বুধবার এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছেন, পার্লামেন্টারি ডেমোক্রেসিতে কোনো সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
দুপুরে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ ব্রিফিংয়ে ‘নির্বাচনী ঐক্য নিয়ে জাতীয় পার্টির সঙ্গে বিএনপির যোগাযোগ হচ্ছে’ বলে সংবাদমাধ্যমের খবরের বিষয়ে মির্জা ফখরুলের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়।
ভবিষ্যতে জাতীয় পার্টির সঙ্গে বিএনপির জোট গঠনের সুযোগ আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আপনাদের চিন্তাশক্তির জন্য আপনাদের ধন্যবাদ। এটা পুরোপুরি অনুমান নির্ভর।
“হবে কি হবে না, তা ভবিষ্যৎ বলবে,” হাসতে হাসতে বলেন তিনি।
তাহলে সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না- প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “আমরা কোনোটাই উড়াই না। পার্লামেন্টারি ডেমোক্রেসিতে কোনো সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। আওয়ামী লীগ যদি জামায়াতে ইসলামীর সাথে আন্দোলন করতে পারে এবং আসন বণ্টন করতে পারে অতীতে, তাহলে ভবিষ্যতে ইসলামী ঐক্যজোটের সাথে করতে পারে। তাহলে আপনার নাথিং ইজ ইমপসিবল ফর পার্লামেন্টারি ডেমোক্রেসি।”
জাতীয় পার্টির নেতাদের সঙ্গে আপনাদের যোগাযোগ হচ্ছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এগুলোতে তো আপনি এখন জানতে পারবেন না। কারণ…।”
বিকল্পধারা বাংলাদেশের সভাপতি একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বে ‘যুক্তফ্রন্ট’ গঠনকে স্বাগত জানিয়ে আওয়ামী লীগকে হঠাতে বৃহত্তর জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল।
“একই সঙ্গে আমরা এখনও বলছি, একটা বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনার জন্য অত্যন্ত জরুরি। গ্রেটার ন্যাশনাল ইউনিটিই একমাত্র পথ যাতে আমরা এই ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারী শক্তিকে পরাজিত করতে পারি। সেজন্য জনগণের বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। তাতে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্য অত্যন্ত জরুরি।”
গত সোমবার বিকল্পধারা বাংলাদেশ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ ও নাগরিক ঐক্য মিলে ‘যুক্তফ্রন্ট’ নামে নতুন জোট গঠিত হয়। বিকল্পধারার সভাপতি বদরুদ্দোজা চৌধুরী আহ্বায়ক এবং নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না জোটের সদস্য সচিব হচ্ছেন।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের উপ-নির্বাচনে বিএনপি এখনও মেয়র প্রার্থী ঠিক করেনি বলে জানান মির্জা ফখরুল।
প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেন, “তার সাথে আমার ব্যক্তিগত ভালো সম্পর্ক ছিল। তাকে টিপিক্যাল রাজনীতিবিদ মনে হয়নি, আমার তাকে মনে হয়েছে তিনি একটু ব্যতিক্রমধর্মী চিন্তা করছেন। তিনি তার অল্প সময়ে নিঃসন্দেহে কিছুটা প্রভাব রাখতে পেরেছেন।
“এই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নেওয়া না নেওয়ার ব্যাপারে এখনও আমরা দলগতভাবে কোনো সিদ্ধান্ত নিইনি। আমাদের সিদ্ধান্ত হলে আপনারা জানাতে পারবেন।”
“সেই নির্বাচনটা চাই এই আওয়ামী লীগ সরকারের বাইরে। সরকারে আওয়ামী লীগ থাকবে না, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী পদে থাকবেন না। আমরা একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন চাই। সেটা যদি কালকে হয়, কালকেই চাই।”
চীনের বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড পলিটিক্যাল পার্টি ডায়ালগে অংশ নিয়ে আসা বিএনপি মহাসচিব এ বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে বলেন, “পৃথিবীকে একটা চিন্তার জগতে এক করে নিয়ে আসার জন্য এই সংলাপ বা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এটা একটা নতুন ধরনের রাজনৈতিক দর্শন, যা পৃথিবীর রাজনীতিকে সুন্দর করার জন্য।
“আমার মনে হয়েছে, এটার শুরুটা খুব ভালো হয়েছে। সেখানে আমেরিকান রিপাবলিকান পার্টির নেতা ছিলেন, ফ্রান্সের নেতা ছিলেন, ইউরোপীয় দেশের নেতারা ছিলেন, ইংল্যান্ডের নেতা ছিলেন, রাশিয়া, ভিয়েতনাম, পাকিস্তান, ভারত, মিয়ানমারের নেতারা ছিলেন।”
চীনা কমিউনিস্ট পার্টির আয়োজনে গত ১ ডিসেম্বর থেকে তিন দিনের এই সম্মেলনে বিএনপি ও আওয়ামী লীগসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ছয়শ রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।