করোনাভাইরাস ঠেকাতে বিসিজি টিকার সুফল প্রমাণিত নয়: ডব্লিউএইচও

যক্ষ্মার বিসিজি টিকা দেওয়া থাকলে তা নভেল করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষা দিতে পারে বলে যে খবর দুই সপ্তাহ আগে ছড়াতে শুরু করেছে, তার কোনো ভিত্তি এখনও পায়নি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা-ডব্লিউএইচও।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 April 2020, 07:06 AM
Updated : 18 April 2020, 07:06 AM

জাতিসংঘের এ সংস্থা বলেছে, কোভিড-১৯ সংক্রমণের ক্ষেত্রে বিসিজি টিকার কোনো প্রভাব আছে কি না- তা জানতে দুটো ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলছে। ফলাফল পাওয়া গেলে ডব্লিউএইচও তা পর্যালোচনা করে দেখবে।

“সেই প্রমাণ পাওয়ার আগে কোভিড-১৯ এর প্রতিষেধক হিসেবে বিসিজি টিকা ব্যবহারের পরামর্শ ডব্লিউএইচও দেবে না। তবে যেসব দেশে যক্ষ্মায় আক্রান্ত হওয়ার হার বেশি, সেখানে শিশুদের বিসিজি টিকা চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে ডব্লিউএইচও।”

বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া কোভিড-১৯ মহামারীতে এ পর্যন্ত ২২ লাখের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে, দেড় লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

বিশ্বের নানা প্রান্তে জোর গবেষণা চললেও এ রোগের কোনো প্রতিষেধক বা প্রতিরোধক এখনও মানুষ তৈরি করতে পারেনি। কবে নাগাদ টিকা পাওয়া যেতে পারে, তাও এখনও নিশ্চিত নয়।

অন্য রোগের ওষুধ নতুন করোনাভাইরাস প্রতিরোধে কার্যক হতে পারে বলে যেসব খবর এর আগে এসেছে, তার কোনোটিরই সত্যতা এখনও প্রমাণিত নয় বলে ডব্লিউএইচও জানিয়ে আসছে।

নিউ ইয়র্ক ইনস্টিটিউট অব টেকনোলোজির (এনওয়াইআইটি) গবেষকদের একটি সমীক্ষার প্রাথমিক তথ্যের ওপর ভিত্তি করে মার্চের শেষে বিজিসি টিকা নিয়ে খবরটি বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে আসে।

সেই খবর সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং এমন সব পোস্ট আসতে থাকে, যাতে মনে হয়, কোভিড-১৯ এর ক্ষেত্রে বিজিসি টিকার সুফল হয়ত প্রমাণিত।    

এনওয়াইআইটির ওই গবেষণার শিরোনাম ছিল ‘কোরিলেশন বিটুইন ইউনিভার্সাল বিসিজি ভ্যাকসিনেশন পলিসি অ্যান্ড রিডুউসড মরবিডিটি অ্যান্ড মরটালিটি ফর কোভিড-১৯’। এর খসড়া প্রতিবেদন অনলাইনে দেওয়া হলেও তার পিয়ার রিভিউ (সংশ্লিষ্ট বিষয়ের অন্য গবেষকদের মাধ্যমে পর্যালোচনা) হয়নি।

ওই খসড়ায় বলা হয়, যেসব দেশে নাগরিকদের বিসিজি টিকা দেওয়া হয়ে থাকে সেগুলোতে কোভিড-১৯ আক্রান্তের সংখ্যা ও মৃত্যু তুলনামূলকভাবে কম।

 বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, এ ধরনের সমীক্ষায় অনেক ধরনের দুর্বলতা থেকে যেতে পারে। একেক দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের চিত্র একেক রকম। কোভিড-১৯ পরীক্ষার হারেও অনেক পার্থক্য। তাছাড়া জনঘনত্ব ও আবহাওয়া অনুযায়ী একেক দেশে একেক রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি থাকতে পারে। 

ওই সমীক্ষায় যে ধারণা পাওয়া গেছে বাস্তব ক্ষেত্রে তা সঠিক কি না জানতে দুটো ‘ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল’ চলছে জানিয়ে ডব্লিউএইচও বলেছে, সেই পরীক্ষায় কার্যকারিতা প্রমাণিত হওয়ার আগে বলা যাবে না যে বিসিজি টিকা নভেল করোনাভাইরাসেও সুরক্ষা দেয়।