ভারতের আইপিএস কর্মকর্তা মনোজ কুমার শর্মার জীবন সংগ্রামের ঘটনা নিয়ে বানানো ‘টুয়েলভথ ফেল’ নামের যে সিনেমা ঝড় তুলেছে বড় পর্দা থেকে ওটিটি এবং সোশাল মিডিয়ার পাতায়, সেই সিনেমা বাজিমাত করেছে ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ডসের আসরেও।
এনডিটিভি লিখেছে, সেরা সিনেমা, সেরা নির্মাতা, সমালোচক বিভাগে সেরা অভিনেতা, সেরা চিত্রনাট্য এবং সেরা সম্পাদনাসহ মোট পাঁচ শাখায় পুরস্কার পেয়েছে ‘টুয়েলভথ ফেল’।
সেরা সিনেমা নির্বাচিত হতে ‘টুয়েলভথ ফেল’কে লড়তে হয়েছে শাহরুখের ‘জওয়ান’, ‘পাঠান’ এর মত দারুণ জনপ্রিয় এবং ব্লকবাস্টার ফিল্মের সঙ্গে।
আর সেরা পরিচালকের পুরস্কার জিতে নিতে ‘টুয়েলভথ ফেল’র নির্মাতা বিধু বিনোদ চোপড়াকে প্রতিযোগিতায় নামতে হয় সিদ্ধার্থ পাঠান, সন্দীপ রেড্ডি ভাঙা, করণ জোহর, অ্যাটলি কুমারের মত বাঘা বাঘা সিনেমা কারিগরদের সঙ্গে।
রোববার রাতে ফিল্মফেয়ারের ৬৯তম আসর বসেছিল গুজরাটে। অনুষ্ঠানে পুরস্কার নিয়ে নেচে-গেয়ে আলো ছড়িয়েছেন তারকা দম্পতি রাণবীর কাপুর ও আলিয়া ভাট। সেরা অভিনেতা-অভিনেত্রীর পুরস্কার গেছে এবার এই দম্পতির ঘরে।
‘রকি আউর রনি কি প্রেম কাহানি’ সিনেমায় অভিনয়ের জন্য সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পেয়েছেন নায়িকা আলিয়া ভাট; আর রাণবীর কাপুর সেরা অভিনেতার পুরস্কার পেয়েছেন ‘অ্যানিমাল’ সিনেমার জন্য।
এছাড়া ‘মিসেস চ্যাটার্জি ভার্সেস নরওয়ে’ এবং ‘থ্রি অব আস’ সিনেমার জন্য যৌথভাবে সমালোচনা বিভাগে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পেয়েছেন রানি মুখার্জি ও শেফালি শাহ।
নির্মাতা রাজকুমার হিরানির ‘ডানকি’ সিনেমার নামও উচ্চারিত হয়েছে আসরে। বক্স অফিসে তেমন সুবিধা করতে না পারা এই সিনেমার অভিনেতা ভিকি কৌশল সমালোচনা বিভাগে সেরা অভিনেতার পুরস্কার পেয়েছেন।
তবে শাহরুখ খানের যে দুই সিনেমা ‘পাঠান’ ও ‘জওয়ান’ বলিউডের দুর্দিন ঘুচিয়েছিল, সেই দুই সিনেমা নানা শাখায় মনোনয়ন পেলেও ‘পাঠান’ পুরস্কার পেয়েছে কেবল সেরা গায়িকা শাখায়, আর ‘জওয়ান’ এর নাম এসেছে সেরা অ্যাকশন ও সেরা ভিজ্যুয়াল এফেক্টস শাখায়।
ফিল্মফেয়ারের এবারের আসরে আজীবন সম্মাননা দেওয়া হয়েছে বলিউডের বর্ষীয়ান পরিচালক ডেভিড ধাওয়ানকে।
এবারের ফিল্মফেয়ার সঞ্চালনা করেন করণ জোহর, অভিনেতা আয়ুষ্মান খুরানা ও মনীশ পাল। রাণবীর কাপুর, বরুণ ধাওয়ান, কারিনা কাপুর, জাহ্নবী কাপুর, সারা আলি খান ও কার্তিক আরিয়ানদের পারফরম্যান্সে জমজমাট হয়ে ওঠে এবারের আসর।
ফিল্মফেয়ার পেলেন যারা
সেরা চলচ্চিত্র: টুয়েলভথ ফেল
সেরা চলচ্চিত্র (সমালোচক পুরস্কার): জোরাম
সেরা অভিনেতা: রাণবীর কাপুর (অ্যানিমাল)।
সেরা অভিনেত্রী: আলিয়া ভাট (রকি আউর রানি কি প্রেম কাহানি)।
সেরা অভিনেতা (সমালোচক পুরস্কার): বিক্রম ম্যাসি (টুয়েলভথ ফেল)।
সেরা অভিনেত্রী (সমালোচক পুরস্কার): রানি মুর্খাজি (মিসেস চ্যাটার্জি ভার্সেস নরওয়ে), শেফালি শাহ (থ্রি অব আস)।
সেরা পরিচালক: বিধু বিনোদ চোপড়া (টুয়েলভথ ফেল)।
সেরা পার্শ্ব অভিনেতা: ভিকি কৌশল (ডানকি)।
সেরা পার্শ্ব অভিনেত্রী: শাবানা আজমি (রকি আউর রানি কি প্রেম কাহানি)
সেরা মিউজিক অ্যালবাম: অ্যানিমাল
সেরা গীতিকার: অমিতাভ ভট্টাচার্য (জারা হাটকে জারা বাঁচকে)
সেরা গায়ক: ভূপিন্দর বাব্বল (অর্জন ভ্যালি)
সেরা গায়িকা: শিল্পা রাও (পাঠান)
সেরা চিত্রনাট্য: টুয়েলভথ ফেল
সেরা সংলাপ: ইশিতা মৈত্র (রকি অউর রানি কি প্রেম কাহানি)
সেরা নবাগত (পুরুষ): আদিত্য রাওয়াল (ফারাজ)
সেরা নবাগত (নারী): আলিজেহ অগ্নিহোত্রী (ফররে)
সেরা গল্প: অমিত রাই (ওএমজি ২)
সেরা ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক: হর্ষবর্ধন রামেশ্বর ( অ্যানিমাল)
সেরা সিনেমাটোগ্রাফি: অবিনাশ অরুণ (থ্রি অব আস)
সেরা প্রোডাকশন ডিজাইন: সুব্রত চক্রবর্তী এবং অমিত রাই (স্যাম বাহাদুর)
সেরা সম্পাদনা: বিধু বিনোদ চোপড়া এবং কোহিলি (টুয়েলভথ ফেইল)
সেরা কস্টিউম ডিজাইন: শচীন লোভেলেকার, দিব্যা গম্ভীর ও নিধি গম্ভীর ( স্যাম বাহাদুর)।
সেরা সাউন্ড ডিজাইন: কুনাল শর্মা (স্যাম বাহাদুর)
সেরা কোরিওগ্রাফি: গনেশ আচার্য (রকি আউর রানি কি প্রেম কাহানি, ঝুমকা গানের জন্য)
সেরা অ্যাকশন: সুপ্রিয়, এ এন আরসু, সুনীল রডরিগেজ (জওয়ান)
সেরা ভিজ্যুয়াল এফেক্টস: রেড চিলিস এন্টারটেইনমেন্ট (জওয়ান)