ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে গত বছর হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলার প্রসঙ্গ ধরে বুধবার ঢাকায় রামকৃঞ্জ মিশনে স্বামী বিবেকানন্দ ভবন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এই হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
নাসিরনগরে হিন্দুদের উপর হামলায় আওয়ামী লীগের স্থানীয় কয়েক নেতাদের জড়িত থাকার তথ্য পুলিশের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্রও দেওয়া হয়েছে আদালতে।
মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, “নাসিরনগরে দেখুন, বিচার শুরু হতে যাচ্ছে। সরকার কঠোর অবস্থানে আছে। এখানে যদি আওয়ামী লীগের লোকও থাকে, তাদেরও পার পেয়ে যাওয়ার কোনো উপায় নেই।”
নাসিরনগরের পর সম্প্রতি ঠাকুরগাঁওয়েও হিন্দু সম্প্রদায় নির্যাতনের শিকার হয়।
কাদের বলেন, একটি ‘সিন্ডিকেট’ হিন্দুদের সম্পত্তি দখলের উদ্দেশ্যে এসব হামলা চালাচ্ছে।
“ঠাকুরগাঁওয়ে যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, আমি নিজে গিয়ে দেখে এসেছি গরিব হিন্দু পরিবার, তাদের উপর হামলা চালানো হয়েছে। এরা (হামলাকারী) যে দলেরই হোক না কেন, আমরা কোনো অবস্থায় ছেড়ে দেব না।”
বিপরীতে আওয়ামী লীগের প্রতি আস্থা রাখার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “আমাদের ভুল থাকতে পারে, সে ভুল সংশোধনের সাহসও আমাদের আছে।”
ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলাকে পাশে রেখে এই অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, প্রতিবেশী দেশটির সঙ্গে সরকারের সম্পর্ক নষ্ট করতে এসব হামলায় ইন্ধন দেওয়া হচ্ছে।
“সরকারবিরোধী যারা, তাদের একটা অপপ্রয়াস আছে যে হিন্দুদের বাড়ি, হিন্দুদের মন্দির যদি আক্রমণ করা যায়, তবে ব্যর্থতার জন্য বর্তমান সরকারকে দায়ী করে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক বিনষ্ট করা যায়। এটা একটা মতলব থাকতে পারে।”
কিন্তু সেই কৌশলও কাজে দেবে না বলে হুঁশিয়ারি দেন কাদের।
“হিন্দুদের উপর হামলা করে যারা বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক নষ্ট করতে চাইছে, তারা বোকার স্বর্গে বাস করছে। আমাদের সম্পর্ক এখন অনেক উপরে। আমাদের পারস্পরিক কন্সট্রাকটিভ সম্পর্ক নতুন নতুন মাত্রা পাচ্ছে।”
ভারতীয় হাই কমিশনার শ্রিংলাও দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার ক্ষেত্রে কয়েকটি নজির তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, গত পাঁচ বছরে ভারত সরকার বাংলাদেশে ২৪টি প্রকল্প শেষ করেছে।
“আমি আপনাদের জানাতে পেরে খুশি যে, শুধু ২০১৮ সালে আমরা ১ হাজার ১০০ কোটি টাকার ৬৫টি প্রকল্প শেষ করতে পারব।”
শ্রিংলা বলেন, “ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্কে এখন সোনালী অধ্যায় চলছে।
“বন্ধুগণ আপনাদের উন্নয়নের জন্য ভারত প্রস্তুত। আপনাদের সোনার বাংলার স্বপ্ন আমাদেরও স্বপ্ন।”
বিএনপি ছাড়াও ‘চলবে’
বিএনপির দাবি প্রত্যাখ্যান করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সংবিধান অনুসারেই একাদশ সংসদ নির্বাচন হবে।
“এর বাইরে অন্য কোনো দুঃস্বপ্ন দেখে কোনো লাভ নেই, এটাই শেষ কথা,” বলেছেন তিনি।
কাদের বলেন, সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে। শেখ হাসিনা সরকার শুধু ‘রুটিন ওয়ার্ক’ করবে। নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সব কাজ করবে নির্বাচন কমিশন।
বিএনপি ভোটে না এলে তা নিয়ে কোনো ভাবনা নেই আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের।
তিনি বলেন, “ভারতেরসহ কোনো গণতান্ত্রিক দেশে কোনো দল নির্বাচনে আসলো কি আসলো না, এ দায় নেওয়ার কি কোনো সুযোগ আছে? এই দায় আওয়ামী লীগেরও নেই। আসলে আসুক, না আসলে না আসুক, তাতে কী আসে যায়।
“বিএনপি নির্বাচনে না এলে সে জন্য গণতন্ত্রের চলার পথে কোনো বাধা হবে না। পার্লামেন্টও চলবে, সরকারও থাকবে, তারা না এলে গণতন্ত্রের কী দোষ?”