আপিলেও সাড়া পাননি লতিফ, যাচ্ছেন ইসিতে 

নির্বাচন কমিশনের তলবের নোটিস আপিল বিভাগেও স্থগিত না হওয়ায় সংসদ সদস্য পদ থাকবে কি-না, সে প্রশ্নে ইসির শুনানিতে যেতে হচ্ছে আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেতা আবদুল লতিফ সিদ্দিকীকে। 

সুপ্রিম কোর্ট প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 August 2015, 03:55 AM
Updated : 23 August 2015, 05:10 AM

প্রধান বিচারপতি এস কে সিনাহার নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের বেঞ্চ রোববার লতিফের আবেদন শুনে ‘নো অর্ডার’ দেয়। ফলে এ বিষয়ে লতিফের রিট আবেদন খারিজ করে দেওয়া হাই কোর্টের আদেশই বহাল থাকে।   

আপিল বিভাগের আদেশের পর লতিফের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা নির্বাচন কমিশনের নোটিসের কার্যকারিতা স্থগিত চেয়েছিলাম আপিল বিভাগ তাতে ‘নো অর্ডার’ দিয়েছে। আমরা এখন নির্বাচন কমিশনে যাচ্ছি।”  

নির্বাচন কমিশনের আইন শাখার যুগ্ম সচিব মো. শাজাহান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “যথাসময়ে শুনানি হবে। আমরা প্রস্তুত আছি।”

দল থেকে বাদ পড়ায় লতিফের সংসদ সদস্য পদ থাকবে কি না সে বিষয়ে এই শুনানিতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকেও ডেকেছে নির্বাচন কমিশন।

গত বছর সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে এক অনুষ্ঠানে হজ নিয়ে মন্তব্য করে লতিফ সিদ্দিকী মন্ত্রিত্ব হারান। সেই সঙ্গে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত হন।

দেশে ফেরার পর ওই মন্তব্যকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন মামলায় নয় মাস কারাগারে কাটাতে হয় টাঙ্গাইলের এই সাংসদকে। সম্প্রতি জামিনে মুক্তি পান তিনি।

লতিফকে বহিষ্কারের আট মাস পর বিষয়টি জানিয়ে আওয়ামী লীগের পাঠানো চিঠি গত ৫ জুলাই স্পিকার শিরীন শারমিনের হাতে পৌঁছায়। এরপর সংবিধান, মেম্বার অফ পার্লামেন্ট (ডিটারমিনেশন অব ডিসপিউট) অ্যাক্ট, সংসদীয় কার্যপ্রণালী বিধি ও গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ মেনে বিতর্ক নিষ্পত্তির কার্যক্রম নেওয়া হয়।

এ অবস্থায় লতিফের সংসদ সদস্য পদ থাকবে কি না, তা মীমাংসার জন্য গত ১৩ জুলাই প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে চিঠি দেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।

এ পরিপ্রেক্ষিতে মেম্বার অব পার্লামেন্ট (ডিটারমিনেশন অব ডিসপিউট) অ্যাক্ট অনুযায়ী ১৬ জুলাই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ও লতিফ সিদ্দিকীকে লিখিত বক্তব্য দিতে বলে ইসি। ২ অগাস্ট দুজনই তাদের জবাব কমিশনে পাঠান।

আশরাফের চিঠিতে বলা হয়, দল থেকে বহিষ্কৃত হওয়ায় লতিফ সিদ্দিকীর সংসদ সদস্যপদ না থাকাই সঙ্গত।

অন্যদিকে লতিফ সিদ্দিকী তার সংসদ সদস্য পদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার সংসদের উপর ছেড়ে দেওয়ার আহ্বান জানান। এরপরই শুনানির সিদ্ধান্ত নেয় ইসি। লতিফ ও সৈয়দ আশরাফকে আগামী ২৩ অগাস্ট শুনানিতে হাজির হওয়ার অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দেওয়া হয়।

এরপর কমিশনের দেওয়া চিঠির কার্যকারিতা স্থগিত চেয়ে হাই কোর্টে রিট আবেদন করেন লতিফ। ওই চিঠি কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে রুলও চান তিনি।

নির্বাচন কমিশন, আইন সচিব, নির্বাচন কমিশনের উপসচিব (আইন) ও জাতীয় সংসদের স্পিকারকে ওই রিট আবেদনে বিবাদী করা হয়।

এ বিষয়ে শুনানি করে বিচারপতি মো. এমদাদুল হক ও বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের হাই কোর্ট বেঞ্চ গত ২০ অগাস্ট আবেদনটি খারিজ করে দেয়।

ওই আদেশের পর রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে থাকা ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল খোরশেদুল আলম বলেন, “নির্বাচন কমিশন লতিফ সিদ্দিকীকে যে নোটিস দিয়েছে, তাতে আইনের কোনো বত্যয় ঘটেনি। বিষয়টি মীমাংসা বা নিষ্পত্তির এখতিয়ার নির্বাচন কমিশনের হাতে।”

এরপর হাই কোর্টের ওই আদেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার আদালতে গিয়ে নির্বাচন কমিশনের নোটিস স্থগিতের আবেদন করেন লতিফ। চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী আবেদনটি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়ে দিলে রোববার তা শুনানির জন্য ওঠে।