নিপুণের আবেদন নিয়ে শুনানি সোমবার

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্বে বসা নিয়ে হাই কোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে নিপুণ আক্তারের আবেদনের শুনানি সোমবার নির্ধারণ করেছে আপিল বিভাগ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Feb 2022, 11:32 AM
Updated : 13 Feb 2022, 11:32 AM

নিপুণ আক্তারের আইনজীবীর সময় আবেদনের প্রেক্ষিতে শুনানি পিছিয়ে রোববার এ আদেশ দেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ।

আদালতে নিপুণের আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী রোকনউদ্দিন মাহমুদ ও মোস্তাফিজুর রহমান খান। এ অভিনেত্রীর প্রতিদ্বন্দ্বী জায়েদ খানের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আহসানুল করিম।

শুনানির শুরুতে রোকনউদ্দিন বলেন, “আমরা হাই কোর্টের আদেশের অনুলিপি পেয়েছি, হাতে আছে। এটা (মামলাটি) কালকে আসুক নিয়মিত লিভ টু আপিল (আপিল করার অনুমতি চেয়ে আবেদন) করে দেই। এক সাথেই শুনানি হোক।“

তখন প্রধান বিচারপতি বলেন, আগামীকাল (সোমবার) শুনানি, এক নম্বরে থাকবে।

চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্বে বসা নিয়ে হাই কোর্টের আদেশ রোববার পর্যন্ত স্থগিত করে ওই পদে ‘স্থিতাবস্থা’ দেয় আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত।

নিপুণ আক্তারের আবেদনের শুনানির পর গত ৯ ফেব্রুয়ারি এ আদেশ দেন চেম্বার বিচারক ওবায়দুল হাসান।

ওইদিন বিচারক আদেশে বলেন, “আজকে হল ৯ তারিখ, এই কদিন (১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত) সাধারণ সম্পাদক পদে কেউ ঢুকবে না, কিচ্ছু হবে না।“

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে অভিনেতা জায়েদ খানের প্রার্থীতা বাতিল ও নিপুণ আক্তারকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করে নির্বাচনী আপিল বোর্ডের সিদ্ধান্ত গত ৭ ফেব্রুয়ারি স্থগিত করেন হাই কোর্ট।

একই সঙ্গে সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে জায়েদ খানের দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে কোনো রকম প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না করতেও নির্দেশ দেয় আদালত।

সে আদেশ স্থগিত চেয়ে পরের দিন ৮ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন করেছিলেন নিপুণ।

গত ২৮ জানুয়ারি ভোটগ্রহণের পরদিন ভোরে ঘোষিত ফলে সভাপতি পদে ইলিয়াস কাঞ্চনকে এবং সাধারণ সম্পাদক পদে জায়েদকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।

ঘোষিত ফলে দেখা যায়, নিপুণ আক্তারের চেয়ে ১৩ ভোট বেশি পেয়ে সাধারণ সম্পাদক পদে জয় পান জায়েদ খান।

নির্বাচনের সময়ই টাকা দিয়ে ভোট কেনার অভিযোগ করেছিলেন নিপুণ। তাতে সাড়া না পেয়ে তিনি নির্বাচনী বোর্ডে আপিল করেন। তার আপিলে ভোটের পুনর্গণনা হওয়ার পরও ফল একই থাকে।

এরপর নিপুণ সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচনে জায়েদ খানের বিরুদ্ধে ভোট কেনার অভিযোগ তোলেন। পরে নির্বাচনী আপিল বোর্ডে জায়েদ খান ও কার্যকরী পরিষদের সদস্য চুন্নুর পদ বাতিলের আবেদন করেন তিনি।

তার আবেদনে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে করণীয় জানতে আবেদন করেন আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান সোহানুর রহমান সোহান। সে আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ২ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক চিঠিতে আপিল বোর্ডকেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হলে গত ৫ ফেব্রুয়ারি দুই পক্ষকে নিয়ে বসার উদ্যোগ নেন সোহান।

কিন্তু ২৯ জানুয়ারির পর নির্বাচনী আপিল বোর্ড বিলুপ্ত হয়েছে এবং এ বোর্ডের সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার নেই দাবি করে ওই বৈঠকে যাননি জায়েদ খান। সেদিনই আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান জায়েদ খানের প্রার্থীতা বাতিল করে সাধারণ সম্পাদক পদে চিত্রনায়িকা নিপুণকে জয়ী ঘোষণা করেন।

পরে জায়েদ খান উচ্চ আদালতে গেলে গত ২ ফেব্রুয়ারি সমাজসেবা অধিদপ্তরের চিঠির প্রেক্ষিতে গত ৫ ফেব্রিুয়ারি নির্বাচনী আপিল বোর্ডের দেওয়া এ সিদ্ধান্ত কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ও অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, রুলে জানতে চায় হাই কোর্ট।

এক সপ্তাহের মধ্যে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব, সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, পরিচালক, উপপরিচালক, সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সমিতির সোহানুর রহমান সোহান, মোহাম্মদ হোসেন, নিপুণ আক্তার ও মোহাম্মদ হোসেন জেমিকে এক সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার রুল শুনানির তারিখ রয়েছে উচ্চ আদালতে।