চট্টগ্রামে ক্রোধের বশে ‘মারধরে কিশোরের মৃত্যু’, মা-মামা গ্রেপ্তার

পুলিশ বলছে, ওই কিশোরের মৃত্যুর ঘটনা ‘আত্মহত্যা’ হিসেবে চালিয়ে দিতে তার গলায় ওড়না বেঁধে লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 August 2022, 03:32 PM
Updated : 11 August 2022, 03:32 PM

টাকা চুরির অভিযোগ পেয়ে ক্রোধের বশে মায়ের ‘মারধরে’ কিশোরের মৃত্যুর পর ‘আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার’ অভিযোগ উঠেছে।

চট্টগ্রাম নগরীর আকবার শাহ থানার বিশ্ব কলোনী এলাকায় সোমবার রাতে ওই ঘটনার পর মঙ্গলবার মো. হাছান নামের ১৪ বছর বয়সী ওই কিশোরের মা কুলসুম বেগম (৩৮) এবং মামা মো. ফারুক ইসলামকে (২৪) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

এ ঘটনায় হাছানের বাবা বেলাল হোসেন তার স্ত্রী ও শ্যালককে আসামি করে মামলা করেছেন। গ্রেপ্তার কুলসুম মঙ্গলবার আদালতে জবানবন্দিও দিয়েছেন বলে আকবর শাহ থানার ওসি ওয়ালী উদ্দিন আকবর জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, পারিবারিক কলহের জেরে হাছানের বাবা-মা আলাদা থাকেন। হাছান তার মায়ের সঙ্গে বিশ্ব কলোনির আল হেরা মসজিদ গলির জে-ব্লকের একটি বাসায় থাকত। পাশের আই-ব্লকে তার মামা ফারুকের বাসা।

মামলায় বলা হয়েছে, হাছান আগে বাসের হেলপারের কাজ করত। বিভিন্ন সময়ে না বলে সে বাসার বিভিন্ন জনের পকেট থেকে টাকা নিত। সে কারণে তার মা তাকে হাটহাজারি এলাকায় তার নানার দোকানে দৈনিক ১৫০ টাকা মজুরিতে কাজে পাঠান।

বেলাল বলছেন, “গত রোববার হাছান তার আরেক মামা নুরুন্নবী সোহেলের মানিব্যাগ থেকে এক হাজার টাকা নেয়। বিষয়টি জানাজানি হলে সোমবার রাত ১১টার দিকে হাছানকে মারধর করেন কুলসুম। এক পর্যায়ে ধাক্কা দিলে হাছান লোহার খাটের ওপর পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাত পায়।”

কুলসুমের আরেক ভাই হৃদয় মঙ্গলবার সকালে বেলালের বাসায় গিয়ে হাছানের ‘আত্মহত্যা’ খবর দেন। পরে কুলসুমের বাসায় গিয়ে পুরে বিষয়টি জানতে পারেন বলে বেলালের ভাষ্য।

ওসি ওয়ালী উদ্দিন আকবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “টাকা চুরির সন্দেহে কুলসুম ছেলেকে মারধর করেন। মা-ছেলের ধাক্কাধাক্কির এক পর্যায়ে হাছান পড়ে গিয়ে লোহার খাটে লেগে মাথায় আঘাত পায়।

“হাছান নিস্তেজ হয়ে পড়লে কুলসুম তার ভাই ফারুককে বাসায় ডেকে আনেন।বিষয়টিকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিতে ভাই-বোন মিলে ঘরের দরজার ভেন্টিলেটরের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে হাছানকে ঝুলিয়ে রাখেন।”

রাতে হাছান ‘আত্মহত্যা করেছে’ বলে প্রচার করে ওড়না কেটে তাকে নিচে নামিয়ে স্থানীয় এক চিকিৎসককে ডাকা হয়। চিকিৎসক হাছানকে মৃত ঘোষণা করলে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেন তারা। পরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে।

ওসি বলেন, মাথায় আঘাতের চিহ্ন দেখে পুলিশের সন্দেহ হয়। তখন কুলসুমকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে এক পর্যায়ে তিনি ঘটনার বিস্তারিত বলেন। তখন কুলসুম ও তার ভাই ফারুককে পুলিশ গ্রেপ্তার করে।