ইসি গঠনে আইন হচ্ছে: হানিফ

নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে বিতর্ক এড়াতে সংবিধানের আলোকে আইন প্রণয়ন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল আলম হানিফ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Dec 2016, 03:30 PM
Updated : 18 Dec 2016, 03:31 PM

এবার নতুন ইসি গঠনে রাষ্ট্রপতি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরুর পরপরই তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় একথা জানান তিনি।

ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে হানিফ বলেন, “নির্বাচন কমিশন গঠনে আইনের প্রয়োজন। এতদিন এই আইনটা ছিল না। এখন আইন করার চিন্তা করছে সরকার।”

ইসি গঠনের আইনের খসড়া ইতোমধ‌্যে তৈরি হয়েছে বলেও জানান তিনি।

রোববার সন্ধ‌্যায় হানিফ একথা বলার কিছুক্ষণ আগেই বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনা করে বেরিয়ে আসে বিএনপি, সেখানে দলটির পক্ষ থেকে ১৩ দফা প্রস্তাব তুলে ধরা হয়।

পাঁচ বছর মেয়াদী নির্বাচন কমিশন গঠনের এখতিয়ার সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির।

সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদে বলা আছে: প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অনধিক চারজন নির্বাচন কমিশনারকে লইয়া বাংলাদেশের একটি নির্বাচন কমিশন থাকিবে এবং উক্ত বিষয়ে প্রণীত কোন আইনের বিধানাবলী-সাপেক্ষে রাষ্ট্রপতি প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারকে নিয়োগদান করিবেন। 

সংবিধানের আলোকে ওই আইন সাড়ে চার দশকেও না হওয়ায় প্রতিবারই নির্বাচন কমিশন গঠনে জটিলতা দেখা দেয়।

গতবার নির্বাচন কমিশন গঠনের জন‌্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে সার্চ কমিটি গঠনের একটি পদ্ধতি গ্রহণ করেছিলেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান।

সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনকে প্রধান করে গঠিত সার্চ কমিটি ১০ জনের নাম প্রস্তাব করে এবং তার মধ‌্য থেকে দুজনের নাম সিইসি হিসেবে প্রস্তাব করে।

নির্বাচন কমিশন

ওই সুপারিশের মধ‌্য থেকে সাবেক সচিব কাজী রকিবউদ্দীন আহমদকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং আরও চারজনকে কমিশনার হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন জিল্লুর রহমান।

নানা সমালোচনার মধ‌্য দিয়ে পাঁচ বছর পার করতে যাচ্ছে কাজী রকিবের এই কমিশন। তাদেরকে ‘সরকারের আজ্ঞাবহ’ আখ‌্যায়িত করে তাদের অধীনে সংসদ নির্বাচনও বর্জন করে বিএনপি।

এর আগে বিএনপি আমলে নিয়োগ পাওয়া বিচারপতি এম এ আজিজ নেতৃত্বাধীন ইসি নিয়ে আপত্তি জানিয়ে ২০০৭ সালে নবম সংসদ নির্বাচনে না যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল আওয়ামী লীগ।

পরে ওই নির্বাচন আর হয়নি; রাজনৈতিক সংঘাতের মুখে দেশে আসে জরুরি অবস্থা; সেনা নিয়ন্ত্রণে দুই বছর দায়িত্ব পালন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার।

ওই সময় গঠিত হন এ টি এম শামসুল হুদা নেতৃত্বাধীন তিন সদস‌্যের ইসি, যাকে বাংলাদেশের সফলতম কমিশন হিসেবে বিবেচনা করেন অনেকে।

বিএনপি এবার রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপ করে নিরপেক্ষ ও শক্তিশালী ইসি গঠনের জন‌্য ১৩টি প্রস্তাব দিয়ে এসেছে।

সাবেক সিইসি শামসুল হুদা মনে করেন, নিরপেক্ষ লোক নিয়োগ পেলে নির্বাচন কমিশনের বিদ্যমান ক্ষমতা কাঠামোতেই নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব।