মঙ্গলবার ঢাকার নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচির সমাপনী বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
ফখরুল বলেন, “আমাদের এই সংগ্রাম দেশনেত্রীকে মুক্ত করে নিয়ে আসবার লড়াই; এই লড়াই আমাদের নেতা-কর্মীদের মুক্ত করবার লড়াই। এই লড়াই বাংলাদেশের মানুষকে মুক্ত করবার লড়াই, গণতন্ত্রকে মুক্ত করবার লড়াই।
“আসুন এই অবস্থান কর্মসূচি থেকে আমরা শপথ নিই, আগামী দিনে সমস্ত কর্মসূচি সফল করে জনতার উত্তাল তরঙ্গের মধ্য দিয়ে আমরা দেশনেত্রীকে এই জেল থেকে মুক্ত করে নিয়ে আসবই। আসুন সেই লক্ষ্য আমরা আন্দোলনকে আরও বেগবান করি।”
জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠানোর প্রতিবাদে তাদের এই কর্মসূচি।
এর ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার নয়া পল্টনে অবস্থান কর্মসূচির পর বুধবার ঢাকাসহ সারাদেশে ৮ ঘণ্টার প্রতীকী অনশনে বসবে বিএনপি।
অবস্থান কর্মসূচিতে বিএনপির মহাসচিব বলেন, “দেশনেত্রীকে তারা কারাগারে নিয়ে মনে করেছে, বাংলাদেশের মানুষকে স্তব্ধ করা যাবে, বাংলাদেশের মানুষকে দমিয়ে রাখা যাবে। সেটা হবে না।”
ফখরুল অভিযোগ করেন, তাদের নেত্রীকে ‘মিথ্যা মামলায়’ কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাকে রাখা হয়েছে ‘পরিত্যক্ত’ কারাগারে, ২০০ বছরের পুরনো জীর্ণ এব ভবনে।
“আন্তর্জাতিক যে মানদণ্ড, আমাদের সংবিধানেও আছে- কখনো কোনো নাগরিককে সলিটারি কনফাইনমেন্টে পাঠানো যাবে না। আজকে দেশনেত্রীকে সম্পূর্ণ একা ওই পরিত্যক্ত কারাগারে পাঠিয়ে এই অবৈধ সরকার মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটিত করেছে। তাদের একদিন বিচার হবে।”
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, “খালেদা জিয়াকে ছাড়া আগামী নির্বাচন করতে দেয়া হবে না ইনশাল্লাহ। দেশনেত্রী কারাগারের বাইরে ছিলেন, তার যে জনপ্রিয়তা ছিল, আজ কারাগারে যাওয়ার পরে তিনি (খালেদা জিয়া) আরও শক্তিশালী হয়েছেন, জাতীয় নেতা থেকে আন্তর্জাতিক নেত্রী হয়েছেন।”
স্থায়ী কমিটির আরেক নেতা মওদুদ আহমদ বলেন, “এ সরকার প্রতিহিংসায় বিশ্বাস করে, আইনে বিশ্বাস করে না বলেই তারা জেলকোডে যে নিয়ম আছে, সব কিছুর বরখেলাপ করে খালেদা জিয়াকে নির্জন কারাবাসে পাঠিয়েছে। আমরা এর নিন্দা জানাই।”
মির্জা আব্বাস বলেন, খালেদা জিয়াকে কারাগারে আটক রেখে ক্ষমতাসীনরা দেশকে আবার ‘পরাধীন করার চক্রান্ত’ করছে।
‘শান্তিপূর্ণ আন্দোলন’ সারাদেশে ছড়িয়ে দিয়ে খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে মুক্ত করার প্রত্যয় জানান এই বিএনপি নেতা।
বেলা ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত এই অবস্থান কর্মসূচিতে ফকিরাপুল থেকে নাইটিঙ্গেল পর্যন্ত সড়কের একপাশে কয়েক হাজার বিএনপি নেতা-কর্মী অংশ নেন। বিএনপি সমর্থক পেশাজীবী নেতারাও এ কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন।
বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীর পরিচালনায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, খন্দকার মাহবুব হোসেন, অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ফজলুল হক মিলন, ঢাকা মহানগরের মুন্সি বজলুল বাসিত আনজু, কাজী আবুল বাশার, মহিলা দলের আফরোজা আব্বাস, যুবদলের সাইফুল ইসলাম নীরব, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের শফিউল বারী বাবু, ছাত্র দলের মামুনুর রশীদ অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন।
২০ দলীয় জোটের শরিক লেবার পার্টির একাংশের নেতা মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, জাগপার খন্দকার লুৎফর রহমান, এলডিপির সাহাদাত হোসেন সেলিমও বক্তব্য দেন অবস্থান কর্মসূচিতে।
অন্যদের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মাহমুদুল হাসান, ভাইস চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধুরী, আবদুল আউয়াল মিন্টু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবুল খায়ের ভুঁইয়া, হাবিবুর রহমান হাবিব, কবীর মুরাদ, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, কেন্দ্রীয় নেতা সালাউদ্দিন আহমেদ, শিরিন সুলতানা, আনোয়ারুল আজিম, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, হাবিবুল ইসলাম হাবিব, মীর সরফত আলী সপু, নূরী আরা সাফা, আমিনুল হক, বেবী নাজনীন, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, আবদুস সালাম আজাদ, শামীমুর রহমান শামীম, মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, শহীদুল ইসলাম বাবুল, হারুনুর রশীদ, আমিরুজ্জামান শিমুল, বজলুল করীম চৌধুরী আবেদ এবং অঙ্গসংগঠনের সুলতানা আহমেদ, হেলেন জেরিন খান, মোরতাজুল করীম বাদরু, আসাদুজ্জামান আসাদ অবস্থান কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন।
আর ২০ দলীয় জোটের নেতাদের মধ্যে আছেন লেবার পার্টির একাংশের হামদুল্লাহ আল মেহেদী, ন্যাপের গোলাম মোস্তাফা ভুঁইয়া, শহীদুন্নবী ডাবলু, এনপিপির মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, এনডিপির মঞ্জুর হোসেন ঈসা।