দীলিপ কুমার-মধুবালার প্রেমকাহিনী সিনেমায় আসবে?

বোনের প্রেমকাহিনী নিয়ে মাতামাতি চান না মধুর ভূষণ।

গ্লিটজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Sept 2022, 05:09 PM
Updated : 28 Sept 2022, 05:09 PM

দীলিপ কুমার কিংবা মধুবালা দুজনেই কেউই বেঁচে নেই, কিন্তু তাদের প্রেমকাহিনী আজও ফেরে মানুষের মুখে মুখে। মধুবালাকে নিয়ে সিনেমা হলে স্বাভাবিকভাবেই আসবে বিয়োগান্তক সেই প্রেমগাথা। তা বুঝতে পেরেই হয়ত বোনের বায়োপিকে বাদ সাধলেন মধুর ভূষণ।

দীলিপ কুমার-মধুবালার প্রেমকাহিনী নিয়ে মাতামাতির কিছুই নেই বলে মনে করেন মধুবালার বোন মধুর ভূষণ। আর সেই কারণ দেখিয়ে তিনি চলচ্চিত্র নির্মাতা টুটু শর্মাকে আইনি নোটিস পাঠিয়েছেন বলে টাইমস অব ইন্ডিয়া জানাল।

বলিউডের এক সময়ের অভিনেত্রী পদ্মিনী কোলাপুরের স্বামী টুটু যখন মধুবালার বায়োপিকে হাত দিয়েছেন, তখনই তাতে বাধা হয়ে দাঁড়ালেন প্রয়াত এই বলিউড তারকার বোন।

মধুর ভূষণ বোনের বায়োপিক তৈরির খবরে স্পষ্টতই বিরক্ত হয়েছেন। আইনি নোটিসে তিনি বলেছেন, দীলিপ কুমার-মধুবালা প্রেমে গল্পের চিত্রায়নে টুটু বাস্তব ঘটনা বিকৃত করতে পারেন বলে শঙ্কিত তিনি।

১৯৪৪ সালে জোয়ার ভাটা সিনেমা করতে গিয়ে কাছাকাছি আসেন বলিউডের দুই মহাতারকা দীলিপ কুমার ও মধুবালা। তাদের প্রেম পরে বিয়ের কাছাকাছি গিয়েও ট্রাজেডি হয়েই থেকে যায়।

টাইমস অব ইন্ডিয়াকে এর আগে এক সাক্ষাতকারে মধুর ভূষণ বোনের সঙ্গে দিলীপ কুমারের বিচ্ছেদের কারণ জানিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, “মধুবালা ও দিলীপ কুমার ৯ বছর একসাথে ছিলেন। তাদের সম্পর্কে চিড় ধরার কারণ ছিল ‘নয়া দৌড়’ সিনেমাটি। পরিস্থিতি একসময় বাজে দিকে মোড় নিলে তাদের বিচ্ছেদ হয়।

“হয়ত আল্লাহ চাননি বলে তারা একসাথে থাকতে পারেননি। দিলীপ সাহেব পরে বাড়িতে এলে মধুবালা তাকে আমাদের বাবার কাছে ক্ষমা চাইতে বলেছিলেন। দিলীপ সাহেব রেগে উনাকে (বাবা) ‘স্বৈরাচারী এবং কঠিন পাত্র’ বলেছিলেন।”

১৯৪২ সালে ‘বসন্ত’ সিনেমার মাধ্যমে ভারতীয় সিনেমায় অভিষেক ঘটে মধুবালার। এরপর ‘মহল’, ‘অমর’, ‘মিস্টার অ্যান্ড মিসেস ফিফটি ফাইভ’, ‘চলতি কা নাম গাড়ি’, ‘মুঘল-ই-আজম’, ‘বরসাত কি এক রাত’সহ অসংখ্য দর্শকপ্রিয় সিনেমা এসেছে তার কাছ থেকে।

Also Read: মধুবালা অধ্যায় চুকিয়ে সায়রা বানুর ‘কোহিনূর’ হয়েই ছিলেন দিলীপ কুমার

১৯৬০ সালের জনপ্রিয় সিনেমা ‘মুঘল-ই-আজম’ এর আনারকলি চরিত্রটির জন্য বিশেষভাবে স্মরণ করা হয়ে থাকে মধুবালাকে। এই সিনেমায় দীলিপ কুমার ছিলেন মুঘল শাহজাদা সেলিমের (সম্রাট জাহাগীঁর) চরিত্রে। এই সিনেমার মতো তাদের জীবনেও মিলন হয়নি।

বলিউডের ‘ট্রাজেডি কিং’ দীলিপ কুমার পরে চিত্রনায়িকা সায়রা বানুকে বিয়ে করলেও তার সঙ্গে আজীবনই জড়িয়ে ছিল মধুবালার নাম। আর ভুবনমোহিনী হাসির অধিকারী মধুবালা বিয়ে করেন জনপ্রিয় গায়ক-অভিনেতা কিশোর কুমারকে, তবে তাদের সংসার সুখের হয়নি।

মধুবালা নানা রোগে ভুগে ১৯৬৯ সালে মাত্র ৩৬ বছর বয়সে মারা যান। আর দীলিপ কুমার ২০২১ সালে যখন মারা যান, তখন তার বয়স ৯৮ বছর।

টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আইনি নোটিসে পাঠানোর মধ্য দিয়ে আসলে মধুর ভূষণের অস্বস্তির মূল কারণটি বেরিয়ে এসেছে। তিনি চান না তার তারকা অভিনেত্রী বোনের প্রেমের গল্পটি রুপালি পর্দায় উঠে আসুক।

মধুর ভূষণ বাধা হয়ে দাঁড়ালেও বায়োপিকের কাজ অনেকটাই এগিয়ে নিয়েছেন টুটু।

বিকৃতির শঙ্কার কোনো কারণ নেই দাবি করে তিনি বলেন, সুশীলা কুমারীর লেখা ‘মধুবালা : দর্দ কা সফর’ জীবনীগ্রন্থের উপর ভিত্তি করে সিনেমার গল্প সাজিয়েছেন তিনি। আর বহু বছর ধরে এই বইয়ের সর্বজনীন স্বীকৃতি রয়েছে।

টুটু শর্মা বলেন, “মধুবালাজি একজন পাবলিক ফিগার এবং তার গল্পটি সবার দেখার জন্য তৈরি করা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমি বিশ্বাস করি, চাইলেই কেউ একজন কোনো পাবলিক ফিগারের জীবনের উপর কপিরাইট দাবি করতে পারে না, এমনকি তার নিজের পরিবারের লোকও না। যদি বিষয়টা এমনই হত, তবে আমরা দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের উপর এত বায়োপিক দেখতে পেতাম না।”