বিভ্রান্তি ছড়িয়ে সরকার পার পাবে না: রিজভী

রিজভী বলেন, “সাধের সিংহাসন, আপনাদের হাতিশালে হাতি আর ঘোড়াশালে ঘোড়া থাকবে- এই সুখ স্বপ্ন আপনাদের আর থাকবে না।”

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Sept 2022, 11:16 AM
Updated : 25 Sept 2022, 11:16 AM

‘মানুষ হত্যা ও লুটপাট করে’ জনগণের মাঝে বিভ্রান্তি রটিয়ে সরকার ‘পার পাবেন না’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে তিনি বলেন, “আজকে যারা ফালতু কথা বলছেন, আজকে যারা মানুষ হত্যা করার পরেও নানাভাবে বিভ্রান্তি রটাচ্ছে, তারা কেউ রেহাই পাবেন না জনগণের ক্রোধ থেকে, জনগণের আক্রোশ থেকে।

“মিথ্যা কথা বলে আর জনগণের টাকা লুট করে, অর্থ পাচার করে আপনারা মনে করেছেন সাধের সিংহাসন, আপনাদের হাতিশালে হাতি আর ঘোড়াশালে ঘোড়া থাকবে- এই সুখ স্বপ্ন আপনাদের আর থাকবে না।”

সরকার পতনের আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে রিজভী বলেন, “জাগ্রত জনগণ শুধু অপেক্ষায় রয়েছে চূড়ান্ত আঘাতের জন্য। সেই চূড়ান্ত আঘাত এখন প্রস্তুত হয়ে আছে।”

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বিএনপির এই নেতা বলেন, “আপনার ক্রোধ দিয়ে, আপনার রাইফেল দিয়ে, আপনার বন্দুক দিয়ে আপনি আর জনগণের শক্তিকে দাবাতে পারবেন না। ওই রাইফেল-বন্দুক এখন কোন দিকে ঘুরে যাবে, এখন কোন দিকে ঘুরিয়ে দেবে সেটা চিন্তা করে আপনারা কথা বলবেন। এখনও সময় আছে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন।”

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে বিএনপির নেতাকর্মীদের ‘হত্যার’ অভিযোগ তুলে রিজভী বলেন, “প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘে গিয়ে যুদ্ধ থামানোর কথা, শান্তির কথা বলছেন এবং রোহিঙ্গাদের কথা বলতে গিয়ে তিনি চোখ দিয়ে অজস্র ধারায় পানি ফেলছেন।

“আমরা সবাই বুঝি যে এই অশ্রু সজল হওয়ার কারণ কী? বাংলাদেশে কিন্তু তাদের জন্য চোখ দিয়ে তার পানি পড়েনি। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র গিয়ে তিনি রোহিঙ্গাদের জন্য মায়া কান্না কাঁদছেন।”

দ্রব্যমূল্যের ঊধর্বগতি ও খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বাংলাদেশ লেবার পার্টির উদ্যোগে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।

‘বিএনপি লাশের রাজনীতি করে ক্ষমতায় যেতে চায়’- আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন মন্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে রিজভী বলেন, “বিএনপি করছে কর্মসূচি, বিএনপি করছে তার রাজনৈতিক গণতান্ত্রিক স্বীকৃত পথে শান্তির কর্মসূচি। এরকম শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে গুলি চালিয়ে ৩১ জুলাই থেকে এই পর্যন্ত চার জন বিএনপির নেতাকে হত্যা করেছে।

“সেখানে জেলা পর্যায়ে ছাত্র দলের সভাপতি, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা রয়েছেন। তারপরও কাদের সাহেবরা বলছেন, বিএনপি লাশের রাজনীতি করে।”

রিজভী বলেন, “আওয়ামী লীগ হচ্ছে ধান্ধার পাগল, ধান্ধাবাজীর পাগল। ধান্ধা হচ্ছে আবোল-তাবোল বলব, কিন্তু আমার স্বার্থটা আদায় করে নেবে। ওবায়দুল কাদেররা, হাছান মাহমুদরা বিএনপির এতো নেতাকর্মী হত্যা হচ্ছে, এতো রক্ত ঝরছে, এতো কর্মী শহীদ হচ্ছে, তারপরেও তারা সেটাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাচ্ছেন।

“সেটার প্রতি অমানবিক কথা বলছেন। কেন? সেটাও আমাদের বুঝতে বাকি নেই। কারণ মিথ্যা কথা বলে, অবান্তর কথা বলে, উল্টো-পাল্টা কথাবার্তা কথা বলে তারা শেখ হাসিনার প্রিয়ভাজন হতে চায়।”

অন্যদের মধ্যে লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, বিএনপির মীর সরাফত আলী সপু, হুমায়ুন কবির খান, নিপুণ রায় চৌধুরী, লেবার পার্টির ফারুক রহমান, রামকৃষ্ণ সাহা, আলমগীর হোসেন, আহসান কবির, মানবাধিকার সংরক্ষণ সংস্থার জহুরা খাতুন জুঁই, শ্রমিক দলের আনোয়ার হোসেইন, মৎস্যজীবী দলের আবদুর রহিম, মুক্তিযোদ্ধা দলের শহিদুল ইসলাম মিলন, দেশ বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের কে এম রফিকুল ইসলাম রিপন মানববন্ধনে বক্তব্য দেন।