সিঙ্গাপুরে তো বাংলাদেশের পুলিশ-অন্য কোনো বাহিনী নেই: কাদের

বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Nov 2017, 01:08 PM
Updated : 11 Nov 2017, 01:08 PM

দাবির পক্ষে যুক্তি দিয়ে তিনি বলেছেন, প্রধান বিচারপতির পদত্যাগপত্র এসেছে সিঙ্গাপুর থেকে, সেখানে বাংলাদেশের পুলিশ বা সরকারের ‘বিশেষ কোনো’ বাহিনীও নেই।

সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় নিয়ে ক্ষমতাসীনদের তোপের মুখে পড়েন প্রধান বিচারপতি সিনহা। এক মাসের ছুটি নেওয়ার পর গত ১৩ অক্টোবর অস্ট্রেলিয়া যান তিনি। ছুটি শেষ হওয়ার পরদিন শনিবার বঙ্গভবন থেকে তার পদত্যাগপত্র পাওয়ার কথা জানানো হয়।

প্রধান বিচারপতিকে ‘জোর করে’ পদত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি নেতা মওদুদ আহমদ।

এর প্রতিক্রিয়ায় বিকালে গাজীপুরের ভাওয়াল বদরে আলম কলেজ মাঠে জেলা আওয়ামী লীগের সমাবেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, “আমরা নাকি জোর করে পদত্যাগ করিয়েছি। পদত্যাগপত্র কোথা থেকে এসেছে? সিঙ্গাপুর না কানাডা?

“পদত্যাগপত্র সিঙ্গাপুর থেকে এসেছে। সেখানে তো পুলিশও নেই, সরকারের বিশেষ কোনো বাহিনীও নেই। সিনহা সাহেব নিজেই বিদেশে থেকে পদত্যাগপত্র দিয়েছেন। তা ইতোমধ্যে মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে।”

বিচারপতি সিনহা বিদেশ যাওয়ার পর তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অর্থপাচার, আর্থিক অনিয়ম ও নৈতিক স্খলনসহ সুনির্দিষ্ট ১১টি অভিযোগ ওঠার কথা সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল।

সর্বোচ্চ আদালত জানায়, ওই সব অভিযোগের ‘গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা’ তিনি না দিতে পারায় সহকর্মীরা তার সঙ্গে এজলাসে বসতে নারাজ।

এই প্রসঙ্গ তুলে ওবায়দুল কাদের বলেন, “পাঁচ বিচারপতি যেখানে সিনহা সাহেবকে অনাস্থা দিয়েছেন, সেখানে সরকারের কী দোষ?”

বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, “সরকারের বিকল্প কোনো পথ নেই বলে নাকি জনসেবার অনুমতি দিয়েছে। মির্জা ফখরুল সাহেব, লজ্জা করে না? সাড়ে আট বছরে সাড়ে আট মিনিটতো দাঁড়াতে পারেননি।”

বিএনপির আন্দোলনের ঘোষণা ধোঁয়াশার নামান্তর মন্তব্য করে তিনি বলেন, “তারা আন্দোলনের ডাক দিয়ে ঘরে বসে হিন্দি সিরিয়াল দেখে। আমি শুধু এটুকু বলব, গণতান্ত্রিক উদারতাকে দুর্বলতা ভাববেন না।”

গাজীপুর সিটি নির্বাচন আওয়ামী লীগের জন্য ‘সেমিফাইনাল খেলা’ মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, “আগামী জাতীয় নির্বাচন আমাদের জন্য ফাইনাল খেলা আর গাজীপুর সিটি নির্বাচন হল সেমিফাইনাল খেলা। গাজীপুরের সকল নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধভাবে নৌকার প্রার্থীর হয়ে নির্বাচন করে সেমিফাইনালে জয় নিশ্চত করতে হবে।”

গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আ ক ম মোজাম্মেল হকের সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, মহিলা ও শিশু প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি, গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন সবুজ, মহানগর সভাপতি আজমত উল্লা, সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম বক্তব্য দেন।