জাপার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রস্তাবে বিএনপি নেই

হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জাতীয় পার্টি একাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে বর্তমান সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে, যাতে সংসদে প্রতিনিধিত্ব করা দলগুলোর অংশগ্রহণের কথা বলা হয়েছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Oct 2017, 01:07 PM
Updated : 9 Oct 2017, 02:07 PM

মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংলাপে দশম সংসদের বিরোধী দলটির পক্ষ থেকে আগামী নির্বাচনের সময় সশস্ত্রবাহিনী মোতায়েন, ভোটারের ভিত্তিতে সীমানা পুননির্ধারণসহ আট দফা প্রস্তাব রাখা হয়েছে।

মতবিনিময় শেষে এরশাদ আলোচনার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন।

নির্বাচনকালীন অন্তর্বর্তী সরকার কেমন হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “সরকারই অন্তর্বর্তী সরকার করবে।গতবারও তাই করেছিলেন, আশা করি এবারও করবেন। এটা ওনাদের (ইসি) এখতিয়ারভুক্ত নয়।

বিএনপি অন্তর্বর্তী সরকারে থাকতে পারবে কি না- এমন প্রশ্নে এরশাদ বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকার হবে যারা সংসদে রয়েছে তাদের নিয়ে; বিএনপি তো সংসদে নেই। আমরা প্রস্তাব দিয়েছি, সংবিধান অনুযায়ী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করতে।তাই দুঃখজনক হলেও বিএনপি থাকতে পারবে না।”

ভোটে সেনা মোতায়েনের প্রসঙ্গে সাবেক এই সামরিক শাসক বলেন, “পাবলিক পারসেপশন হল- সেনাবাহিনী যদি মোতায়েন করা হয়, নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। আমরা তাই বলেছি- জনগণ চাচ্ছে তাই, সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হোক।”

সংলাপে জাতীয় পার্টির ২৫ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন এরশাদ। তবে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ প্রতিনিধি দলে ছিলেন না।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদার সভাপতিত্বে নির্বাচন কমিশনার ও ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিবসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা মতবিনিময়ে উপস্থিত ছিলেন।

আট প্রস্তাব

লিখিত বক্তব্যে এরশাদ বলেন, “তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বিলোপের মধ্যমে আমরা কলঙ্কমুক্ত হতে পেরেছি। আমরা বলে আসছি-সাংবিধানিক পন্থা অনুসারেই সব নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে। সে অনুসারে নির্বাচনকালীন অন্তর্বর্তী সরকারে রাজনৈতিক প্রতিনিধিরাই আসীন থাকবেন।”

“নির্বাচনের সিডিউল ঘোষণার পর নির্দিষ্ট সময়ে সংসদ ভেঙে দিয়ে সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী সকল দলের আনুপাতিক প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে অন্তবর্তী সরকার গঠন করতে হবে। দলীয় প্রধানের সুপারিশের ভিত্তিতে অন্তবর্তী মন্ত্রিসভার সদস্য নিয়োগ করতে হবে।”

স্বাধীনভাবে ইসিকে কাজ করার পরামর্শ দিয়ে তিনি জানান, নির্বাচন অনুষ্ঠানে ইসির ওপর অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো হস্তক্ষেপ চলবে না।

লিখিত প্রস্তাবে বলা হয়, ভোটের সময় সারাদেশে সশস্ত্রবাহিনী মোতায়েন করতে হবে।

জাতীয় পার্টির অন্যপ্রস্তাবগুলো হচ্ছে- নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রশাসনের কোনো বিতর্কিত কর্মকর্তাকে দায়িত্বে রাখা যাবে না; নির্বাচনী ব্যয় সর্বোচ্চ ২০ লাখ টাকা নির্ধারণ করে- সব খরচ তার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার ক্ষেত্রে কঠোরতা আরোপ করতে হবে; প্রচার কাজের গাড়িবহর সীমিত রাখার বিধান রাখতে হবে; সংসদীয় এলাকার সীমানা নির্ধারণ প্রসঙ্গে বারবার সীমানা নির্ধারণ না করে ভোটের আনুপাতিক হারে সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ করতে হবে।

নির্বাচনকালীন সময়ে প্রয়োজনে সংবিধানের ধারা-উপধারা সংশোধন করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, সংস্থাপন মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্বাচন কমিশনের অধীনে নিয়ে আসতে হবে।

নির্বাচন পদ্ধতি সংস্কারে নির্বাচন কমিশনের কাছে একগুচ্ছ প্রস্তাবও রাখে জাপা।