মুদ্রানীতি ঘোষণা ১৫ জানুয়ারি

আইএমএফের পরামর্শ অনুযায়ী আগের মত ৬ মাস অন্তর মুদ্রানীতি ঘোষণা করতে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Jan 2023, 12:48 PM
Updated : 12 Jan 2023, 12:48 PM

চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের মুদ্রানীতি (জানুয়ারি-জুন) আগামী ১৫ জানুয়ারি ঘোষণা করবে বাংলাদেশ ব্যাংক।

সেদিন দুপুর আড়াইটায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার মুদ্রানীতি ঘোষণা করবেন বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

ব্যাংকিং খাতে তারল্য সংকট, বিদেশি মুদ্রার সরবরাহে টান, টাকার দরপতন, মূল্যস্ফীতি আর চলতি হিসাবে ঘাটতি বৃদ্ধির মত পরিস্থিতিতে নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ইতোমধ্যে সাবেক গভর্নর, অর্থনীতিবিদ ও ব্যাংকারদের মতামত নিয়েছে এ সংক্রান্ত কমিটি।

সরকারের জাতীয় বাজেট বাস্তবায়নে সহযোগিতা করা ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখার উদ্যোগ জানিয়ে বছরের নির্দিষ্ট সময়ে বাজারে কী পরিমাণ মুদ্রা সরবরাহ করা হবে- তার একটি আগাম ধারণা দেওয়া হয় মুদ্রানীতিতে।

এবারের মুদ্রানীতি হবে গত জুলাইয়ে গভর্নরের দায়িত্ব গ্রহণ করা আব্দুর রউফ তালুকদারের প্রথম মুদ্রানীতি।

এর আগে গতবছর ৩০ জুন মূল্যস্ফীতির চাপ সামাল দিতে অর্থের জোগান কমানোর লক্ষ্যে রেপো (পুনঃক্রয় চুক্তি) সুদহার বাড়িয়ে ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ‘সংকোচনমুখী’ মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছিলেন তৎকালীন গভর্নর ফজলে কবির।

তখন বলা হয়েছিল এ মুদ্রানীতি হবে এক বছর মেয়াদের, যা জুন পর্যন্ত বহাল থাকবে। তবে বাজার সামাল দিতে সেপ্টেম্বরে রেপো হার আরও ২৫ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়। এখন ছয় মাসের মাথায় আবারও মুদ্রানীতি পর্যালোচনায় যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এক সময়ে ছয় মাসের জন্যই মুদ্রানীতি প্রণয়ন করা হত। ২০১৯-২০২০ অর্থবছর থেকে এক বছরের জন্য মুদ্রানীতি ঘোষণার প্রচলন শুরু করেন সাবেক গভর্নর ফজলে কবির।

আগের মত বছরে দুইবার মুদ্রানীতি ঘোষণা করতে পরামর্শ এসেছিল মাস দুয়েক আগে ঋণ নিয়ে ঢাকায় আলোচনা করতে আসা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রতিনিধি দলের কাছ থেকেও। তখন বাংলাদেশ ব্যাংকও তাতে সম্মতি দিয়ে ছয় মাসের মুদ্রানীতি করার কথা বলেছিল। এর ধারাবাহিকতায় আগামী ১৫ জানুয়ারি ছয় মাসের জন্য নতুন মুদ্রানীতি করার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিল বাংলাদেশ ব্যাংক।

২০২২-২৩ অর্থবছরের মুদ্রানীতি ছিল ‘সতর্কতামূলক এবং কিছুটা সংকোচনমুখী’। সেখানে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ১ লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকা ঋণ যোগানোর ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল। সরকারি ঋণের প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছিল ৩৯ দশমিক ৪ শতাংশ, যা গতবার ৩৬ দশমিক ৬ শতাংশ ছিল।

আর বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ১৪ দশমিক ১ শতাংশ, যা গতবার ছিল ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ।

সব মিলিয়ে মোট অভ্যন্তরীণ ঋণের প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ১৮ দশমিক ২ শতাংশ, যা ২০২১-২২ অর্থবছরে ১৭ দশমিক ৮০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছিল।

মুদ্রানীতিতে ব্যাপক মুদ্রা (এম২) প্রবৃদ্ধি কিছুটা কমিয়ে ধরা হয় ১২ দশমিক ১ শতাংশ, গতবার এ সীমা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৫ শতাংশ।

জাতীয় বাজেটে ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) ৭ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি এবং মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৬ শতাংশে ধরে রাখার পরিকল্পনার নির্ধারণ করে সরকার।

কিন্তু সর্বশেষ গত ডিসেম্বরে পয়েন্ট টু পয়েন্ট হিসাবে মূল্যস্ফীতি ৮ দশমিক ৭১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)।

Also Read: মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ: ৩ মাসের মধ্যে ফের বাড়ল রেপো সুদহার