ভারত এবং চীন, কোনদিকে আগামীর দিন?

আহসান কবিরআহসান কবির
Published : 28 August 2020, 03:28 PM
Updated : 28 August 2020, 03:28 PM

শ্রীলংকার হাম্বানটোটা বন্দরসহ অনেক কিছু চীনের হাতে লিজ দেয়ার পর শ্রীলংকার রাজনীতির ধরন বদলে গেছে। সরকারি দল যদি চীনের পক্ষ নেয় বিরোধী দল নাকি তখন ভারতের পক্ষে কথা বলে। আর সরকার যদি ভারতের দিকে একহাত বাড়ায় তখন শ্রীলংকার বিরোধী দলের নেতা সমর্থকরা নাকি চীনের জন্য বুক পেতে দিতে প্রস্তুত থাকে! বাংলাদেশেও চীন আর ভারত নিয়ে ইদানিং বেশ কথা শোনা যাচ্ছে। আর তাই এই দুই দেশ নিয়ে হাজার বার শোনা একটা কৌতুক দিয়ে লেখাটা শুরু করা যায়

তিন কিশোর নিয়মিত এক হয়ে আড্ডা দেয়। এদের একজন ইন্ডিয়ান, একজন চাইনিজ আর একজন বাংলাদেশি। একদিন বাংলাদেশিটা আড্ডাতে এসে দেখলো ইন্ডিয়ান আর চাইনিজ মন খারাপ করে বসে আছে। বাংলাদেশি কিশোর জানতে চাইলো কী হয়েছে রে? ইন্ডিয়ানটা জানালো তার দাদী মারা গেছে। 'তোর মন খারাপ কেন' এই প্রশ্নের উত্তরে চাইনিজটা জানালো তারও গ্রান্ডফাদার মারা গেছে। বাংলাদেশি কিশোর তখন আফসোস করে বললো- চাইনিজ আর ইন্ডিয়ান মালের এই এক প্রবলেম। বেশিদিন টেকে না!

চীন আর ভারত নিয়ে আলোচনার সারমর্ম হচ্ছে বাংলাদেশ কোন দিকে বেশি ঝুঁকছে? চীন না ভারত? ১৯৪৭ এর পর থেকে ভারত পাকিস্তানের সম্পর্কটা আসলে বৈরিতার গল্প। তিন তিনবার যুদ্ধ জড়িয়ে পড়ার কারণে ভারত-পাকিস্তানের সম্পর্ক এখনও স্বাভাবিক নয়। প্রায়ই পাকিস্তান ও ভারতের সীমান্তে গোলাগুলি, সংঘর্ষ আর মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। ইদানিং পাকিস্তান ভারতের মতো খানিক বৈরিতার সম্পর্ক দেখা যাচ্ছে চীন ও ভারতের মধ্যে। এই দুইদেশের সীমান্ত বিরোধ নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে, গোলাগুলি হয়েছে, মারা গেছে ভারতীয় সৈন্য। এসব ঘটনাপ্রবাহের মধ্যে কূটনৈতিক পর্যায়ে বাংলাদেশ ভারতের আলোচনা, বাণিজ্যিক বিভিন্ন সুবিধা নিয়ে চীনের দূতিয়ালি বাংলাদেশে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। সম্পর্কগত কিংবা কৌশলগতভাবে বাংলাদেশ চীন বা ভারত কার উপর বেশি নির্ভরশীল হবে? নাকি বাংলাদেশ তার নিজের মত করে পথ চলবে?

যাই ঘটুক আমরা চীন ও ভারতকে নিয়ে ইদানিং ছড়িয়ে পরা কৌতুকগুলো শুনে আসতে পারি, সেই সাথে বোনাস হিসেবে থাকতে পারে পাকিস্তান নিয়ে কৌতুক!

যেমন- সুখ কী? উত্তর হচ্ছে- সুখ চীনা প্রডাক্ট। বেশিক্ষণ টেকে না বা থাকে না। চীনের সাথে সম্পর্ক করলেও নাকি সেটা ক্ষণস্থায়ী হতে পারে। আর দুঃখ নাকি জাপানিজ। অনেকক্ষণ টিকে থাকে! সম্পর্ক টিকে থাকুক আর নাই থাকুক টিকে থাকার কৌতুক কিন্তু ভাইরাল হয়। যেমন- ২০১৯ এর ফেব্রুয়ারিতে ভারতের কাশ্মীরে আত্মঘাতী এক বোমা হামলায় ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর ষাট জন সদস্য প্রাণ হারান এবং পাকিস্তান ভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মোহাম্মদী এই ঘটনার দায় স্বীকার করে। পুরো ঘটনার জন্য ভারত পাকিস্তানকে দায়ী করে এবং পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে ভারত পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে হামলা চালায়। ফলাফল ভারতীয় দুই বিমান ধ্বংস এবং ভারতীয় বিমান বাহিনীর উইং কমান্ডার 'অভিনন্দন বর্তমান' পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাতে আটক হন। 'শান্তির বার্তা' হিসেবে পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী (সাবেক পাকিস্তানি ক্রিকেট টিমের ক্যাপ্টেন) ইমরান খান 'অভিনন্দন'কে ভারতে ফেরত পাঠান। অভিনন্দনকে মুক্তি দানের পর ইমরান খানের সাবেক প্রেমিকা খ্যাত চিত্র নায়িকা মুনমুন সেনের মন্তব্য- "আমি জানি তো ইমরান বেশিক্ষণ টিকে থাকতে পারে না, ধরে রাখতে পারে না!

প্রিয় পাঠক এটা নিতান্তই কৌতুক। তবে এককালের প্লেবয় ক্রিকেটার ও পাকিস্তান টিমের বিশ্বকাপজয়ী ক্রিকেট ক্যাপ্টেন, বর্তমানের পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে টেলিফোন করেছিলেন, সম্পর্ক উন্নয়নের আগ্রহ দেখিয়েছেন বলে জানা গেছে!

সে যাই হোক চীন নিয়ে যতো কৌতুক তার বেশিরভাগ নাকি বানিয়েছে অ্যামেরিকানরা। যেমন-আসল বা অরিজিনাল শব্দের বিপরীত কী? উত্তরে বলা হচ্ছে- চাইনিজ! জানতে চাওয়া হয় কোভিড-১৯ বা করোনা কী? উত্তরে বলা হয়- চায়না ভাইরাস! চায়নার গবেষণাগারে নাকি এই ভাইরাসের উৎপত্তি,আবার ভ্যাকসিনও নাকি চায়না বানাচ্ছে! কলেরা, যক্ষা, প্লেগ এসব মহামারির প্রতিষেধক বের হতে যত সময় লেগেছিল সেই তুলনায় নাকি করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক বের হতে বেশি সময় লাগবে না। কারণ এটা চায়না ভাইরাস! বেশিদিন নাকি এমনিতেই টিকবে না! চীনের বাইরে থাকা অনেক চীনা নাগরিক কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে গণপিটুনিরও শিকার হয়েছেন।

পৃথিবীর অনেক ব্যবসা বাণিজ্য কিন্ত চীনারা 'শিকার' করে নিয়েছে। কখনও সখনও কৌশলে কিংবা পণ্য এবং প্রযুক্তির গুণে বাণিজ্য 'অর্জন' করে নিতে সমর্থ হয়েছে। সে কারণে পৃথিবীর নতুন পরাশক্তি চীন কিন্তু বাণিজ্য নির্ভর। সমরাস্ত্রেও কম নয়। কৌতুক আছে এখানেও। যেমন- বুলেট কেনা হবে। পরীক্ষার জন্য আনা হলো অ্যামেরিকান, চায়নিজ ও রাশিয়ান বুলেট। পাগলা ষাঁড় ছেড়ে দিয়ে অ্যামেরিকান ও রাশিয়ান বুলেট ছোঁড়া হলো, লক্ষ্যভেদ করলো সেসব বুলেট এবং পাগলা ষাঁড় মারা গেল। এরপর চীনা বুলেট ছোঁড়া হলো, সেসব লক্ষ্যভেদ করলেও পাগলা ষাড় মরলো না। বলা হলো চীনা বুলেট কার্যকরী না। চীনা বিশেষজ্ঞ জানালেন চীন মেরে ফেলার জন্য বুলেট বানায় না, বুলেটবিদ্ধ হবার জন্য বানায়। বুলেটবিদ্ধ হওয়া মরার চেয়ে খারাপ। কারণ কেউ বুলেটবিদ্ধকে হাসপাতালে নিয়ে যাবে, কেউ অপারেশান করবে, কেউ সেবা দেবে- সর্বোপরি ষাঁড় বা কোনও বুলেটবিদ্ধের সেরে উঠতে অনেক সময় ও টাকা ব্যয় হবে। চীন কাউকে মেরে ফেলার চেয়ে বেঁচে থাকার ভোগান্তিতে ফেলে ব্যবসা করতে চায়।

বাণিজ্য, প্রযুক্তি এবং সমরাস্ত্রে চীন যখন অনেক এগিয়ে ভারত তখন খুব একটা পিছিয়ে নেই। কিন্তু কৌতুক আছে ভারত বা মোদীকে নিয়েও। মোদীকে নিয়ে যে কৌতুকটা ছড়িয়ে পড়েছে তা এমন- মোদিজী ভারতকে সবদিক থেকে বদলে দেবেন বলেছেন। একারণে প্রতিদিন তিনি প্রার্থনাসভার আয়োজন করে চলেছেন। ঈশ্বর কবে যে তার প্রার্থনা কবুল করবেন সেটা কেউ বুঝতে পারছে না। ভারত বদলাতে যতদিন লাগবে ততোদিনে কি মোদিজী নিজেই বদলে যাবেন?

সমালোচকরা বলেন, ভারতের গর্ব ছিল অসাম্প্রদায়িক চরিত্র। মোদী এসে সেটা বদলে দিয়েছেন,গোঁড়া হিন্দুত্ববাদকে উসকে দিয়ে ব্রিট্রিশদের মতো বিভাজনের রাজনীতি করে টিকে থাকার চেষ্টা করছেন।ভারতের জাতির পিতা মহাত্মা গান্ধীর অসাম্প্রদায়িক অহিংস রাজনীতিটাকে উল্টে দিয়েছেন। আগে বলা হতো একগালে চড় মারলে গান্ধীজী আরেক গাল পেতে দিতেন। কিন্তু প্রতিবাদ করতে ভুলতেন না। মোদীর সমর্থকরা ঠিক উল্টো।কর্তব্যরত সাংবাদিকদের সন্দেহ হলে প্যান্ট খুলে দেখা হয় সে হিন্দু না মুসলমান! ধর্ম ব্যবহার করেই টিকে আছেন নরেন্দ্র দামোদর মোদী।

ভারত আর চীনের সাথে সম্পর্ক নিয়ে যে আলোচনা চলছে তাতে একদল বলছে- ভারত তিস্তা ও পদ্মার পানি ঠিকমতো দিল না তাই চীন এগিয়ে এসেছে। চীন নাকি বলছে- ২০০ কোটি টাকা নাও, তিস্তার গভীরতা বাড়াও, বর্ষার পানি ধরে রেখে শুষ্ক মৌসুমে ব্যবহার করো। বন্ধুত্বের নিদর্শনস্বরূপ ভারত বাংলাদেশকে যে ১০টি ট্রেন ইঞ্জিন ও বাস দিয়েছিল সেগুলোর ইঞ্জিন নাকি পুরোনো ছিল।

