তোষামোদী ছাড়ুন: সিইসিকে ফখরুল

প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে ‘তোষামোদী’ ছেড়ে নিরপেক্ষ ভূমিকা নিতে আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Nov 2017, 09:13 AM
Updated : 18 Nov 2017, 09:24 AM

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে ইসির ভূমিকা মূল্যায়ন করে শনিবার এক আলোচনা সভায় বক্তব্যে তিনি সিইসি কে এম নূরুল হুদার উদ্দেশে এই আহ্বান জানান।

সম্প্রতি অনুষ্ঠিত সংলাপে বিএনপির সঙ্গে আলোচনায় দলটির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের গুণগান করেছিলেন সিইসি নূরুল হুদা, যা নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সমালোচনায়ও পড়তে হয়েছিল তাকে।

পরে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংলাপে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর অবদানের কথা বলেছিলেন নূরুল হুদা।

দুটি ঘটনার উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, “তিনি তোষামোদী করে রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচন আনতে চান। আজকে বিএনপিকে খুব খুশি করার চেষ্টা করছেন। আবার হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ মানুষ দিয়ে আওয়ামী লীগের কথা বলছেন।”

দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন করে আসা বিএনপিকে একাদশ সংসদ নির্বাচনে আনতে সিইসি ওই ভূমিকা নিয়েছিলেন বলে মন্তব্য আসে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কাছ থেকে।

ফখরুল বলেন, “আমরা স্পষ্টভাষায় বলতে চাই, কাউকে তোষামোদী করার তো দরকার নেই। এটার প্রয়োজন নেই। এসব কথা বললে লাভ হবে না। কাজ দেখান। কাজের মাধ্যমে সত্যিকার অর্থে আপনারা নিরপেক্ষ প্রমাণ করুন।”

সংলাপে সিইসির সঙ্গে বিএনপি মহাসচিবসহ নেতারা (ফাইল ছবি)

ভোটের আগে সব রাজনৈতিক দলগুলোর সমান সুযোগ নিশ্চিত করার দাবি জানান বিএনপি মহাসচিব। দলটি মনে করে, আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রেখে ভোট হলে সমান সুযোগ নিশ্চিত হবে না।

ফখরুল বলেন, “সব কিছু আওয়ামী লীগ করে যাবে। তারা মহাসুখে হেলিকপ্টারে চড়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালাবে।

“আর আমরা একটা মিটিংও করতে পারব না, একটা সত্য কথা বলতেও পারব না, আমরা কোর্টের বারান্দায় ঘুরব, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে সপ্তাহে সপ্তাহে হাজিরা দিতে হবে, আমাদের সব নেতা-কর্মীদের হাজিরা দিতে হবে- এভাবে নির্বাচন হবে না।”

সব দলের সমান সুযোগ নিশ্চিতের অংশ হিসেবে বিএনপিসহ বিরোধী নেতাদের বিরুদ্ধে করা মামলাগুলো প্রত্যাহার এবং ভোটের আগে সংসদ ভেঙে দেওয়ার দাবি জানান তিনি।

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে মওলানা ভাসানী স্মৃতি সংসদের উদ্যোগে আলোচনায় এই দাবি তুলে ফখরুল সরকারকে হুঁশিয়ার করে বলেন, বিএনপি অংশ না নিলে আগামীতে নির্বাচন হবে না।

“এখন ক্ষমতায় আছেন কিছু দিনের জন্য। খুব আনন্দিত হচ্ছেন, বগল বাজাচ্ছেন যে আমরা তো ক্ষমতায় এসে যাব, কোনো চিন্তা নেই, বিএনপি না আসলে না আসবে।

“বিএনপি না আসলে হবে না। আর গেলাতে পারবেন না। এদেশের মানুষকে আর ওই ধরনের নির্বাচন গেলাতে পারবেন না। এদেশের মানুষ অবশ্যই আগামী নির্বাচনে সমস্ত দলগুলোকে দেখতে চায়।”

সরকারের উদ্দেশে ফখরুল বলেন, “মানুষের কাছে যান, তাদের হৃদয়ের ভাষাটা বুঝুন, চোখের ভাষাটা বুঝুন, দেওয়ালের লিখনটা পড়ুন, দেখুন তারা কী বলেছে।

“তারা সত্যিকার অর্থে পরিবর্তন চায়। সেই পরিবর্তন সম্ভব যদি একটা নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হয়।”

মজলুম জননেতা খ্যাত মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর মৃত্যু দিবসের সংবাদ জাতীয় দৈনিকসহ গণমাধ্যমে ‘ছোট করে প্রকাশে’ নিজের বেদনা ও ক্ষোভের কথাও সভায় বলেন এক সময়ের বাম রাজনৈতিক কর্মী ফখরুল।