‘চাঁদার জন্য’ চট্টগ্রামে অটোচালক খুন, গ্রেপ্তার ৪

জিজ্ঞাসাবাদে তাদের বিভিন্ন মেয়াদে পুলিশ হেফাজতে পাঠিয়েছে আদালত।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Jan 2023, 03:06 PM
Updated : 28 Jan 2023, 03:06 PM

চাঁদা দিতে না চাওয়ায় সীতাকুণ্ডে অটোরিকশার এক চালককে হত্যা করা হয়েছিল বলে সন্দেহভাজন চারজনকে গ্রেপ্তারের পর জানিয়েছে পিবিআই।

তিন দিন আগে একরাম হোসেন (২০) নামের ওই চালক হত্যাকাণ্ডের জড়িত থাকার অভিযোগে তাদের গ্রেপ্তার করা হলেও শনিবার এ তথ্য সংবাদ মাধ্যমকে জানায় পুলিশের এ ইউনিট।

গ্রেপ্তার চারজন হলেন- জাহেদ হোসেন (২০), নূর আহাম্মদ (৪০), মোস্তাফিজুর রহমান ওরফে সাকিব (২০) ও ইসমাইল হোসেন ওরফে রানা (২৪)। তারা সবাই সীতাকুণ্ড থানার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা।

এদের মধ্যে নূর আহাম্মদ সীতাকুণ্ড দক্ষিণ বাইপাস সিএনজি অটোরিকশা মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন বলে জানান তদন্ত কর্মকর্মা পিবিআই এর এসআই মো. শাহাদাত হোসেন।

বাকি তিনজন অটোরিকশা চালক। এরা যে রুটে অটোরিকশা চালাত তা নিয়ন্ত্রণ করত নূর আহাম্মদ।

বুধবার সীতাকুণ্ডের বাড়বকুণ্ড থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

২০২২ সালের ৪ সেপ্টেম্বর রাতে সীতাকুণ্ডে খুন হন সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক একরাম হোসেন (২০)।

সেদিন রাত সাড়ে আটটার দিকে সীতাকুণ্ড মডেল থানার অধীন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে ইপসা অফিসের সামনে একরাম হোসেনকে রক্তাক্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। পাশে অটোরিকশাটি ছিল।

গুরুতর আহত একরামকে শুরুতে সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান।

এ ঘটনায় একরামের ভাই নুরুল হুদা বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে পরদিন হত্যা মামলা করেন।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের তথ্যের ভিত্তিতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর চট্টগ্রাম জেলার এসআই মো. শাহাদাত হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ঘটনার দিন বিকালে একরাম অটোরিকশাটি মালিকের কাছ থেকে দৈনিক ৫০০ টাকা ভাড়ার চুক্তিতে নিয়ে বের হয়।

“রেজিস্ট্রেশন ছাড়া এসব অটোরিকশা চলাচলে চাঁদা আদায় করত নূর আহাম্মদ। একরামের কাছে মাসিক ৫ হাজার টাকা চাঁদা চাইলে সে তা দিতে অস্বীকৃতি জানায়।“

খুনের দিনের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে পিবিআই চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ঘটনার দিন সন্ধ্যায় আসামিরা একরামকে অনুসরণ করে। ঘটনাস্থলে নূর আহাম্মদের অটোরিকশা দিয়ে একরামের অটোরিকশাটির গতিরোধ করা হয়। 

“ওই সময় তারা একরামকে এলোপাথাড়ি মারধর ও ছুরিকাঘাত করে গুরুতর আহত অবস্থায় ফেলে যায়। এরপর আসামিদের মধ্যে নুর আহাম্মদ ও সাকিব দ্রুত পালিয়ে যায়। আরেক আসামি রানা রাস্তা পার হয়ে লোকাল বাসে করে চলে যায়।” 

হত্যাকাণ্ডে জড়িত জাহেদ হোসেন পালানোর আগেই ঘটনাস্থলে স্থানীয় লোকজন পৌঁছে গেলে নিজেকে রক্ষা করতে একরামের সিএনজি অটোরিকশাটি চালিয়ে একরামকে সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পৌঁছে দিয়েছিল বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা নাজমুল হাসান।

গ্রেপ্তার চারজনকে বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ খানের আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে নুর আহাম্মদ ও জাহেদকে চার দিন করে এবং সাকিব ও রানাকে তিন দিন করে রিমাণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

রিমাণ্ডে আসামিদের স্বীকারোক্তি ও দেখানো মতে সিএনজি অটোরিকশাটি এবং অটোরিক্সা হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি ঘটনাস্থলের পাশের পুকুর থেকে উদ্ধার করেছে পিবিআই।