অন্যদিকে চীন নাকি ওসমানী বিমান বন্দর আধুনিক করে দেবে, করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনের পরীক্ষা ও দ্রুততম সময়ের ভেতর সরবরাহ নিশ্চিত করবে। চীনের এই প্রস্তাবনার ভেতরে চলে আসে সেই পুরোনো সম্পর্কের স্মৃতিচারণ। মুক্তিযুদ্ধের সময়ে এই চীন পাকিস্তানের পক্ষ নিয়েছিল। বাংলাদেশকে চীন স্বীকৃতি দিয়েছিল বঙ্গবন্ধু হত্যার পর। আর ভারত? এক কোটি লোকের থাকা খাওয়া আশ্রয় দান ও মুক্তিযুদ্ধে সার্বিক সহযোগিতায় ছিল তাদের সহমর্মিতার হাত।

কেমন হবে আগামী দিনের ভারত ও চীনের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক? আমরা সেটা নিয়ে জল্পনা কল্পনা করতে থাকি আর নিচের কৌতুক (একটা পাকিস্তান নিয়ে। ওটা বোনাস ) শুনে বিদায় নেই।

এক.
হেলমেট ছাড়া এক সেনা অফিসার মোটর সাইকেলে চড়ে রাস্তার উল্টো দিক দিয়ে কোথায় যেন যাচ্ছিল। তাকে পুলিশে ধরলো।

এরপর কোনদেশে কী ঘটবে?

ভারতীয় পুলিশ জানতে চাইলো- আপনার পরিচয়? লোকটি জানালো সে সেনাবাহিনীর মেজর। পুলিশ তাকে আটক করে থানায় পাঠালো। হেলমেট না থাকায় ও মোটর সাইকেলের কাগজপত্র ঠিক ছিল না বিধায় তার বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হলো। আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে জানালো পুলিশ।

পাকিস্তানি পুলিশ জানতে চাইলো- আপনার পরিচয়? লোকটি জানালো সে সেনাবাহিনীর মেজর। পুলিশ তাকে স্যালুট দিয়ে বললো-সরি স্যার আপনাকে চিনতে পারিনি। আপনি সসম্মানে যেতে পারেন। আইন পাকিস্তানের মতো করে চলবে!

চীনা পুলিশ জানতে চাইলো- আপনার পরিচয়? লোকটি জানালো সে সেনাবাহিনীর মেজর। পুলিশ ওই মেজরকে কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে পাঠালো। তাকে মোটর সাইকেলের ইঞ্জিন খুলে একইরকম পাঁচটা ইঞ্জিন বানানোর কাজে নিয়োগ করা হলো। চাকরিতে ফেরার শর্ত হিসেবে প্রতি তিনমাসে একটা করে হেলমেট কিনে ব্যবহারের নির্দেশ দেওয়া হলো। আইন চাইনিজদের বাণিজ্যনির্ভর গতিতে চলবে!

আর বোনাস কৌতুকটা পুরোনো। আগেও বলেছিলাম।

দুই.
স্বাধীনতা যুদ্ধের পর পর এই কৌতুকটা ছড়িয়ে পরেছিল। তখন সারা পাকিস্তানে ইয়াহিয়া ও নিয়াজীকে কাপুরুষ মনে করা হতো। তো ইয়াহিয়া খান এক সৈনিককে চাকরি থেকে বরখাস্ত করলেন। তাকে বেরিয়ে যাবার কথা বলতে গিয়ে ইয়াহিয়া খান আরও বললেন-যাও। আমাকে গালাগালি দিতে দিতে যাও। প্রয়োজনে মরে যাবার পরে আমার কবরের উপর হিসিও করতে পারো।

সৈনিক উত্তর দিলো-স্যার আমাকে অন্য কোন শাস্তি দেন। আপনার কবরের ওপর হিসি করার জন্য আমি হাজার মানুষের পেছনে লাইনে দাঁড়াতে পারবো না।