ইলিয়াস কাঞ্চনের অভিযোগ জায়েদ খানের অস্বীকার

চিত্রনায়ক জায়েদ খানের বিরুদ্ধে হাই কোর্টের রায়ের ‘ভুয়া সার্টিফায়েড কপি’ দেখিয়ে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদে শপথ নেওয়ার যে অভিযোগ তুলেছেন সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন, তা অস্বীকার করলেন এ চিত্রনায়ক।

গ্লিটজ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 March 2022, 11:00 AM
Updated : 8 March 2022, 11:00 AM

গত শুক্রবার জায়েদ খানকে শপথবাক্য পাঠ করানোর দুইদিন পর সোমবার সংবাদ সম্মেলন ডেকে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, শপথ নেওয়ার আগে ‘ভুয়া সার্টিফায়েড কপি’ দেখিয়েছেন তিনি; ফলে তার শপথের কোনো গ্রহণযোগ্যতা থাকছে না।

পরে ইলিয়াস কাঞ্চনের অভিযোগ অস্বীকার করে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছেন জায়েদ খান।

এ চিত্রনায়ক সাংবাদিকদের বলেন, “কোনো ভুয়া কাগজ না, মিথ্যা কাগজও না; ল’ইয়ার সার্টিফিকেট দিয়েছি। ল’ইয়ার সার্টিফিকেটই অ্যানাফ। আমি জিতেছি, হাই কোর্ট আমাকে পূর্ণাঙ্গ রায় দিয়েছে। সারা পৃথিবী দেখেছে।”

“আমি যদি কোর্টের সিল, সাইন নকল করে কিংবা অন্য একটা মামলার কাগজ লাগিয়ে দিলে জমা দিলে সেটাকে ভুয়া কাগজ বলা হত। আমি তো আমার মামলা সংক্রান্ত কাগজপত্রই দিয়েছি। আমি কোনো জালিয়াতি কিংবা মিথ্যা কাগজ দিইনি।”

ইলিয়াস কাঞ্চন বলেছেন, সাধারণ সম্পাদক হিসেবে জায়েদ খানের গ্রহণযোগ্যতা না থাকায় তিনি শিল্পী সমিতির যে বৈঠকে নিয়েছেন সেটিও অকার্যকর ঘোষণা করা হয়েছে।

তবে জায়েদ খান বললেন, “আমার মিটিংয়ে অংশ নেওয়া অবৈধ না। হাই কোর্টের রায় পাওয়ায়র পর আইনগতভাবে আমি বসেছি।”

শিল্পী সমিতিকে ‘ধোঁকা দেওয়ায়’ জায়েদ খানের বিরুদ্ধে শিগগিরই জরুরি বৈঠক ডেকে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারিও করেছেন ইলিয়াস কাঞ্চন।

চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে ভোটগ্রহণ হয় গত ২৮ জানুয়ারি, পরদিন ঘোষিত ফলে সভাপতি পদে ইলিয়াস কাঞ্চনকে এবং সাধারণ সম্পাদক পদে জায়েদকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।

ঘোষিত ফলে দেখা যায়, জায়েদ খান হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর ১৩ ভোটে হারিয়েছেন ইলিয়াস কাঞ্চন প্যানেলের নিপুণকে।

নির্বাচনের সময়ই টাকা দিয়ে ভোট কেনার অভিযোগ করেছিলেন নিপুণ। তাতে সাড়া না পেয়ে তিনি আপিল করেন।

তার আপিলে ভোট পুনর্গণনা হলেও তাতে ফল একই থাকলে নিপুণ সংবাদ সম্মেলন করে সাধারণ সম্পাদক পদে পুনঃভোটের দাবি তোলেন। সেখানে তিনি অর্থ দিয়ে ভোট কেনার অভিযোগ তুলে জায়েদ খানের বিরুদ্ধে আদালতে যাওয়ার হুমকিও দেন।

পরে নির্বাচনী আপিল বোর্ডে জায়েদ খান ও কার্যকরী পরিষদের সদস্য চুন্নুর পদ বাতিলের আবেদন করেন তিনি।

জায়েদের বিরুদ্ধে টাকা দিয়ে ভোট কেনার ‘প্রমাণ পাওয়ার’ কথা জানিয়ে আপিল বোর্ড তার প্রার্থিতা বাতিলের ঘোষণা করে। শপথ নিয়ে সাধারণ সম্পাদকের চেয়ারে বসেন নিপুণ।

কিন্তু জায়েদ খানের আবেদনে নির্বাচনী আপিল বোর্ডের সিদ্ধান্ত স্থগিত করে দেয় হাই কোর্ট। জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিল করে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির আপিল বোর্ডের দেওয়া সিদ্ধান্ত কেন ‘বেআইনি’ ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করে আদালত।

পরে হাই কোর্টের ওই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করার জন্য স্থগিতাদেশ চেয়ে আবেদন করেন চিত্রনায়িকা নিপুণ।আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি তখন ওই পদে ‘স্থিতাবস্থা’ জারির আদেশ দেন। পরে আপিল বিভাগ তা বজায় রাখার নির্দেশ দেয়।

সেই সঙ্গে জায়েদ খানের রিট আবেদনে যে রুল জারি হয়েছিল, হাই কোর্টকে তা নিষ্পত্তি করতে বলে সর্বোচ্চ আদালত। সেই রুলের ওপর শুনানি শেষে হাই কোর্ট বুধবার নির্বাচনী আপিল বোর্ডের সিদ্ধান্তকে ‘অবৈধ’ ঘোষণা করে রায় দেয়, যা রোববার স্থগিত হয়ে গেল।