১১২/১১৪ , এখন ১১৫ তে এসেছি। মানে শেষের দিকে আরকি।

“ঢাকা শহর বিশ্বের নিকৃষ্টতম শহরের একটা। আজকে পত্রিকায় দেখলাম পরিবেশ আন্দোলন একটা রিপোর্ট করেছে যে, বাংলাদেশে পরিবেশ রক্ষা বিষয়ে কিছুই হচ্ছে না। উন্নয়ন হচ্ছে, পত্রিকায় বের হয়, বাংলাদেশে সড়ক বা সেতু নির্মাণে যে অর্থ খরচ হয় দুনিয়ার কোথাও এতো খরচ হয় না।

“এতো বেশি টাকা খরচ করে যে রাস্তা বা সেতু বানানো হচ্ছে এসব কি মাটি দিয়ে বানানো হচ্ছে, নাকী ইট-পাথর দিয়ে, নাকী অন্য কিছু দেওয়া হচ্ছে। সোনা-রুপা না দিলে তো এতো টাকা খরচ হওয়ার কথা না।” 

ক্ষমতাসীন দলের লোকজনের ব্যাংক ঋণ মওকুফেরও সমালোচনা করেন নজরুল ইসলাম খান।

“কোথায় যাচ্ছে এসব টাকা। শোনা যায় মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ডে সেকেন্ড হোম হচ্ছে, কানাডায় বেগমপাড়া হচ্ছে। সুইস ব্যাংকের অ্যাকাউন্টধারাদের জামানত বাড়ছে। এই যে শোনা যায় এই মানুষগুলো কারা?”

‘ঘুরে দাঁড়াও বাংলাদেশ’ নামক সংগঠনের উদ্যোগে বিএনপির সাবেক মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভা হয়।  

সংগঠনের সভাপতি কাদের সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এজেডএম জাহিদ হোসেন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, সহ-যুব বিষয়ক সম্পাদক মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, কেন্দ্রীয় নেতা ইসমাইল হোসেন বেঙ্গল, আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, ন্যাপের মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভুঁইয়া, এনডিপির প্রেসিডিয়াম সদস্য মনজুর হোসেন ঈসা প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।