পুরনো জাহাজ বিক্রি এবং পরিত্যক্ত কন্টেইনারে হীরা ও সোনার থাকার প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্নজনের কাছ থেকে ‘শত কোটি’ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে চট্টগ্রামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
সোমবার র্যাব-৭ এর চান্দগাঁও ক্যাম্পে সংবাদ সম্মেলন করে বাহিনীর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এমএ ইউসুফ জানান, নগরীর পাঁচলাইশ এলাকা থেকে রোববার রাতে মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী (৪২) নামে এ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তার বিরুদ্ধে ১১টি প্রতারণা মামলায় বেশ কয়েক বছরের সাজার পাশাপাশি আরও ১১টি মামলার পরোয়ানা আছে বলে জানান র্যাব-৭ অধিনায়ক।
গ্রেপ্তার মেজবাহর বাড়ি চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার কাটিরহাট এলাকায়। তার বাবা আবু তাহের চৌধুরী হাটহাজারী উপজেলার একটি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান।
র্যাব জানায়, এক সময় মেজবাহ পুরনো জাহাজের স্ক্র্যাপ বিক্রির ব্যবসা করতেন। এ কারণে ওই ব্যবসা নিয়ে তার অনেক ধারণা ছিল। সে ধারণার দিয়ে বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের প্রলোভনে ফেলে হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি টাকা।
২০০৮ সালে পুরনো জাহাজের স্ক্যাপের ব্যবসা শুরু করেছিলেন মেজবাহ। ২০১৫ সালের পর থেকে প্রতারণা শুরু করেন বলে র্যাবের ভাষ্য।
র্যাব কর্মকর্তা ইউসুফ বলেন, ২০১৫ সালে সীতাকুণ্ডের কুমিরা এলাকায় একটি শিপইয়ার্ডে আনা পুরনো জাহাজ দেখিয়ে মেজবাহ বিভিন্নজনের কাছ থেকে বেশ কয়েক কোটি টাকা সংগ্রহ করে। কিন্তু জাহাজ না কাটায় বিনিয়োগকারীরা তাকে টাকার জন্য চাপ প্রয়োগ করলে নতুন ধরনের ফন্দি আঁটেন।
“মেজবাহ আরেকটি জাহাজে কিছু পরিত্যক্ত কন্টেইনার দেখিয়ে বিনিয়োগকারীদের বলতেন, ওইসব কন্টেইনারে অন্তত ৫০০ কোটি টাকার স্বর্ণ ও পাঁচটি হীরা আছে। যেগুলো প্রতিটির মূল্য দুই হাজার কোটি টাকা করে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সেসব টাকা আটকে দিয়েছে। যেগুলো তিনি বিভিন্ন মন্ত্রী ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে ছাড়িয়ে নেবেন।”
মেজবাহর কথার ফাঁদে পড়ে অনেকে অর্থ বিনিয়োগ করেন বলে জানায় র্যাব।
র্যাব অধিনায়ক ইউসুফ বলেন, “মেজবাহ এত ধূর্ত প্রকৃতির লোক, তাকে ধরতে ছয় মাসের বেশি সময় লেগেছে। চেহারা পরিবর্তনের জন্য সে মাথায় হেয়ার ট্রিটমেন্ট করেছে।”