বৃহস্পতিবার সকালে কারওয়ান বাজারে বাংলাদেশ ইকোনমিক জোন অথরিটি (বেজা) কার্যালয়ের সামনে এক অবস্থান কর্মসূচিতে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম এই কথা জানান।
তিনি বলেন, “দাবি মানা না হলে আমাদের অবস্থান ও শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি বেজা কার্যালয়ের সামনে সীমিত থাকবে না। সারাদেশের চা-শ্রমিক ও সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে আমরা তখন জাতীয় সংসদ অভিমুখে অভিযাত্রা করব।”
সিপিবির সঙ্গে চান্দপুর-বেগম খাঁন ভূমি রক্ষা কমিটি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), গণফোরাম, ন্যাপ, নাগরিক ঐক্য, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট ও চা শ্রমিকদের কৃষিজমি রক্ষা জাতীয় সংহতি কমিটি এ কর্মসূচির আয়োজন করে।
কর্মসূচিতে হবিগঞ্জে থেকে আসা শখানেক চা-শ্রমিক অংশ নেন।
চা-শ্রমিকদের দেশের অর্থনীতির ‘অন্যতম শক্তি’ উল্লেখ করে সিপিবি সভাপতি সেলিম তাদের ‘উপার্জন বন্ধ ও উচ্ছেদের সরকারি ষড়যন্ত্রের’ প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, “বেজার কর্মকর্তারা অসাধু উপায় অবলম্বন করে দেড়শ বছরের আবাদি জমিকে পতিত জমি বানিয়েছে।
“৬০ বছর ধরে কেউ অনাবাদি বা খাসজমি চাষ করলে সেটা তার মালিকানা হয়ে যায়। অথচ এক্ষেত্রে ১৫০ বছরের আবাদি জমিকে পতিত ও খাস জমি হিসেবে দেখানো হয়েছে।”
‘কৃষিজমিতে কলকারখানা হবে না’ প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্য স্মরণ করে সেলিম বলেন, “চুনারুঘাটেই ১২ হাজার খাসজমি আছে, আপনারা সেখানে এ অঞ্চল করুন। আপনারা যদি সেই জমি খুঁজে না পান, তাহলে আমাদের বলুন, আমরা খুঁজে দেব।”
কর্মসূচিতে চান্দপুর-বেগম খাঁন ভূমি রক্ষা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক কাঞ্চন পাত্র বলেন, “যে জমিতে অর্থনৈতিক অঞ্চল করার সিদ্ধান্ত হয়েছে, তার উপরই শ্রমিকদের বেঁচে থাকা নির্ভর করছে
“দৈনিক মাত্র ৬৯ টাকা বেতনে কাজ করি আমরা। এর বাইরে যে ফসলি জমি আছে তা দিয়ে আমাদের সংসার চলে। অর্থনৈতিক অঞ্চল করে আমাদের এই জমি দখল করে নিলে আমরা কই যাব?
চা-শ্রমিক কনকলতা রাজবংশী সরকারকে তাদের দাবি মেনে নেয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “রক্ত দিব জীবন দিব, আমাদের ধান্য জমিতে কোনো জোন হতে দেব না।”
এক ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচিতে আরও বক্তব্য দেন বাসদ নেতা রাজেকুজ্জামান রতন, সিপিবির সাজ্জাদ জহির চন্দন, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের আবুল হাসান, হবিগঞ্জের চা শ্রমিক আন্দোলনের সংগঠক মাহমুদা খাঁ, মোহন রবিদাস, স্বপন সাঁওতাল প্রমুখ।