ছাত্রদলের নেতৃত্বে নতুন জোট, নেই ছাত্রশিবির

জোটের নাম ঘোষণা করেছেন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাঈফ মাহমুদ জুয়েল।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Oct 2023, 02:34 AM
Updated : 28 Oct 2023, 02:34 AM

সরকারবিরোধী আন্দোলনে থাকা ১৫টি রাজনৈতিক দল সমর্থক ছাত্র সংগঠন নিয়ে প্রকাশ পেল নতুন জোট যাতে স্থান পায়নি জামায়াতে ইসলামী সমর্থক ইসলামী ছাত্রশিবির।

‘ভোটাধিকার, সন্ত্রাস-দখলদারিমুক্ত নিরাপদ ক্যাম্পাস, সাবর্জনীন শিক্ষা ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার’ লক্ষ্য নিয়ে এই জোটের নাম দেওয়া হয়েছে ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্রঐক্য’।

শুক্রবার সকালে সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক প্রতিনিধি সভায় জোটের নাম ঘোষণা করেন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাঈফ মাহমুদ জুয়েল।

তিনি বলেন, “ভোটাধিকার, সন্ত্রাস-দখলদারমুক্ত নিরাপদ ক্যাম্পাস, সার্বজনীন শিক্ষা ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় ৯ দফার ভিত্তিতে বৃহত্তর ছাত্র আন্দোলন গড়ে তুলতে ক্রিয়াশীল গণতান্ত্রিক ছাত্র সংগঠন সম্মিলিতভাবে ফ্যাসিবাদ বিরোধী ছাত্র ঐক্যের নাম আমি ঘোষণা করছি।“

ছাত্রদল নেতা বলেন, “ভোটাধিকার বঞ্চিত সকল মানুষ এই ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্যে অংশগ্রহণ করে একটি স্বনির্ভর, সমৃদ্ধশালী, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে উঠবে সেই বাংলাদেশ এর প্রত্যাশায় আগামী দিনের রাজপথের সংগ্রামে সকলকে অংশ নেয়ার জন্য আমি আহ্বান জানাচ্ছি।”

জোটের সমন্বয়ক তিন জন। এরা হলেন, ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান, ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি মশিউর রহমান রিচার্ড ও ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আদীব।

জোটের মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক।

কারা আছে জোটে

জোটে ১৫টি সংগঠন হল: ছাত্রদল, ছাত্র ফেডারেশন, ছাত্র অধিকার পরিষদ, ছাত্রলীগ (জেএসডি), গণতান্ত্রিক ছাত্র দল (এলডিপি), নাগরিক ছাত্র ঐক্য, জাগপা ছাত্রলীগ, ছাত্র ফোরাম (গণফোরাম মন্টু), ভাসানী ছাত্র পরিষদ, জাতীয় ছাত্র সমাজ (কাজী জাফর), জাতীয় ছাত্র সমাজ (বিজেপি-পার্থ), জাগপা ছাত্রলীগ (খন্দকার লুৎফর), ছাত্র জমিয়ত বাংলোদেশ, বিপ্লবী ছাত্র সংহতি এবং রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন।

সরকারবিরোধী থাকলেও ছাত্র শিবিরকে এই জোটে না নেওয়ার বিষয়ে এই সংবাদ সম্মেলনে কিছু বলা হয়নি।

সরকার পতনের দাবিতে আন্দোলনের মধ্যে গত বছরের শেষ দিকে বিএনপি তার দুই যুগের ২০ দলীয় জোট ভেঙে দেয়।

১৯৯৯ সালে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জাতীয় পার্টি, জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ঐক্যজোট নিয়ে যাত্রা শুরু হয় চারদলীয় জোট। পরে ধীরে ধীরে জোটে দলের সংখ্যা হয় ২০টি।

বহুল আলোচিত জোট ভেঙে দেওয়ার গুঞ্জন শোনা যায় গত বছরের মাঝামাঝি সময় থেকেই। তবে ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিভাগীয় সমাবেশের আগে আগে সংবাদ সম্মেলনে সেটির ঘোষণা দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সেদিন তিনি জানান, জোট ভেঙে দিলেও শরিক দলগুলো বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে অংশ নেবে। কিন্তু জামায়াত এই যুগপৎ আন্দোলনে শুরু থেকেই ছিল অনুপস্থিত। এবার শিবিরকে বাদ দিয়ে জোট করল ছাত্রদল।

জোটের কী দাবি

নতুন জোট ঘোষণার দিন ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র ঐক্য’ ৯ দফা দাবি তুলে ধরেছে।

এর মধ্যে শিক্ষা সংশ্লিষ্ট দাবিগুলো হল: শিক্ষার মান উন্নয়ন, মাতৃভাষায় শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে জাতীয় অনুবাদ সংস্থা গঠন, মেধা ও যোগ্যতার শিক্ষা গ্রহণ ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি, শিক্ষাঙ্গনগুলোকে সন্ত্রাস ও দখলদার মুক্ত করা, ছাত্র সংসদ নির্বাচন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সব ছাত্র সংগঠনের সহাবস্থান।

অন্য দাবিগুলো হল: সব জাতিসত্ত্বার সাংবিধানিক স্বীকৃতি, সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন এবং ‘রাষ্ট্র সংস্কার’ দাবিতে বিরোধী দলগুলোর তোলা ৩১ দফা, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার স্থায়ী মুক্তি এবং সাইবার সিকিউরিটি আইনসহ ‘নিবর্তনমূলক’ সব আইন বাতিল।

 

(প্রতিবেদনটি প্রথম ফেইসবুকে প্রকাশিত হয়েছিল ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে: ফেইসবুক লিংক)