ভেন্ডিং মেশিনে স্যানিটারি ন্যাপকিন মিলছে ঢাবির ১০ স্পটে

পিরিয়ডের সময় সহজে স্যানিটারি ন্যাপকিন সংগ্রহে ছাত্রীদের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০টি জায়গায় চালু হল ভেন্ডিং মেশিন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 Dec 2019, 03:55 PM
Updated : 4 Dec 2019, 03:55 PM

বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি প্রাঙ্গণে ডাকসু ও এসিআই ফ্রিডমের উদ্যোগে ভেন্ডিং মেশিন উদ্বোধন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে বলা হয়, নারী স্বাস্থ্য নিয়ে সমাজে প্রচলিত নানা ভুল ধারণা ভেঙে দেওয়ার লক্ষ্যে ক্যাম্পাসে স্যানিটারি ন্যাপকিন সুবিধা নিয়ে ভেন্ডিং মেশিন বসানো হয়েছে।

‘ফ্রিডম হাইজিন কর্নার’ নামে এই ভেন্ডিং মেশিনের স্পট থাকবে মেয়েদের পাঁচটি আবাসিক হল- বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হল, বাংলাদেশ কুয়েত-মৈত্রী হল, রোকেয়া হল, শামসুন্নাহার হল ও কবি সুফিয়া কামাল হলে।

ছবি: মাহমুদ জামান অভি

এছাড়াও টিএসসি, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ ভবন, কলাভবনের কমনরুম, সায়েন্স লাইব্রেরি এবং চারুকলা অনুষদেও বসানো হয়েছে ভেন্ডিং মেশিন।

ক্যাম্পাসের ১০টি স্পটে বসানো এসব মেশিন থেকে যে কোনো শিক্ষার্থী ১০ টাকায় স্যানিটারি ন্যাপকিন সংগ্রহ করতে পারবেন, যার বাজার মূল্য ১৪ টাকা।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, “উদ্যোগটি একটি অসাধারণ ও চমৎকার উদ্যোগ। এর মধ্য দিয়ে নারীর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটা বিরাট অগ্রগতি সাধিত হবে।

“দেশে নারী স্বাস্থ্যের বিষয়টি, বিশেষ করে টয়লেট ব্যবহারের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয় খুব কম। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এ ব্যাপারে পথ দেখিয়েছে, যেমনটা পথ দেখিয়েছে আমাদের বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামের সুতিকাগার হিসেবে।”

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) নাসরীন আহমেদ বলেন, “আজকের এই উদ্যোগটি নিয়ে আমি শুধু খুশিই নই, আমি গর্বিত।

“ঋতুস্রাব মেয়েদের জীবনে একটা প্রকৃতিপ্রদত্ত বিষয়, যেটা নিয়ে অনেক রাখঢাক রয়েছে। এই জায়গাটি থেকে বেরিয়ে এসে আমরা এটা নিয়ে এখন কথা বলতে পারছি।”

ছবি: মাহমুদ জামান অভি

অভিনেত্রী আরিফা পারভীন মৌসুমী বলেন, “কয়েক বছর আগেও যেখানে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে পারতোনা, ছেলেদের ক্ষেত্রেও এই ব্যাপারে ধারণা তেমন ছিল না, সেখান থেকে বেরিয়ে এসে এখন নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলে সচেতন হচ্ছে।

“ছেলেরা মেয়েদেরকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সাহায্য করছে; ব্যাপারটি আসলেই অনেক ইতিবাচক।”

ব্যবসায় অনুষদের ডিন ও ডাকসুর কোষাধ্যক্ষ শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম বলেন, “দেশের পঞ্চাশ শতাংশই নারী। এই অর্ধেক জনগোষ্ঠীর যদি শরীর কিংবা মন ভালো না থাকে, তাহলে জাতি হিসেবে আমরা কখনও সামনে আগাতে পারবো না।

“নারীরা যখন মাঠে কাজ করতে আসে, তখন ওই দেশের সর্বোচ্চ বৈদেশিক মুদ্রা সেখান থেকেই অর্জিত হতে পারে। তাই তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা হবে আমাদের প্রতিজ্ঞা।”

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন এসিআই কনজ্যুমার ব্র্যান্ডসের বিজনেস ডিরেক্টর কামরুল হাসান, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যসহ ডাকসুর হল ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যরা।